সোনাইমুড়ীতে নতুন গ্যাস কূপের সন্ধান অবশেষে সাতক্ষীরা প্রাণ প্রাণসায়ের খালের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ কার্যক্রম শুরু সাতক্ষীরা চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়ার মোটর সাইকেল বহরে বোমা হামলায় ৫ জন আহত হবিগঞ্জে বিশ্ব ধরিত্রী দিবস পালিত। নান্দাইলে ৫০০ গ্রাম গাজাসহ মাদক সম্রাট শফিকুল ইসলাম রাজিব গ্রেফতার  ময়মনসিংহের নান্দাইলে শফিকুল ইসলাম রা নান্দাইলে যুবককে কুপিয়ে হত্যা: আটক তিন বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান: সালমান এফ রহমান ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম : শেখ হাসিনা বিএনপির পর আওয়ামী লীগের সমাবেশও স্থগিত উচ্চশিক্ষা অর্জনে শিক্ষকের ভূমিকা তীব্র গরম আরও বাড়তে পারে দেশের বাজারে কোর আই৭ প্রসেসরে চলা নতুন ল্যাপটপ এই গরমে কতটুকু পানি খাওয়া জরুরি পাঁচ বছর লিভটুগেদারের পরও সাইফকে বিয়ে না করার পরামর্শ পেয়েছিলেন কারিনা নজরুল একাডেমী মধুপুর উপজেলা শাখার ঈদ পুনর্মিলনী ও বর্ষবরণ উদযাপন বিশ্বজুড়ে সামরিক ব্যয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড, শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক আজ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড গলাচিপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র দাখিল বাংলা নববর্ষ

অনেক কিছুই অস্পষ্ট নিরাপত্তার কথা নেই

বাংলাদেশের নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকে (আইপিও) অনেক কিছুই অস্পষ্ট। এতে প্রত্যাশার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়নের কোনো পরিকল্পনার উলে­খ নেই। এমন মন্তব্য করে বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দেশ সফরের আগে ১৫ দফার নিজস্ব আউটলুক ঘোষণা করা হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ২৪ এপ্রিল এই আউটলুক ঘোষণা করেন।


বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মৌলিক নীতি-সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়-এর আলোকে এই আউটলুক প্রণীত। কোনো বলয়ে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের নীতি নয়।


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) ধারণা সামনে নিয়ে আসেন। নিরাপদ ও উ ন্ম ুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে উলে­খ করা হয়। তবে অনেকে মনে করেন, চীনের প্রভাব মোকাবিলায় এই কৌশল প্রণীত হয়েছে। সমুদ্রে চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত এক জোট হয়ে কোয়াড নামের সামরিক জোট গঠন করে। যুক্তরাষ্ট্র তার অংশীদার দেশগুলোর বাইরে অন্যান্য দেশকেও ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের তাগিদ দিচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার দেশগুলোর বাইরে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোও নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ঘোষণা করেছে। তবে সব দেশ এ কৌশল ঘোষণা করেনি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ ২২টি দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির নিজস্ব কৌশল ঘোষণা করেনি। জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘সরকার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির নীতিমালার আলোকে একটি আউটলুক দিয়েছে। বিভিন্ন দেশ যেভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি দিচ্ছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের আউটলুক প্রণয়নের চেষ্টা হয়েছে। তবে এই আউটলুকে অনেক কিছুই ভাসাভাসা, গভীরতা নেই। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বলতে কী বোঝায় তার কোনো উলে­খ নেই।’


তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির একটা বড় অংশ হলো নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশ তার আউটলুকে এ বিষয় স্পর্শই করেনি। এছাড়াও, বাংলাদেশের আউটলুকে কোনো কিছুই বিস্তারিত নেই। ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো জায়গায় উলে­খ করা হয়নি। আউটলুকের ১৫ দফার বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নেই। প্রত্যাশার কথা বারবার উঠে এলেও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নেই। অপরাপর দেশগুলো তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কৌশলও উলে­খ করেছে।’


মেজর জেনারেল (অব.) মুনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আউটলুকে নতুন দু-একটা জিনিস আছে। যেমন-মহাকাশ সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। মহাকাশ সহযোগিতায় বাংলাদেশের কোনো সামর্থ্য নেই। ফলে এটা কেন উলে­খ করা হলো তা বোধগম্য নয়। স্মার্ট বাংলাদেশের উলে­খ আছে। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের নিজস্ব পরিকল্পনা।’


বাংলাদেশ কেন ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ঘোষণা করল জানতে চাইলে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘যেহেতু বিভিন্ন দেশ বারবার জানতে চাইছে তাই বাংলাদেশ তার অবস্থান বলার চেষ্টা করেছে।’


এই আউটলুক ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের লাভ কিংবা লোকসান কী জানতে চাইলে মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের লস হওয়ার কিছু এতে নেই। ভ‚-রাজনীতির প্রতিযোগিতায় অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে কিছু এতে নেই। পশ্চিমা বিশ্ব হয়তো আরও স্পষ্টত জানতে চাইবে। আরও সুনির্দিষ্ট কিছু আশা করতে পারে। অনেক দেশ কোয়াডের বিষয় উলে­খ করেছে। বাংলাদেশের আউটলুকে এর কোনো উলে­খ নেই। (চীনের) বিআরআইয়ে (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) সই করেছে বাংলাদেশ। ফলে তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকে নেই। তবে কাউকে (যুক্তরাষ্ট্র) খুুশি করার জন্যে এই আউটলুক করা হয়ে থাকলে তারাও পুরোপুরি খুশি হবে না।’


সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের আগে চিন্তা-ভাবনা করে ঘোষণা করা হয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে সাধারণভাবে বাংলাদেশ কী ভাবছে সেটা উলে­খ করা হয়েছে। জাপান সফরকালে যাতে কোনো কিছু চাপানোর চেষ্টা না হয় তার জন্য এটা আগাম জানিয়ে দেওয়ার কৌশল। চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়েছে। আমরা সেই রকম প্রচেষ্টায় যোগ দিতে চাই না। অন্যান্য আঞ্চলিক দেশে যাতে বৈরী প্রভাব না পড়ে সেভাবে কৌশল নেব।


সাবেক রাষ্ট্রদূত এম শফিউ ল্লাহ যুগান্তরকে বলেছেন, অন্যান্য দেশও বিশেষ করে আসিয়ান দেশগুলো নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ঘোষণা করেছে। ২০১৮ সাল থেকেই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির জন্য বাংলাদেশের কাছে অনুরোধ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের আগে বাংলাদেশ আউটলুক ঘোষণা করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শক্তিশালী দেশ জাপান। অপরদিকে, চীনের উত্থান ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল প্রণয়নে উৎসাহিত করছে। কারণ দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে জাপানের ইমেজ আছে। চীনকে মোকাবিলা না করলে দেশটির প্রভাব বলয় বাড়বে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে।’


তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০৪১ সালের ভিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক প্রণয়ন করেছে। তবে বাংলাদেশের এই আউটলুকের অনেক কিছুই স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি মহল, সিপিডি, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট, নিরাপত্তা থিংকট্যাংকের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে স্পষ্ট করতে হবে। তবে ভালো দিক হলো, বাংলাদেশের একটি অবস্থান পাওয়া গেল। এখন এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেছেন, ‘আমি মনে করছি, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বঙ্গপোসাগর সেকেন্ড হটস্পট। প্রথম হটস্পট সাউথ চায়না সি। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। তাই অনেক দেশই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইছিল। ফলে ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক প্রকাশ করা বাংলাদেশের জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এই আউটলুকে বাংলাদেশ তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের পূর্বে এই আউটলুক প্রকাশ করেছে। কারণ এসব সফরে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে কেউ জানতে চাইলে তাকে এই আউটলুক দেওয়া যেতে পারে।’


তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনই কোনো ব্লকে ছিল না। বর্তমানে বিশ্ব পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তিত হচ্ছে। অনেক মেরুকরণ হচ্ছে। অনেকেই ভাবছে, বাংলাদেশও কোনো পক্ষ নেবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ কোনো পক্ষ নেয়নি। আমাদের কোনো পক্ষ নেওয়ার প্রয়োজনও নেই। আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিতে বিশ্বাসী। নিজস্ব আউটলুকে এটার উলে­খ আছে। বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল চায়।’

আরও খবর


662726491f382-230424090857.webp
তীব্র গরম আরও বাড়তে পারে

৪ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে