বহুল প্রতীক্ষিত দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিমানবন্দরের কাওলা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আসতে প্রতিটি গাড়িকে সময় ব্যয় করতে হবে মাত্র ১০-১২ মিনিট।
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন জানিয়েছেন, উদ্বোধনের পর সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী গাড়িতে উড়ালসড়কে উঠবেন। টোল পরিশোধ করে উড়ালসড়কের বিজয় সরণি প্রান্ত দিয়ে নেমে যাবেন আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে। সেখানেও উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। সেখানে তিনি বক্তব্য দেবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (৩ সেপ্টেম্ব) ভোর ৬টা থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে পথচারী, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ তিন চাকার যানবাহন উড়াল সড়কে উঠতে পারবে না।
প্রথম ধাপে রাজধানীর বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। এটিই ঢাকার বুকে প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। অর্থাৎ কোনো ধরনের ট্রাফিক সিগনাল ছাড়াই নির্বিঘ্নে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।
উড়াল সড়কের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার জানিয়েছেন, দ্রুতগতিতে ও নিরাপদে যাতে গাড়ি চলাচল করতে পারে, সেজন্য দুই ও তিন চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে না।
উড়ালসড়ক ব্যবহার করতে টোল দিতে হবে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও হালকা ট্রাককে ৮০ টাকা, বাস ও মিনিবাস ১৬০ টাকা, মাঝারি ট্রাক ৩২০ টাকা এবং ভারী ট্রাক বা ট্রেইলরে ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। এটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কারণে টোলের টাকা থেকে নির্মাণ ব্যয় তোলা হবে।
প্রকল্প সূত্র বলছে, বিমানবন্দর এলাকায় দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ও ফার্মগেটে তেজগাঁও কলেজের সামনে নামছে একটি র্যাম্প। এর মধ্যে বনানী ও মহাখালীর দুটি র্যাম্পের কাজ শেষ হয়নি। এজন্য আপাতত র্যাম্প দুটি বন্ধ থাকবে।
উড়ালসড়কটি তৈরি হচ্ছে সরকারের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধানে। মূল উড়ালসড়ক ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠা-নামার জন্য ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র্যাম্প (সংযোগ সড়ক) রয়েছে। র্যাম্পসহ উড়ালসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট এই সাড়ে ১১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে স্বাভাবিকভাবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগত। কোনো কোনো সময় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টাও লেগে যায়। তবে উড়ালসড়কে সময় লাগবে ১০ থেকে ১২ মিনিট।
বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যেতে কাওলা, কুড়িল আর গলফ ক্লাবে ওঠার ব্যবস্থা থাকবে। একদিকে নামা যাবে বনানী ও মহাখালী আর ফার্মগেটে। অন্যদিকে, তেজগাঁও থেকে বিমানবন্দর যেতে বিজয় সরণি ওভারপাসের দুই প্রান্ত আর বনানী থেকে থাকবে ওঠার ব্যবস্থা। নামা যাবে মহাখালী, বনানী, কুড়িল ও বিমানবন্দর এলাকায়।
উড়ালসড়কটি কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ঢাকার যানজট অনেকটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ঐ বছরের জুন মাসে উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) আওতায় প্রকল্পটি ২০১৬ সালে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু উড়ালসড়কের নকশা বদল, ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা, অর্থের সংস্থানসহ নানা জটিলতায় নির্মাণকাজ শেষ করার সময়সীমা পাঁচ বার পিছিয়েছে। তবে প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পটিতে থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানির ৫১ শতাংশ, চীন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যা কো-অপারেশন গ্রুপের ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশনের ১৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। নির্মাণ পরবর্তী সাড়ে ২১ বছর উড়ালসড়কের টোল আদায় করে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগের টাকা তুলে নেবে।
৪ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে