আশি মাইল বেগে উড়ে যাওয়া ঈগল পাখিটি আজ বসে আছে পাহাড়ের পাদদেশে এক মস্ত বড় পাথরের উপর। কখনো কারো সাথে পরাজিত হয়নি কখনো কোন শিকারিও তার পিছু ধরেনি।পোকামাকড় ফল-মূল ছিল তার সুস্বাদু ভোজন বিলাস। এক বেলা অনাহারের মর্মও সে বুঝে নাই। একটানা শত শত পথ পাড়ি দিয়েছে তবুও ক্লান্ত হয় নাই। পাখিটিকে কেউ বাসাও বেঁধে দেয় নাই। আবার কেউ লালন পালন করার জন্যও গ্রহণ করেনাই। মানুষ তাকে অবহেলাও কম করে না। এত কিছুর পরও কখনো সে হতাশ হয় না। কখনো পিছুটান দেয় না টিকে থাকতে চাই যুগের পর যুগ, অনন্ত, অবিরাম। কারণ পাখিটি জানে সে আত্মনির্ভরশীল অন্যের উপর নির্ভর করা তার অভ্যাস নয়। হঠাৎ পাখিটি একদিন ডানা ছাপিয়ে আর বেশি দূর উড়ে যেতে পারেনা।
১০ মাইল যেতে না যেতেই ক্লান্ত হয়ে যায়। পাখিটি হতাশ। ভেঙে পড়ে তার আত্মনির্ভরশীলতা। চোখে মুখে গ্লানির ছাপ। মাঝে মাঝে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে। ভুলে যায় লক্ষ্য অর্জনের শত প্রচেষ্টা। ভাবলো, তার দুর্বলতা কোথায়..? কিসে ঘাটতি...? কিসের তার কমতি...? কেন আজ সে এত দুর্বল...? কেন আজ অদূর ওই নীল আকাশে ইচ্ছে মত উড়তে পারছে না...? অবশেষে পাখিকে খুঁজে পেল তার দুর্বল পয়েন্ট।
ভালোভাবে খেয়াল খুঁজে পেল আসল রহস্য। বয়স তার ৪০ এর এর কাছাকাছি। ডানা দুটি এলোমেলো। পাখা গুলোর মধ্যে কিছুটা ভেঙ্গে গেছে। কিছুটা মসকে গেছে। আবার কিছুটা ঝলসে গেছে। পাখানাগুলো তুলতে আবার নতুন পাখনা গজাবে। কিন্তু পাখা যে ঠোঁট দিয়ে তুলবে সে ঠোঁট তার অকেজো হয়ে গেছে। একটু ভেঙে শক্তিহীন হয়েছে রয়েছে। এখন কি উপায় আছে পাখিটির...?
পরবর্তী ৪০ বছর সুন্দর, সাচ্ছন্দ্য, আরামপ্রিয় ও নির্ভরশীল ভাবে বেঁচে থাকার জন্য তাকে লড়াই করতে হবে হচ্ছে পাদদেশে বসে থাকা সেই পাথরটির সঙ্গে। পাখিটি নিঃশব্দ ও নিরুপায় হয়ে শুধুমাত্র লক্ষ্যকে সামনে রেখে, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিজের ঠোঁট তুলে ফেলার চেষ্টা করছে পাথরটির বুকে শত শত আঘাতের মাধ্যমে।
আহ...!
কি কষ্ট...!
নিজেকেই ভাঙতে হচ্ছে নিজের ঠোঁট নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য। আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত। জীবনের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে উপরের ঠোটটি তুলে ফেললো পাখিটি। রক্তে রঞ্জিত তার সারা শরীর। তবুও থেমে নেই। আঘাতের পর আঘাত করছে, অপেক্ষা করছে নিচের ঠোঁটটি তোলার জন্য।
ব্লেন্ডার মেশিনে আপেল পিশলে যে রকম রস বের হয় ঠিক সেই রকম কষ্টে কষ্টে গজলো পাখিটির দুটি ঠোঁট। এবার বাকি রইল শুধু দুটানার পাখনা তোলার কাজ। কষ্টকে কষ্ট মনে না করে, দুমাস আহারের চিন্তা ভুলে গিয়ে, শুরু করলো নিজের ডানার পাখনা তোলার কাজ। আহ জীবন ,,,কষ্টের পর কষ্ট, আবারও কষ্ট, কষ্টের বুঝি শেষ নেই।
দু'মাস পর...
এখন পাখটি খুব খুশি, কষ্ট হোক, তার সুখ আর আনন্দ গুলো এখন থেকে আরো চল্লিশটি বছর তার চারপাশ ঘুরাফেরা করবে। সে আত্মনির্ভরশীল ভাবে বেঁচে থাকতে পারবে আরও ৪০টি বছর।
#প্রত্যেকটি মানুষের সফল অর্জনের পিছনে লুকিয়ে আছে এরকম হাজারো পরিশ্রম।
লেখক: নাজমুস সাকিল
১৯ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
২ দিন ১০ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
২ দিন ১০ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৩ দিন ১৮ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে
১৭ দিন ২০ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
১৮ দিন ১০ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
২০ দিন ৯ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
২৩ দিন ১২ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে