আমার প্রাণপ্রিয়, সম্মানিত কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই) নির্বাচনী এলাকাবাসী
আসসালামু আলাইকুম।
আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই আপনাদের সন্তান হিসেবে এই অঞ্চলে রাজনীতির মাঠে বেড়ে উঠেছি। আওয়ামী পরিবারে জন্ম গ্রহণকরার সুবাদে আমি কৈশর জীবন থেকেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে জন্মের পর থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাথে আমার সম্পর্ক । আমার রাজনৈতিক শিক্ষক ছিলেন এতদঞ্চলের আওয়ামী রাজনীতির প্রাণপুরুষ বিশিষ্ঠ রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন ভূঁইয়া। ছাত্র রাজনীতির শুরু থেকেই রাজনীতি নামক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে আমার পদচারণা মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে। সেই থেকেই আমি আমার জীবনকে আপনাদের সেবায় উৎসর্গ করেছি। রাজনীতির মাঠে এসে আমি আপনাদের যে হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা এবং সমর্থন পেয়েছি তার ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারবো না। আমি আজ দুটি কথা বলতে এসেছি কারণ আমি দলের নিকট মনোনয়ন চাওয়ার পর আমার রাজনীতির অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন আমাদের এই আসনে পূণরায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সভাপতি সাবেক সফল পরিকল্পনা মন্ত্রী ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী জননেতা আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি কে নমিনেশন প্রদান করেন। তারপর থেকে আমাকে আমার নেতাকর্মী এবং শুভাকাঙ্খিরা নির্বাচন করার জন্য ব্যাপক ভাবে সমর্থণ দিয়ে আসছিলেন। আমি সেই সিদ্ধান্তও নিয়েছিলাম। গত কাল আমি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পিছনের কারণ উল্লেখ করতেই আজ আপনাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলা।
প্রিয় এলাকাবাসী, আপনারা জানেন আমি আপনাদের এই এলাকার সন্তান আমার জন্মের পর থেকে আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। আমার জিবদ্দশায় আমি কোনদিন আওয়ামী লীগের আদর্শ থেকে বিচ্ছুত হইনি। এর ফলে আমার উপর বিশ্বাস রেখে আপনারা বিগত সময়ে আমাকে ভালোবেসে তার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারী নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেন ওই ভোটে আমি ৭৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭২টি ভোট কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হই যা আমার রাজনীতির ইতিহাসে আপনাদের ভালোবাসার পরম পাওয়া। আমি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাঙ্গলকোট উপজেলার সকল স্তরের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আমি আপনাদের সেবা করার প্রাণপণ চেষ্টা করি। আমি দায়িত্বে থাকাকালীন আমার প্রাণ প্রিয় উপজেলা নাঙ্গলকোটের মানুষের জন্য আমার উপজেলা পরিষদে সরকার কর্তৃক বরাদ্ধকৃত সকল অর্থ এবং উন্নয়ন মূলক সকল কর্মকান্ড সুষ্ঠ সুন্দর ভাবে বিতরণ ও সম্পন্ন করি। সকল প্রকার সরকারী অর্থের সাথে আমার সম্মানী ভাতার টাকা গুলোও আমার নাঙ্গলকোট এলাকার জনগণের মাঝে বিতরণ করে দিয়েছিলাম। আমি চেষ্টা করেছি আমার উপজেলার মানুষ যেন কোন ভাবে সরকারী বরাদ্ধ থেকে বঞ্চিত না হয়। আমি নাঙ্গলকোট উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের পাশে দায়িত্বের বাইরেও সেবা করে পাশে থেকেছি। মহামারী করোনাকালেও আমি আমার জীবনের মায়া না করে আপনাদের পাশে ছিলাম। এতে করে আমি পর পর কয়েকবার করোনায় আক্রান্ত হই আল্লাহর রহমত আর আপনাদের দোয়া নতুন করে হায়াত ফিরে পাই। আমি আমার এই রাজনৈতিক জীবনে আমার অবস্থান থেকে পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক চর্চা করার চেষ্টা করেছি। এতে করে আমার সাধ্য অনুযায়ী আমার প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং ভাতৃপ্রতিম সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সকল সুসময় দুঃসময়ে পাশে থেকেছি । উপজেলার বিভিন্ন কমিটি করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি মাঠে ঘাম ঝড়ানো কর্মীরা যেন কোন ভাবে পদ পদবী থেকে বঞ্চিত না হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আমি আমার কর্মীদেরও আমার সুসময় দুঃসময়ে পাশে পেয়েছি তা আমি কোনদিন ভূলব না। আমি একটি কথা বলতে চাই আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমার সাথে মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমার সেই ১৯৯৫ সাল থেকে সম্পর্ক তিনি সেই সময় থেকে আমাকে পছন্দ করতেন ভালোবাসতেন । তিনি সেই সময় বার বার আমাকে মাননীয় প্রধনমন্ত্রীর নিকট নিয়ে গেছেন নাঙ্গলকোটের এমপি বানানোর জন্য যা আমি স্মৃতিপটে আজীবন ধরে রাখবো। দূর্ভাগ্য বশত ২০০৮ এ আমাদের এই নাঙ্গলকোট উপজেলাটি ভাগ হয়ে যায় এটি উনি করেননি এটি করেছিলো তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার এতে করে আমাদের এখানে তিনটি উপজেলা একত্রিত হয়ে যায়। একত্রিত হওয়ার পরে তিনি আমাকে নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রদান করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করতে সকল প্রকার সহযোগিতা করেন। তার পরবর্তীতে আমরা আমাদের উপজেলাকে ভাগ করার জন্য আবেদন করি। আবেদন করার পর মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমার দূরত্ব তৈরী হয়। আমি মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে বলি আপনি আমাকে ভূল বুঝছেন এখানে নাঙ্গলকোট আলাদা হলে আপনিই এমপি হবেন এবং আপনিই দুই উপজেলার নেতৃত্ব দিবেন। কিন্তু উনি আমাকে মানুষের কথা শূনে ভূল বুঝেছেন। যতই ভূল বুঝাবুঝি ছিলো ২০১৪ সালে উনি আমাকে ডেকেছেন আমি গিয়েছি ২০১৮ সালেও আমাকে ডেকেছেন আমি গিয়েছি দলীয় নির্বাচন করেছি আজকেও ২০২৪ সালে তিনি আমাকে ডেকেছেন আমি গিয়েছি এবং আমি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছি। আমি উনার সাথে মিলিত হওয়ার পর শুরুতেই আমি আমার প্রাণের উপজেলা নাঙ্গলকোটের মানুষের পক্ষে কথা বলেছি আমি বলেছি আপনি আমাদের নাঙ্গলকোট উপজেলা আলাদা করে দেন। আমি আপনার একজন কর্মী হিসেবে আপনার কাছে বলতে চাই ২০১৪ সালে আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু ২০১৮ সালে আপনার প্রতি সম্মান রেখে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করি নাই তাই আপনার নিকট আমার এবং নাঙ্গলকোটের মানুষের একটাই দাবি নাঙ্গলকোটকে আলাদা করে দেন। এটা করলে আপনি আমাদের সকলের মনের মধ্যে স্থান করে নিতে পারবেন। পরে তিনি আমাকে কথা দিয়েছেন তিনি আমাকে এভাবেই বলেছেন- “আমি আপনার কথা রাখলাম আপনাদের নাঙ্গলকোট উপজেলা আমি আলাদা নির্বাচনী এলকা করে দিবো এবং আপনাকে আপনার সম্মানের জায়গায় রাখবো আপনি আমার পক্ষে কাজ করেন”। উনার এই কথা বলার পর আমি বলেছি- আমি আপনাদেরও একটি কথা বলতে চাই আমি কোনদিন আমার নীতি আর্দশ বিক্রি করিনি ভবিষ্যত জীবনেও করবো না। আমি আমার সেই পূর্বের কথা অনুযায়ী উনার নির্বাচনী অনুষ্ঠানে উনার সাথে গতকাল যাই। যাওয়ার পর উনিও আমাদের সবার সামনে ঘোষনা দেন আপনাদের সকলের দাবি পুরণ করে নাঙ্গলকোট উপজেলাকে আলাদা নির্বাচনী এলাকা করে দিবেন। এতে করে আমি মনে করি আমি আপনাদের সকলের আশা পূরণ করতে পেরেছি এবং মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের এই আশ্বাস বাস্তবায়ন হলে আপনাদের আশা এবং স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো বলে আমি মনে করি। তারপর আমি বা অন্য কেউ এমপি হলে কোন প্রকার আপসুস নেই। আমি মনে করি উনার সাথে গিয়ে আমি নাঙ্গলকোট উপজেলার সকল মানুষের অধিকার আদায়ের ব্যবস্থাটা করতে পেরেছি এজন্যই আমি সেখানে গিয়েছি এবং আওয়ামী লীগের মিটিং এ গিয়েছি। আপনারা আমাকে ভালোবাসেন আমি জানি তাই আবারো বলি কেউ আমাকে আপনারা ভুল বুঝবেন না। নাঙ্গলকোটের মানুষের অধিকার আদায়ের স্বপ্ন নিয়ে আমি ওখানে গিয়েছি আপনারা আমাকে ভুল বুঝবেন না এবং আমি এমপি হইতে হবে, উপজেলা চেয়ারম্যান হইতে হবে একথাও কেউ চিন্তা করবেন না। আমি আপনাদের সাথে আছি এবং আপনাদের সাথে থাকবো ইনশাআল্লাহ্। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
৩ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে
২০ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
২৩ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
১ দিন ৩৮ মিনিট আগে
১ দিন ৪ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
১ দিন ৭ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে
১ দিন ৮ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১ দিন ১৮ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে