কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে এই তথ্য। কয়েকদিন আগেই তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
যতদিন বাংলার কৃষ্টি থাকবে ততদিন থেকে যাবে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’-এর মতো সব গান। শিল্পীর প্রয়াণ হলেও থেকে যাবে তার অসামান্য সৃষ্টির মৌতাত।
১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্ম প্রতুলের। বাবা প্রভাতচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। মা বাণী মুখোপাধ্যায় ও প্রতুলকে নিয়ে দেশভাগের পরে কলকাতায় চলে আসেন তিনি। থাকতে শুরু করে চুঁচুড়ায়। অল্প বয়স থেকেই কবিতায় সুর দিতেন প্রতুল।
কবি মঙ্গলচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি ধান কাটার গান গাই’ কবিতা দিয়ে শুরু। নিজেও গান লিখতেন। অথচ প্রথাগত কোনও সঙ্গীতশিক্ষা তিনি নেননি। নিজের হৃদয় নিঃসৃত আবেগকেই সুর ও কথার মেলবন্ধনে বেঁধে ফেলতে শিখেছিলেন। যেভাবে আদিম মানব সহজাত ভঙ্গিতে গুহার নিঃসীম অন্ধকারে সুরের সাম্পানে পাড়ি দিত অচিন দেশে, সেভাবেই আজীবন প্রতুল নিজের হৃদয়ে জ্বালিয়ে রেখেছিলেন গানের প্রদীপ। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও চিকিৎসকদের ‘আমি বাংলায় গান গাই’ শোনাতেন তিনি।
তবে এই একটিই গান নয়, প্রতুল সারা জীবন ধরে অসংখ্য মণিমুক্তো সৃষ্টি করে গিয়েছেন। বাংলা আধুনিক গান থেকে জাপানি গান, আবার হিন্দি ছবির গান থেকেও উপাদান সংগ্রহ করেছেন। সৃষ্টি করেছেন একের পর এক গান।
জীবনের প্রথম অ্যালবাম `পাথরে পাথরে নাচে আগুন` (১৯৮৮)। তবে সেটি একক অ্যালবাম নয়। অন্য শিল্পীদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হয়েছিল। এরপর ১৯৯৪ সালে `যেতে হবে` প্রতুলের প্রথম একক অ্যালবাম। শেষ অ্যালবাম `ভোর` (২০২২)। সেখানে সংকলিত হয়েছিল শিল্পীর অপ্রকাশিত গানগুলি। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ ছাড়াও `আলু বেচো`, `ছোকরা চাঁদ`, `তোমার কি কোনও তুলনা হয়`, `সেই মেয়েটি`, `ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ`-এর মতো গানও শ্রোতার মন জিতেছে বারবার। তবু কিছু সৃষ্টি তার স্রষ্টার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে মিশে যায়। প্রতুলের জীবনের `ম্যাগনাম ওপাস` এই গান।
বাংলা ও বাঙালির আত্মা যেন ওই গানে জলছাপের মতোই থেকে গিয়েছে। নিজের গানে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার কখনওই পছন্দ করেননি। কিন্তু অন্যান্য গানের মতোই ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গাওয়ার সময় তাঁর কণ্ঠনিঃসৃত জাদুতে গানের কথার সুরেলা চলন মগ্ন করে রাখত শ্রোতাকে। যতদিন বাঙালি শ্রোতা থাকবে এই পৃথিবীতে বেজে চলবে গানটি। থেকে যাবে সেই গানের অমোঘ অনুরণন।
১৬ দিন ৭ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
২৩ দিন ১১ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে
২৫ দিন ১২ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে
৩৩ দিন ১৮ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
৩৭ দিন ২৩ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৩৮ দিন ১৬ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৪৪ দিন ২০ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৪৫ দিন ১৬ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে