মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নোহাটা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে শ্রীপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। এ ঘটনা উপজেলা ব্যাপী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ জনগণ। বিভিন্ন মহলে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি উঠেছে।
এ ঘটনায় রবিবার (৪ মে) ঐ শিক্ষককে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে একাধিক স্থানে মানববন্ধন করেছে শ্রীপুরের সর্বস্তরের জনগণ। সকালে শ্রীপুর সরকারি কলেজে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। এরপর দুপুরে সব্দালপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি বিশাল মানববন্ধন করে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা। মানববন্ধনে শিশু আছিয়ার ঘটনাকে তুলে ধরে একই ইউনিয়নে আবারো এরকম একটি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্ত ঐ শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান বক্তারা।
স্কুল শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, নোহাটা উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক টিটো একজন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলো। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এঘটনার বিচার চাই।
আরেক শিক্ষার্থী সাকিল মোল্লা বলেন, আমাদের বোন আছিয়া ধর্ষকের হাতে মারা গিয়েছে। সে রকমই আরেক প্রচেষ্টা করার অভিযোগ দেখলাম শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর বিরুদ্ধে। তারই স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন এবং গায়ে হাতি দিয়েছেন। এমনকি তাকে ১০-২০ টাকা দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছে। আমরা চাই এর সঠিক বিচার হোক।
মানববন্ধনে মোঃ আল মামুন বলেন, আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনা এক মাস যেতে না যেতেই আবার একই ইউনিয়নে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় আমরা হতবাক। শিক্ষাঙ্গনে শিশুদের নিরাপত্তা না থাকায় আমরা আমাদের শিশুদের স্কুলে পাঠিয়েও চিন্তামুক থাকতে পারছিনা এসব কুলাঙ্গার শিক্ষকদের কারণে। আমরা এই শিক্ষকের দ্রুত বিচার দেখতে চাই।
এ সময় স্থানীয় এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ হামিম বলেন, মাগুরার আলোচিত হিটু শেখের পর একজন শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটো যে লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটিয়েছে আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা যদি একটু দ্রুত করা হতো তাহলে এই রকম ঘটনা আমাদের অহরহ দেখতে হতোনা।
মামলার বাদী শিশুটির চাচা রেজাউল মৃধা ও শিশুটির মা রুমি বেগম জানান, উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের নোহাটা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটো বেশ কিছুদিন ধরেই তার কন্যা ও ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে উত্যক্ত করে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে গত ৩০ এপ্রিল বুধবার দুপুরে শ্রেণি শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই শিক্ষকের কাছে অনুমতি নিয়ে উক্ত ছাত্রী বাথরুমে গেলে শ্রেণি শিক্ষক টিটো ও বাথরুমে প্রবেশ করে একপর্যায়ে ঐ ছাত্রীকে মুখ চেপে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে। সেখানে ঐ ছাত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করতে গেলে ঐ শিক্ষার্থী দৌড়ে ক্লাস রুমে চলে আসে। এ ঘটনার পর শিশুটি বাড়ি ফিরে উক্ত শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি তার মাকে জানায়।
শিশুটির মা গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি জানার পর তার দেবর অর্থ্যাৎ শিশুটির চাচা রেজাউল মৃধাকে সাথে নিয়ে শ্রীপুর থানায় আসেন এবং শিশুটির চাচা রেজাউল মৃধা বাদী হয়ে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীপুর থানা পুলিশ প্রাথমিকভাবে এলাকায় খোজ-খবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ২ মে শুক্রবার রাতে শ্রীপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করেন। এমন চরিত্রহীন শিক্ষকের সুষ্ঠু বিচারের দাবিও করেন তিনি। উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারা মোতাবেক থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মামলা নং- ০৩,তাং- ০২-০৫-২০২৫। তবে, পরবর্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর মুঠোফোনে একাধিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
৭ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে