কালিগঞ্জে রিডা হাসপাতালে অবৈধ গর্ভপাত ও সন্তান বিক্রি: মুচলেকায় রেহাই, ক্ষুব্ধ জনতা
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় রিডা হাসপাতালে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার অবতারণা হয়েছে। ভুয়া স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অবৈধ গর্ভপাত এবং নবজাতক সন্তান বিক্রির ঘটনা ধরা পড়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে। অভিযুক্ত চক্র মুচলেকা দিয়ে এ যাত্রায় রেহাই পেলেও এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (১৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলার পাওখালি এলাকার রিডা হাসপাতালে।
জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মৃত শেখ ছবিলার রহমানের কন্যা সালমা খাতুন, যিনি আগেও একাধিকবার অবৈধ সম্পর্ক ও গর্ভপাতের ঘটনায় আলোচিত হয়েছেন, এবারও একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।
সালমা খাতুনের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তার প্রথম স্বামী হাফিজুল গাজীর সঙ্গে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে, যিনি বর্তমানে স্বামীর সংসারে অবস্থান করছে। কিন্তু সালমা খাতুন স্বামীর সংসার ত্যাগ করে তার মা লতিফা খাতুনের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন এবং বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একাধিকবার গর্ভধারণ করে সন্তান বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি আবার গর্ভবতী হয়ে পড়লে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গার বন্ধন হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর খালাতো ভাই মাহবুব ওরফে মিন্টুকে স্বামী পরিচয়ে পরিচয় দিয়ে রিডা হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডাক্তার আহসানুল ইসলাম কল্লোলের মাধ্যমে সিজার করে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্তানটি শ্যামনগরের নিঃসন্তান দম্পতি আইয়ুব আলী গাজীর স্ত্রী শিল্পী আক্তারের কাছে অর্থের বিনিময়ে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে কালিগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস তাৎক্ষণিকভাবে রিডা হাসপাতালে অভিযান চালান। অভিযানে চক্রের সদস্যরা অপরাধ স্বীকার করে মুচলেকায় মুক্তি পান এবং সন্তানের কথিত পিতার নামে মামলা করার অঙ্গীকার করেন।
উল্লেখ্য, সালমা খাতুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি একাধিক সন্তান বিক্রির ঘটনাও স্বীকার করেছেন তার মা লতিফা খাতুন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবেন না।
এ বিষয়ে রিডা হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “তারা তথ্য গোপন করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভর্তি হয়েছিল, তাই বিষয়টি আগে জানা সম্ভব হয়নি।”
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, “ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর থানায় মামলা করতে গেলে ওসি সাহেব অভিযুক্তকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ আখ্যা দিয়ে মামলা গ্রহণ করেননি। তবে হাসপাতালের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।
৪ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১৬ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
১৬ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে