আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।সমস্ত প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের জন্য।আমরা জানি সুস্থতা-অসুস্থতা সর্বাবস্থায় আল্লাহর নেয়ামত। এজন্য উভয় অবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদেরকে মাঝেমধ্যে অসুস্থতার মাধ্যমে, বিভিন্ন বালা-মুসিবত দেয়ার মাধ্যমে_ পরীক্ষা করে থাকেন,মাফ করে দিয়ে থাকেন।
আমি শুনেছি, আপনার ছেলে কিছুটা রাগান্বিত থাকে। বলতে গেলে অনেকটাই রাগী । এক ধরনের ধৈর্যের বাইরে। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাআলা তাকে পরিপূর্ণ স্থায়ী সুস্থতা দান করুন। তাঁর রাগকে কমিয়ে দিক। আমীন।
এক্ষেত্রে কয়েকটা জিনিস জরুরী;
১. সন্তানের অসুস্থতার জন্য বাবা-মা বেশি বেশি দোয়া করা। বাবা-মার দোয়া সন্তানের জন্য অবশ্যই কবুল । আল্লাহর রাসুল সা. হাদিসও বলে দিয়েছেন । এজন্য বেশি-বেশি নামাজ বা ইস্তেগফার পড়ে বাবা মায়ের উচিত সন্তানের জন্য দোয়া করা। সন্তানের সুস্থতার জন্য দোয়া করা। এটাই প্রথম কাজ।
২. সন্তান কি বেশি মোবাইলে আসক্ত কিনা এটা খেয়াল রাখা। একদমই যেন মোবাইল আসক্তি না হয় । কেননা অধিক মোবাইল আসক্তির কারণে সন্তানের মেজাজ অনেকটাই খিটখিটে হয়ে যায়। এজন্য মোবাইল থেকে সন্তানকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করা। যেভাবে পন্থা অবলম্বন করলে সন্তান মোবাইল থেকে দূরে থাকে সেই পন্থা অবলম্বন করা উচিত। এটা ওই মা-বাবাই ভালো জানবে।
৩.আরেকটা জিনিস খেয়াল করা জরুরী, তা হচ্ছে; সন্তান যখনই যা চায়_ রাগ করে হোক বা হাসিখুশি ভাবে হোক_ সঠিক হোক আর অসঠিক হোক_ আমরা দিয়ে ফেলি। তার রেগে যাওয়ার ভয়ে, কান্না করে ফেলবে এই ভয়ে কিংবা সে রাগ করে কিছু ভেঙ্গে ফেলবে এই ভয়ে দিয়ে ফেলি। এরকম না করা উচিত। মাঝেমধ্যে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত যে, তুমি সবকিছু চাইলেই হবে না । তোমার সব কিছু চাওয়াতে ভালো থাকে না। অনেক সময় এরকম হয় সন্তান যখন দেখে যে, সে কান্না করে চাইলে, সে রেগে চাইলে তার বাবা-মা তাকে দিয়ে দেয়, তখন সে সবসময় এটাই করে থাকে। রেগে যায় অথবা কান্না করে দেয় যাতে করে তার বাবা-মা তাকে দ্রুত দিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে বাবা মা করনীয় হলো; সে যতই কান্না করুকনা কেন যদি ওই জিনিসটা তার জন্য ক্ষতি হয় এটা না দেওয়া তার হাতে। তাকে ইগনোর করার চেষ্টা করা । ইগনোর করে তার কাছ থেকে দূরে চলে না যাওয়া বরং তার পাশেই থাকা এবং তাকে এটা বুঝানো উচিত যে, তোমার সব কিছু চাওয়াতেই আমরা দিব না
আমরা ভালো খারাপ বুঝি তোমার যেটা ভালো সেটাই আমরা দেই বা দেয়ার চেষ্টা করব। ইন শা আল্লাহ।
৪. মূল যে বিষয় সেটা হচ্ছে যে, আল্লাহ রাসূল সা. বলেছেন কেউ যদি তার সন্তানের অধিক রাগ কমাতে চায় সে যেন এই আমলটা করে; আর তা হচ্ছে সন্তানকে আপনি যখনই যা কিছু খাওয়াবেন, যে কোন জিনিস _পানি হোক, ভাত হোক যা আছে সবকিছুতে__
'আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম' পড়ে ফুঁ দিয়ে খাওয়াবেন। সাতবার পড়ে তারপর ফুঁ দেবেন। যে কোন জিনিস সন্তানকে খাওয়ান । সেখানে 'আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম' সাতবার পড়ে ফুঁ দিয়ে তারপর খাওয়াবেন।
তবে এক্ষেত্রে সতর্কতা হল যিনি ফুঁ দিবেন তিনি পবিত্র থাকলে সুন্দর হয়। ভালো হয়।
৫. কখনো দেখা যায় অতিরিক্ত রাগ জিনের প্রভাবের কারণে বা অন্য কোন শত্রুর যাদুর কারণে হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন করার জন্য যে, এটা আসলেই বহিরাগত কোন প্রভাব কিনা। তাহলে নিম্নের দেওয়া ভিডিও লিংকটা প্রতিদিন তিনবার কিংবা চারবার সেই সন্তান যে রুমে থাকে ওই রুমে জোরে সাউন্ড দিয়ে চালু করে রাখা। একবার চালু করে পুরো ভিডিও শেষ করতে হবে জরুরী না। যখনই সময় পায়, যখনই সুযোগ থাকে, যখনই সে দুষ্টুমি করে বা সে খাওয়া-দাওয়া করে_ সেসময়টাতে তার পাশে রাখা। একদম মাথার কাছে বা শরীরে কাছে রাখতে হবে জরুরি না বরং সে যেই রুমে থাকে ওই রুমটাতে রাখলেই হবে।
এক্ষেত্রে বাবা-মা খেয়াল করবে, এই ভিডিও চালু করা অবস্থায় ওই সন্তানের কোন পরিবর্তন আসে কিনা। অর্থাৎ তার চোখ লাল হয়ে যায় কিনা। তার শরীর ভার হয়ে যায় কিনা কিংবা আগের মুহূর্ত থেকে ভিডিও চালানো মুহূর্তটা ভিন্ন পরিবর্তন থাকে কিনা। এমন কোন ধরনের পরিবর্তন চোখে পড়লে বাবা-মা কে বুঝতে হবে তার বহিরাগত কোন প্রভাব আছে অর্থাৎ জিনের কিংবা অন্য কোন জাদুর হতে পারে। অথবা কারো চোখের নজর। এরকম কিছু হলে স্থানীয় বা পরিচিত কোন ভালো একজন কবিরাজ, ধার্মিক কবিরাজ যিনি এই বিষয় চিকিৎসা করেন তার সরণাপন্ন হওয়া।
৬. শতকর্তার জন্য আবারো বলছি, সন্তানের অসুস্থতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মা-বাবা বেশি বেশি দোয়া করা। আর উপরোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল রাখা। সাতবারের আমলটা বেশি বেশি করা। কমপক্ষে এক লাগাতার ২০ দিন আমল করা।
আল্লাহ তাআলা আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখুক। সুস্থ করুন। কবুল করুন। সব ধরনের বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করুন। শয়তানি ধোকা থেকে হেফাজত করুন । খারাপ জ্বীনের প্রভাব থেকে হেফাজত করুন। শত্রুর শত্রুতা থেকে, জাদুঘরের জাদুঘরি থেকে আল্লাহতালা আপনার সন্তানকে হেফাজত করুন । দোয়া করি।
লেখক: উসমান বিন আব্দুল আলীম
ইসলামী বিষয়ক লেখক ও গবেষক
২ দিন ৭ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে
৪ দিন ১৫ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১১ দিন ৩ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
১১ দিন ২০ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
১২ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
১৩ দিন ১৯ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
১৭ দিন ১ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
১৭ দিন ১৪ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে