রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক অপরাধ-সংঘর্ষ নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের কারণে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গাদের উগ্রপন্থী সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা)। গেল শুক্রবার (৭ জুলাই) উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরেক রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠন আরএসওর সঙ্গে গোলাগুলিতে জড়িয়ে প্রাণ হারায় আরসার ৫ সদস্য।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে এই সংবাদ প্রচারের পর রোহিঙ্গা কেন্দ্রিক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরসার সদস্যরা বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দোষারোপ করে সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন নেতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিতে থাকে।
এক স্থানীয় সাংবাদিকের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠানো হয় অডিও বার্তা।
রোহিঙ্গা ভাষায় পাঠানো অজ্ঞাত এক ব্যক্তির এরকম একটি উস্কানিমূলক অডিও ও ভিডিও বার্তা পাওয়া গেছে।
বার্তায় জনৈক ব্যক্তি ওই সাংবাদিকের লেখা প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্য করে আরসা নাকি আরএসও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তার কাছে জিজ্ঞেস করার জন্য আরসার সদস্যদের নির্দেশ দেন। বার্তায় বলা হয়, তোমরা তাকে ভিডিওগুলো পাঠাও আরসায় মারছে নাকি আরএসও মারছে তাকে প্রমাণ দাও, জানতে চাও- তুই মিথ্যা কথা কেন লিখিস? তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করো, আমি করেছি।’ (রোহিঙ্গা ভাষা থেকে অনুবাদকৃত)।
উখিয়া প্রেসক্লাবের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুল হক চৌধুরী বলেন, আমার সম্পাদিত অনলাইন পোর্টাল উখিয়া নিউজে অন্যান্য গণমাধ্যমের মতো সংঘর্ষের সংবাদটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে কল মেসেজ দিয়ে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে এই সাংবাদিক বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশেই আমার নিবাস, আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে আতংকে আছি। তারা যেকোনো কিছু করতে পারে।
এদিকে ওই একই ব্যক্তি ইউটিউবে একটি ভিডিও বার্তায় আরসার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় বাংলাদেশের বিশেষ করে কক্সবাজারের সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নানা ধরণের হুমকি দেন। সাংবাদিকদের শেষ করে দিতে আহ্বান জানান।
এ ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত এপিবিএন বলছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়।
৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, আরসা, আরএসও, নবী হোসেন গ্রুপসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আসছে। যারাই গ্রুপগুলোর অপরাধ কর্মকাণ্ডে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাদের দেয়া হয় হুমকি।
ইতোপূর্বে এপিবিএন সদস্যদেরও তারা হুমকি দিয়েছিল জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, এটি নিয়ে ভয়ের বা আতংকের কিছু নেই, ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বদ্ধ পরিকর। তাদের আইনের আওতায় আনতে সার্বক্ষণিক আমরা আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে পাঁচজন নিহত হন। তাঁরা সবাই আরসার সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এদিকে শুক্রবার ভোরের সংঘর্ষের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
৪ দিন ১৮ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৫ দিন ১৯ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
৬ দিন ১৭ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে
৭ দিন ১৯ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৮ দিন ২২ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৯ দিন ৩ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
১১ দিন ২৯ মিনিট আগে
১৩ দিন ২০ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে