দিনাজপুর সদর উপজেলার ১০নং কমলপুর ইউনিয়নের দাইনুর ইসলামিয়া দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এবং একক সিদ্ধান্তে মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি করে নিজের আধিপত্য বিস্তারের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মাদ্রাসার শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধে মাদ্রাসার প্রধান ফটকসহ ক্লাস রুম ও অফিস কক্ষে লাগিয়ে দেয়া তালা প্রায় একমাস পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, কোতয়ালি পুলিশ,অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মাদ্রাসার সমস্যার সমাধানে পরবর্তী তারিখ ধার্য করে আজ বৃহসপতিবার সকাল ১২টায় মাদ্রাসার তালা খোলা হয়।এবং মাদ্রাসার শিক্ষার কার্যক্রম পুনরায় শুরুর নির্দেশ দেয়া হয়।
সরকারি বিধি বিধান ব্যাতিরেকে দাইনুর ইসলামিয়া দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রার ম্যানেজিং কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে গত ১ এপ্রিল মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্যবৃন্দরা মাদ্রাসায় তালা লাগিয়ে দেয়। অত্র মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশে ২৭এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মিরাজুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার,কোতয়ালি থানার পুলিশ উপপরিদর্শক(নিঃ) অমিত কুমার,১০নং কমলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আহচান হাবীব সরকার,স্থানীয় গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থী অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মাদ্রাসার তালা উন্মুক্ত করা হয়। এ সময় উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মিরাজুল ইসলাম বলেন একক সিদ্ধান্তে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে তালা লাগানো সম্পূর্ন আইন পরিপন্থি।মাদ্রাসার কোন সমস্যা থাকলে স্থানীয়ভাবে বা দাপ্তরিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।এটা কোন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয়।এটি একটা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।আর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত করার অধিকার কারো নেই। কমলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আহচান হাবীব বলেন ইতিপূর্বে আমার ইউনিয়ন পরিষদে মাদ্রাসার সুপার মোঃ মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতি ও মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে মাদ্রাসায় একছত্র আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ দাখিল করলে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য ও সুপারকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় ডাকা হলে মাদ্রাসার সুপার উপস্থিত হয়নি।তবে একটা সমস্যা যেহেতু হয়েছে এটার সমাধান আমরা চাই।কারন নিজেদের রেষারেষিতে যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যহত না হয় সেদিকেই আমাদের সুদৃষ্টি দিতে হবে।শিক্ষার্থী অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে তারা প্রতিনিধিকে বলেন মোঃ মকবুল হোসেন ম্যানেজিং কমিটি গঠনে কাউকে কোন প্রকার অবগত না করে কার্যকরি কমিটি গঠনে নির্বাচন বা কোন প্রকার নীয়মনীতি অনসরন না করেই উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রিজাইডিং অফিসার করে এডহোক কমিটির আহবায়ক কৃষক মোঃ মোস্তফা কামালকে সভাপতি করে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড ঢাকা থেকে ১১সদস্যের অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে আসে।আমরা অভিভাবক সদস্যবৃন্দ ২৫০জন ভোটার।অথচ আমাদেরকে কোন প্রকার অবগত না করেই মোঃ মোস্তফা কামালকে সভাপতি,মোঃ মকবুল হোসেনকে সদস্য সচীব,নুর হোসেন ও নুরুল ইসলামকে দাতা সদস্য,আব্বাস আলী,আবুল কালাম,মতিউর রহমান ও আনোয়ার হোসেনকে অভিভাবক সদস্য,মেনজারুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামকে শিক্ষক প্রতিনিধি,রুখসানা খাতুনকে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এবং মোফাজ্জল হোসেনকে বিদ্যোতসাহী সদস্য করে গত ৩০নভেম্বর ২০২২এ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে আসে।কিন্তু মাদ্রাসার সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল কমিটির অন্যান্য সদস্যকেও কোন প্রকার অবগত না করেই নিজেদের সিদ্ধান্তেই মনগড়া কমিটি করার ফলে গত ২৪ফেব্রুয়ারি ২৩ এ অভিভাবক সদস্য আব্বাস আলী,২৭ফেব্রুয়ারি অভিভাবক সদস্য আবুল কালাম আজাদ,২৮ফেব্রুয়ারি অভিভাবক সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন, মতিবুর রহমান,বিদ্যোতসাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন,দাতা সদস্য নূরুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটির পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ইস্তফা পত্র প্রদান করেন।
মাদ্রাসার সুপার মোঃ মোকবুল হোসেনের মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন করার প্রতিবাদে গত ২৫মার্চ ২৩ তারিখে স্থানীয় এলাকাবাসী, গন্য মান্য ব্যক্তবর্গ ও অভিভাবক সদস্যরা মাদ্রাসার সামনে বিশাল মানব বন্ধন করে।এর পরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা ও কমিটির ইস্তফা প্রদানকারী সদস্য,অভিভাবক সদস্যবৃন্দ,স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ একাধিক ব্যক্তবর্গের উপস্তিতিতে গত ৪এপ্রিল মাদ্রাযসায় তালা লাগিয়ে দেয়।তবে মাদ্রাসার সুপার মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে পূর্বের অনৈতিক কার্যক্রম জাল সনদসহ একাধিক অভিযোগ থাকার পরেও এখনোও স্বপদে বহালতবীয়তে রয়েছেন স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা তার নিকট আত্মীয়ের সুবাদে এমনটাই মন্তব্য করেছেন স্থানীয় একাধিক সচেতন ব্যক্তিবর্গ।তবে মাদ্রাসার সুপারের এমন অনৈতিক কার্যক্রমকে কখনোই মেনে নেবেন না বলে মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্যরা প্রতিনিধিদের জানান।