নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের নুর জাহান (৫৮) নামে এক নারীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা ও হত্যার পরে পাঁচ টুকরো করার ঘটনায় নিহতের ছেলে হুমায়ন কবির এবং তার ৬ সহযোগীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে দণ্ডের অতিরিক্ত আরও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জাহাজমারা গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে হুমায়ন কবির (২৯), একই গ্রামের মিলন মাঝির ছেলে নীরব (২৮), নূরে আলমের ছেলে কসাই নূর ইসলাম (২৮), দুলাল মাঝির ছেলে আবুল কালাম মামুন (২৮), হারুনের ছেলে মিলাদ হোসেন মামুন (২৮), মমিন উল্যার ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩৫) এবং মারফত উল্যার ছেলে হামিদ (৩৫)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২০ সালের ৭ই অক্টোবর বুধবার বিকেলে সুবর্ণচরের জাহাজমারা গ্রামের একটি বিলের মাঝের ধান ক্ষেত থেকে নূর জাহান নামের ওই গৃহবধূর ৫ খণ্ডিত মরদেহের এক অংশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে নিহতের শরীরের আরও ৪টি খণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ। জায়াগা জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এর আগের দিন ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর রাতে খাওয়ার পর নিজের শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন নূর জাহান। ওই রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১২টার মধ্যের কোনো এক সময় হুমায়ন কবির তার অপর ৬ সহযোগীকে নিয়ে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় নূর জাহানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নিহতের মরদেহকে পার্শ্ববর্তী একটি ধান ক্ষেতে নিয়ে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা আলাদাসহ মোট ৫ টুকরা করে। পরে মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো ধান ক্ষেত ও একটি বিলের মধ্যে ফেলে দেয়। যা পরে গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে ৫ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করে। এ ঘটনায় প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে ওই মামলার বাদী হুমায়নকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন হয়েছে প্রমাণ মিললে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হুমায়নসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করে। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন তদন্তকারি কর্মকর্তা।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আদালত মোট ২৭ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। যেহেতু এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, সেহেতু সব আসামির মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় আমরা খুশি।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আবদুর রহমান বলেন, আসামিরা সবাই বয়সে নবীন। যেহেতু পারিবারিক বিরোধেরে জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেহেতু মৃত্যুদণ্ড রায়টি তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসামিদের উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।
৪ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
১ দিন ৩ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৬ দিন ১৮ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে
৭ দিন ১৩ মিনিট আগে
৭ দিন ২৩ মিনিট আগে
৯ দিন ৭ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
১১ দিন ১৯ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে