নিরপরাধ মাদ্রাসা ছাত্রের হত্যার বিচার কি আদৌ হবে?
যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার জালালাইনের শিক্ষার্থী গত ২৭ জুলাই ঢাকা মেডিকেল থেকে চিকিৎসা শেষে আছরের নামাজ বায়তুল মোকাররম মসজিদে আদায় করতে যায়।দক্ষিণ গেটে ছাত্র লীগ যুবলীগের কথিত শান্তি সমাবেশে বিরোধী দল অথবা অন্য গ্রুপের সদস্য ভেবে পিটিয়ে হত্যা করে। প্রথম ৩/৪ দিন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল হিসেবে আলোচিত হলেও মূল ঘঠনা রাজনৈতিক মহলে আসে নাই। পরবর্তী তে স্থানীয় ভাবে মিডিয়ার আসায় বিষয়টা ক্ষতিকর প্রভাব উপলব্ধি করা যায়। একটা নিরপরাধ শিক্ষার্থী সন্ত্রাসীদের হাতে দিনে দুপুরে খুন হওয়ার পর ও গোপন করে ফেলা কতটা অন্যায়।
প্রায় একমাস অতিবাহিত হতে চলছে কিন্তু খুনিদের বিরুদ্ধে আইনী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে নাই না ইচ্ছে করেই নেয় নাই, বিষয়টি প্রশ্নের দাবি রাখে।একটা দেশের বিচার ব্যবস্থা কতটা নাজুক হলে এরকম হতে পারে আপনি কল্পনা করতে পারেন? দুইটা পয়েন্ট উঠে আসে,এক আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কারী বাহিনী কতটা দূর্বল? ২.সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে খুন হওয়ার কারণে বিষয় টা ধামাচাপা পরে গেছে?
যদি প্রথম পয়েন্টের কথা আসে, তাহলে অন্যান্য ক্ষেত্রে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল দোষী গ্রেফতার হয়ে যায়।যেটা ঢাকা-১৭ আসনের তথাকথিত উপনির্বাচনে দেখেছি।হিরো আলমের অভিযোগ আরোপের পর গোয়েন্দা সংস্থা সহ সবাই সোচ্চার। তাহলে ঘটনা কি আসলে,আবার যদি ২য় পয়েন্ট বলি তাহলে তো হিরো আলমের ঘটনায় জড়িতরাও তো সরকারি দলের ছিলো।
এবার,আসি অন্ধ বুদ্ধিজীবী নামক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আর মানবাধিকার কর্মীদের বিষয়, তারা কোন পাখি মারা গেছে আর গাছে পাখির বাসা ভেঙে গেছে এই নিয়ে তোলপাড় করে অথচ একজন মানুষ মারা গেলো তার ব্যাপারে বাক প্রতিবন্ধী হয়ে গেলো?না এদের কাছে মানুষের জীবনের চেয়ে অন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ। তবে আরও ভয়ংকর বিষয় হলো এরা মাদ্রাসার ছাত্র বা কুরআনের হাফেজ বা সাধারণ মানুষ কে এরা মানুষ ই মনে করে না?নিজেদের সার্থ হাসিল আর নিজের দেশের মাটিতে দাড়িয়ে বিদেশিদের গোলামি করার জন্য নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে?
এরপর যদি বলি,সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট পরিচালনা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে ভিক্টিমের পরিবারের কাছে কিছু টাকা পৌঁছে দিয়ে কি তাদের দায়িত্ব শেষ? যদি নিজেদের শিক্ষার্থীদের কে সন্তানের মতো নিরাপত্তা এবং সম্মান দিতে না পারেন, তাদের খুনিদের বিচার করতে না পারেন,তাহলে পরিবারগুলো কি করবে?
ধর্মীয় ভাবে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে একজন মুসলিম ব্যাথা পেলে, গোটা মুসলিম উম্মাহ ব্যাথা পায়। আর ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে একজন কোরআনের হাফেজের খুনিদের বিচার হয় না এটাও কি মেনে নেয়া যায়?
মিডিয়ায় আসার পর থেকে ই বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক ছাত্র সংগঠন গুলো দাবি নিয়ে সামনে এগিয়ে এসেছে।
সর্বপ্রথম ৩১ শে জুলাই ঢাকা মহানগর ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলেও, ক্রমন্বয়ে অপরাপর কওমি ছাত্র সংগঠন গুলোও বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। ৪ঠা আগষ্ট দেশের সকল জেলা ও মহানগরে ও বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ করে চরমোনাই পীরের ছাত্র সংগঠন টি।৮ ই আগষ্ট দেশের প্রায় সকল কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক ছাত্র সংগঠন গুলো ইসলামী ছাত্র সমাজের কার্যালয়ে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হয়।এরপর ১৬ই আগষ্ট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে ১৮ তারিখ ঢাকার পল্টনে বিক্ষোভ মিছিল আর ২৪ তারিখ শাহবাগে সমাবেশের ঘোষণা দেয় কিন্তু ২৪ তারিখ সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করে প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজন করে। তারপরও যদি,হাফেজ রেজাউল হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার না করে তবে 0৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারক লিপি প্রদানের কর্মসূচি পালন করবে।তাদের এই ভূমিকা ধন্যবাদ পেতেই পারে।
কিন্তু দেশের মানুষের নিরাপত্তা কোথায় গিয়েছে আর বিচার ব্যবস্থার কি অবস্থা তা সকলের অনুমান হয়েছে। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? এই ব্যার্থ রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য দায়ী কে বা কারা?এই প্রশ্ন না তুললে আপনার আমার নিরাপত্তা কোথায়??
লেখক
মোঃখালিদ হোসাইন আরাফাত
ছাত্র সংগঠক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২৬ দিন ৪ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
২৭ দিন ৭ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
৩৮ দিন ১ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৫০ দিন ৭ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
৫২ দিন ৬ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৬৪ দিন ৭ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে
৭০ দিন ১১ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে
৮০ দিন ১৩ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে