রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থীত রাজাবাড়ীহাট আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের ৪০টি গরু নিলামের ‘অনিয়ম’ খতিয়ে দেখবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। বুধবার নিলামের ‘অনিয়ম’ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদারের নজরে আসে। পরে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উৎপাদন দপ্তরের পরিচালক ড. এ বি এম খালেদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন ‘গরু নিলামের এই বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে। আমাদের ডিজি স্যারের দৃষ্টিতে এসেছে। তিনি নিজেই বিষয়টা সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন।’ এ নিয়ে তদন্ত হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই হবে। অনিয়ম হলে তো সেটার তদন্ত হবেই। সেটাই নিয়ম। দ্রুত একটা কমিটি করে এর তদন্ত করা হবে।’
এরআগে গত মঙ্গলবার সরকারি এ খামার থেকে ৪০টি গরু নিলামে বিক্রি করা হয়। এই নিলামে অংশ নিতে প্রায় ৪০০ জন ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জামানত জমা দেন। কিন্তু এলাকার একটি প্রভাবশালী চক্র কাউকেই নিলামে অংশ নিতে দেয়নি। কেউ অংশগ্রহণ করতে গেলে তাকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নিলামে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সালমান ফিরোজ ফয়সালের নেতৃত্বে বাদশা, কালু, মেহেরাব ও বাবু নামে চারজন অংশ নেন। এর মধ্যে বাদশা এই খামারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। গরুর সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দর ডাকার পর বাদশা একাই প্রত্যেকের নামে দর হাঁকছিলেন। প্রত্যেকবারই তিনি ২০০ টাকা করে দর বেশি দিচ্ছিলেন। এভাবে মাত্র ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি দরে তারা গরুগুলো কিনে নেন।
এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে প্রত্যেক লটের গরু বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এভাবে গরুগুলো এই সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গরু সিন্ডিকেট পরে বিকেলে খামারের ভেতরেই আরেক দফা নিলাম হয়। তখন সাধারণ মানুষ তাদের কাছ থেকে গরু কেনার সুযোগ পায়। সিন্ডিকেটটি মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে গরুপ্রতি ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করে।
অভিযোগ রয়েছে, গরু নিলামের সময় প্রতিবছরই খামারটিতে এমন ঘটনা ঘটে। খামারের কিছু অসাধু কর্মকর্তা–কর্মচারী এ চক্রটিকে সহায়তা করে। এ কারণে সরকার প্রতিবছর মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
এ বিষয়ে খামারের উপপরিচালক ডা. আতিকুর রহমান বলেন, ‘বিডি জমা দিয়েও যদি কেউ নিলামে অংশ না নেন, তাহলে তার কিছু করার নেই। ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা হিসাবে ৪০টি গরুর সরকারি মূল্য ধরা হয়েছিল ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৬০০ টাকা। সেগুলো বিক্রি করা হয়েছে ১৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮০০ টাকায়।’ এতে সরকারের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গরু যে কেউ কিনতে পারে। সে হয়তো কয়েকজনের সহায়তায় গরু কিনছিল।’
তবে খামারের কর্মচারী যখন নিলামে অংশ নিয়ে গরু কেনেন তখন সেখানে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকেন বলে মনে করেন প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ড. মো. নজরুল ইসলাম। এই কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ছিলেন। বুধবার তিনি বদলি হয়ে রংপুরে চলে যান।
ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খামারের কর্মচারীই যখন এ রকম ভূমিকায় থাকেন, তখন সেখানে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। বিষয়টা নিশ্চয় অধিদপ্তর তদন্ত করে দেখবে।’ তিনি আরও জানান, গত বছর যখন গরু নিলাম হয় তখন তিনি নিজেই ওই খামারে গিয়েছিলেন। ওই সিন্ডিকেট গত বছরও এভাবে গরু কেনার চেষ্টা করেছিল। তবে তাঁর কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।
৭ দিন ৩ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
১২ দিন ৪ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
১৪ দিন ৪ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
১৪ দিন ৫ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
১৪ দিন ১৩ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
১৫ দিন ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
১৬ দিন ২ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১৬ দিন ৪ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে