উপকুলের বৈচিত্র্যময় কৃষাণী যমুনা রানীর গল্প
রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধি ঃ নিজ প্রতিভা, আত্মশক্তি ও মেধাবৃত্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজ উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারা মানুষেরা স্থাপন করেন অনন্য দৃষ্টান্ত। এমনই একজন দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী উপকুলীয় নারীযোদ্ধা যমুনা রানী। বাংলাদেশের দনি-পশ্চিমাঞ্চলের সাতীরার উপকুলীয় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের যমুনা রানী সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখায় ইতিমধ্যে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছেন। স্বামী ও এক সন্তান সহ তিন সদস্যের ছোট্ট সংসার তার। স্বামী মনিন্দ্র সরদার (৩৬) পেশায় দিনমজুর। ছেলে সুজন (১০) ৫ম শ্রেণীতে পড়া লেখা করে। এলাকায় সমাজের নানা অসঙ্গতি বা সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সেখানেই দেখা মেলে যমুনার।
দরিদ্র ঘরের বধু হয়েও তেমন কোন আয়েশি জীবন জীবিকা প্রত্যাশা নেই তার। পারিবারিক ও সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা যে অবহেলিত ও পিছিয়ে আছেন তা যমুনা রানী বয়স ও বুদ্ধির সাথে সাথে অনুধাবন করতে থাকেন। তিনি মনে করেন পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সবেেত্র সম মর্যাদার দাবীদার। তিনি সমাজে নারীর অবস্থা ও অবস্থান সুদৃঢ় করার মনোভাব ও ইচ্ছা পোষণ করেন। একজন সক্রিয় নেত্রী হিসেবে তিনি সমাজের উন্নয়ন কর্মকান্ডে তিনি নিজেকে সপে দেন। কোথাও ছোট রাস্তা সংস্কার, কোথাও বনায়ন সৃষ্টি, কোথাও পারিবারিক কলহ, কোথাও সামাজিক উৎসব এলাকার এ সকল কর্মকান্ডে সবার আগে দেখা মেলে সুপরিচিত যমুনার মুখ। মুখ ভরা হাসি নিয়ে হাজির যে কোন সমস্যা সমাধানে। নিজ এলাকার প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সকল মানুষের জন্য সরকারী বেসরকারী সেবা আদায়ে স্থানীয় সরকার ও সুশীল সমাজের মানুষের মাঝে নিয়মিত যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্থাপন করে দৃষ্টান্ত তৈরী করেছেন সদা হাস্যোজ¦ল নারী যমুনা। তার স্বামীও অনেক খুশি স্ত্রীর এই ধরনের অন্যের কল্যান মূলক কাজ করার জন্য।
নারীনেত্রী হিসেবে তিনি সমাজের উন্নয়নে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি বাল্যবিবাহ নিরোধ, যৌতুক, মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন, প্রবীন অধিকার, কৃষি ও পুষ্টি নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন ধরনের উঠানবৈঠক ও আলোচনার নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় তার।
২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নেটজ পার্টনারশীপ ফর ডেভেলপমেন্ট জাস্টিসের সহযোগিতায় বারসিকের বাস্তবায়নে পরিবেশ প্রকল্প শুরু হলে বুড়িগোয়ালিনী ইউপির বুড়িগোয়ালিনী গ্রামে ময়না সিএসও দলে যুক্ত হন। ২০ জন নারী সদস্য নিয়ে পথ চলা দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করেন। বারসিক থেকে উৎপাদনশীল সম্পদ হিসেবে ২টি ছাগল ও ৬টি দেশী মুরগী সহযোগিতা পান। বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাস করা যমুনা রানী সরকারীভাবে পাওয়া মাত্র ৫ শতক জায়গাতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে বছরব্যাপী বৈচিত্র্যময় ফসল চাষাবাদ ও ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করে তার বাড়ীটিকে একটি মডেল কৃষি খামার গড়ে তুলে অনান্য দৃষ্টান্ত তৈরী করেছেন।
একদিকে সমৃদ্ধশীল ও বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ কৃষি খামার গড়ে তুলে সফলতা অর্জন করেছেন অপরদিকে মানবিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে একজন সমাজ সেবিকা হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন।
ছবি- শ্যামনগরের বৈচিত্র্যময় কৃষি খামারের মালিক যমুনা রানী।
১২ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
১২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
৩ দিন ৪ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
৩ দিন ৯ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে
৪ দিন ৬ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৬ দিন ৭ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৬ দিন ১৩ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৭ দিন ৬ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে