পটুয়াখালীর গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে তরুনী অনশন ভোলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা লঞ্চ কর্নফুলি ৩ এ অগ্নিকান্ড আহত ০৭ সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ আজও ভালো নেই ঢাকার বাতাস! আগামী ২৯ মে লাখাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়েছে দ্বিতীয় স্ত্রী চট্টগ্রামে হিটস্ট্রোকে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু ডিপফেকের শিকার আমির খান ছুটলেন থানায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০ প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন: অর্থমন্ত্রী কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় সড়ক ও পার্ক, উদ্বোধন ২৩ এপ্রিল হিট অ্যালার্টে আরও ৭ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি ঝিনাইদহ জেলার পানি উঠছে না নলকূপে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মুসলিম কমিউনিটি মৌলভীবাজার এর ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব হানিফ উদ্দিন মাস্টার আর নেই মনপুরায় খল থেকে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার। বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী র‍্যাবের অভিযানে স্বামী হত্যায় পরকীয়া প্রেমিকসহ স্ত্রী গ্রেফতার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ২৪ ঘন্টায় আশ্রয় নিল ২৪ বিজিপি সদস্য

জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে স্মার্ট কৃষিপ্রযুক্তি

পরিবর্তিত জলবায়ু উপযোগী কৃষি (climate resilient agriculture) বলতে অভিযোজন, ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং সর্বস্তরে উপযোগী জীববৈচিত্র্য আনায়ন ইত্যাদি বোঝায়, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে টেকসই কৃষির উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ফসলের ওপর এরই মধ্যে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে প্রধান ফসল–ধান, ভুট্টা, আলু, ফুল, নারিকেল, লেবু জাতীয় ফল, পেয়ারা, লিচু ও পেঁপেতে বৈরী প্রভাব তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সার্বজনীন সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি, শিশুবিবাহ ও শিশুশ্রম বন্ধ, ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূরীকরণের মতো বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক অর্জনগুলোকে হুমকির মুখে ফেলেছে জলবায়ু পরিবর্তন।


ভৌগলিক অবস্থান ও বিপুল জনগোষ্ঠীর কৃষির ওপর নির্ভরশীলতার কারণে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশ ওপরের দিকে অবস্থান করে। খরা, লবণাক্ততা, বন্যা, সাইক্লোন, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, বহিঃদেশের বালাইয়ের অনুপ্রবেশ, নদীভাঙন ইত্যাদি বাংলাদেশের কৃষিকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি জোগানের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই ক্ষুদ্র দেশের বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু কৃষি জমির ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অব্যাহত চাপ, প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে কৃষি জমি অকৃষি খাতে চলে যাওয়া।


কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব আজ আর তেমন অজানা নহে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে নানা প্রকারের দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে যেমন- অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, উজানের ঢল, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি। যার ফলশ্রুতিতে ফসল, জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এর কারণে প্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার ফসল ও সম্পদ। ঝড়, বন্যা, খরাসহ বিভিন্ন প্রকার সমস্যা বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে যার ফলে প্রতি বছরে লক্ষ-কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে আমাদের কৃষি। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের এ পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে।


জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

ধান চিটা হয়, অতিবৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়, জমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়, খরায় ফসলে পোকার আক্রমণ বেশি হয়, ফসলের বৃদ্ধি কম হয় এবং ফলন কমে যায়, সঠিক সময় বীজতলা করা যায় না, বন্যা বা অতিবৃষ্টিতে সবজি পচে যায়, খরায় পোকার আক্রমণ বেশি এবং ফলফুল ঝরে যায়, সময়মতো ফসলের চাষাবাদ করা যায় না, কুয়াশায় পরাগায়ন ব্যাহত হয়, আমের মুকুল ঝরে যায়, আলুর মড়ক দেখা যায়, রবি শস্যের ফলন কমে যায়। বাংলাদেশে পানিসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি, বন্যা ও জলাবদ্ধতার প্রকোপ ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১.৫ মিলিয়ন হেক্টর জমি প্রতি বছর বন্যাকবলিত হয়।


জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে করণীয়

খরা, বন্যা, লবণ, তাপ এবং ঠান্ডা সহিষ্ণু স্মার্ট জাত রোপণ বা চাষাবাদ করতে হবে, উঁচু স্থানে বেড ও মাদা তৈরি করা, পলিথিন নিয়ে বেড, মাদা ঢেকে দেওয়া, বন্যা বা পানি সহিষ্ণু জাত ব্রি ধান-৫১, ৫২, ৭৯, বিআর-২২, ২৩ চাষ করা, বেরিবাঁধ ভাঙলে মেরামত করা, মাছের ক্ষেত্রে উঁচু করে পাড় মেরামত করা নেট দেওয়া, স্বল্পমেয়াদী ধানের চাষ করা, বিনা ধান-৭, ১৬ ব্রি ধান-২৮, ৩৩, ৩৯, ১০০, বাউ ধান-১, স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি-ভাসমান বীজতলা তৈরি করা, কচুরিপানায় মাদা বা বেড তৈরি করা এবং ভাসমান মাদায় সবজি এবং ফল চাষ করা, পুকুর খনন করে পাড় উঁচু করা, আগাম কৃষি আবহাওয়ার সার্বিক তথ্য পূর্বেই জানিয়ে দেওয়া (ওয়েদার ফোরকাস্টিং), বন্যার পূর্বে বিভিন্ন প্রকার খাবার সংগ্রহ করে রাখা, মাছ আগে ধরে কোথাও বিক্রি করা, হাঁস-মুরগির প্রতিষেধক টিকা বন্যার পূর্বে দেওয়া, হাঁস-মুরগির ঘরের মেঝে চুন বা ছাই ছিটানো, বন্যার পানি সরে গেলে রোপা আমন মৌসুমের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শাইল জাতের যেমন: বিনা শাইল, নাইজার শাইল, ঝিংগা শাইল, রাজু শাইল, ইন্দ্রো শাইলসহ স্থানীয় জাতের ধান চাষ কর।


তাছাড়া কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অভিযোজিত জাত ও প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রতিটি খাতে জলবায়ু সহনশীল গবেষণায় নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান পরিস্থিতি (পরিসংখ্যান)-বাংলাদেশ ও বিশ্বের বন্যা, খরা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতির বিগত ডাটা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ও জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭, ২৮ কে পরিকল্পনায় রেখে, সরকারের ডেল্টা প্ল্যান ২০২১ এর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড, বৈশ্বিক উষ্ণতা, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের কারণে ভেক্টর বাহিত রোগ, ভাপ-প্রবাহ, তাপমাত্রার চাপ, বায়ুদূষণ এবং খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।


জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি

এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হয়ে উঠেছে শিক্ষা এবং আধুনিক কৃষিক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার অংশ। এরই মধ্যে কৃষিতেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি (আইওটি), ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার শুরু হয়েছে। কৃষিতে এআই প্রযুক্তি সম্বলিত মোবাইল অ্যাপ উদ্ভাবন হয়েছে। এ অ্যাপ দিয়ে ফসলের আক্রান্ত স্থানের ছবি তুললেই বলে দেবে আপনার ফসলের সমস্যা ও সমাধান এবং কৃষিতে এআই প্রযুক্তি সম্বলিত ড্রোন অর্থাৎ ড্রোনের সঙ্গে এআই কাস্টমাইজ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ইন্টিগ্রেট করলে ড্রোন একবার ফসলের ক্ষেতের উপর দিয়ে উড়ে গেলে ওই এলাকার যে সার্বিক অবস্থা জানান দিতে আগামীতে সক্ষম তা হলো: ফসলের মাঠের আর্দ্রতা পরিমাপ করা, ফসলে উপাদানের উপস্থিতি নির্ধারণ করা, শস্য রোপণ ডিজাইন করা, বীজ রোপণ করা, পোকার আক্রমণ জানা (ইমেজ প্রযুক্তি), কীটনাশক স্প্রে করা, সেচ মনিটরিং করা, ফসলের উৎপাদন জানা, ফসলের সার্বিক মনিটরিং করা, মাটির নিউট্রেন্ট, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, পিএইচ, লবণাক্ততা জানা, ফসলের নিউট্রেন্টের অভাব জানা, ফসলের রোগ ও পোকামাকড় জানা, উপস্থিতি জানা, কৃষি ওয়েদার ফোরকাস্টিং অ্যান্ড আগাম অ্যালার্মিং দেওয়া, ফসলের আগাম সম্ভাব্য ফলনের পূর্বাভাস দেওয়া ইত্যাদি। এই এআই প্রযুক্তির প্রতিটি অনুসর্গই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি বিনির্মাণ করে কৃষিকে স্মার্ট তথা স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামীতে কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই প্রযুক্তি) সম্প্রসারণ করে; পরিবর্তিত জলবায়ু উপযোগী কৃষিব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে- কৃষিকে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়।

আরও খবর



6610af934a9d8-060424081235.webp
মোবাইল ফোনেরও চাই যত্ন

১৪ দিন ৮ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে