জয়পুরহাটে বাবা-ছেলেসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন জয়পুরহাটে ট্রাক্টর ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত-২ আহত-৪ জগন্নাথপুরে চলছে কৃষক ও কৃষাণীরা ধান গোলায় তোলার উৎসব বিএনপির জনসমর্থন নেই, তাই তারা নির্বাচনেও নেই: হানিফ দোয়ারাবাজারে শিলাবৃষ্টির তাণ্ডব। শাহপরীরদ্বীপে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৩৫ হাজার ইয়াবা জব্দ পত্নীতলায় ৭ দফা দাবীতে ঔষধ ব্যবসায়ীদের সকাল সন্ধ্যা বন্ধ ধর্মঘট নানা আয়োজনে মিডওয়াইফারি দিবস পালন করেছে কক্সবাজার হোপ ফাউন্ডেশন কক্সবাজারে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালিত কর্মবিরতিতে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একই কায়দায় ফোন নাম্বর ও সিরিয়াল লিখে এক রাতে ৮টি মিটার চুরি শুক্রবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক চাহিদার প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম প্রণয়নের আহ্বান রাষ্ট্রপতির যতদিন সিম বন্ধ থাকলে মালিকানা চলে যায় দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম টেকনাফে চাঞ্চল্যকর মোস্তাক হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন, আটক ৬ উখিয়া উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় বিষয়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কক্সবাজারে আবারো চালু হলো জোবাইক আগামীকাল স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে কক্সবাজারে ছাত্রলীগের সমাবেশ মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

হেঁটে হজে যাওয়া যাবে কি—ইসলাম কী বলে

admin - দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 23-07-2023 08:49:11 am

◾ প্রশ্ন: সম্প্রতি হেঁটে হজে যাওয়ার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ এই কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন; কেউ ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দের কাজ বলে অভিহিত করছেন। এ বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তারিত জানতে চাই।


◾ উত্তর :  সাবালক মুসলমানের সামর্থ্য থাকলে হজ করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মানুষের মধ্যে যারা পৌঁছানোর সামর্থ্য রাখে, তারা যেন এই ঘরের হজ সম্পন্ন করে। এটি তাদের ওপর আল্লাহর অধিকার।’ (সুরা আল ইমরান: ৯৭) আয়াতে ‘পৌঁছানোর সামর্থ্য’ বলতে কী উদ্দেশ্য, তা চার মাজহাবের ফকিহগণ ইসলামি শরিয়তের মূলনীতির আলোকে স্পষ্ট করেছেন। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মত অনুসারে ‘সামর্থ্য’ হচ্ছে, ব্যক্তি ও তার পরিবারের মৌলিক প্রয়োজনীয় খরচ ও ঋণের অর্থ বাদ দিয়ে বাকি সম্পদ দিয়ে ‘জাদ ও রাহিলা’র সামর্থ্য অর্জন করা। ‘জাদ’ অর্থ হজে যাওয়া-আসা ও অবস্থানকালীন খানাপিনা, আবাসন, পোশাক, চিকিৎসা, ভিসা প্রসেসিং, রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদির খরচ। আর ‘রাহিলা’ অর্থ যথোপযুক্ত বাহন তথা নিজের দেশ থেকে সাধারণত যে বাহন দিয়ে হাজিগণ হজ করতে যান, তাতে আরোহণের আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্য অর্জন করা। তবে মক্কা থেকে যাঁদের দূরত্ব তিন দিনের বা তার চেয়ে কম, তাঁদের জন্য বাহন শর্ত নয়। হাঁটতে পারলেই তাঁদের ওপর হজ ফরজ হবে। (আল ফিকহু আলাল মাজাহিবিল আরবাআহ)


সুতরাং মক্কা থেকে যাঁদের দূরত্ব তিন দিনের বেশি, তাঁদের জন্য বাহনে আরোহণের সামর্থ্য না থাকলে হেঁটে হজে যাওয়া ফরজ নয়। তা সত্ত্বেও কেউ যদি পায়ে হেঁটে হজে যান, তাঁর হজ আদায় হবে এবং অন্তরে নিষ্ঠা থাকলে পরিপূর্ণ সওয়াবও অর্জিত হবে। এ নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। তবে শরিয়ত কর্তৃক আবশ্যক না করা সত্ত্বেও এভাবে নিজেকে কষ্ট ও ঝুঁকির মুখে ফেলে হেঁটে হজে যাওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ আলিমের মতে উত্তম কাজ নয়। কেননা, বিদায় হজে রাসুল (সা.) বাহনে চড়ে হজে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া বাহনে চড়ে হজে গেলে হজের কাজগুলো ক্লান্তিহীনভাবে যথাযথভাবে আদায় করতে সহায়ক হয়। (আল মাজমু শরহুল মুহাজ্জাব)


তবে ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়াই ও ইমাম দাউদ প্রমুখ আলিমের মতে, হেঁটে হজে যাওয়া উত্তম। তাঁদের দলিল হলো, বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) আয়েশা (রা.)কে বলেছেন, ‘তোমার কষ্ট অনুপাতে তোমার সওয়াব বৃদ্ধি পাবে।’ বায়হাকির একটি হাদিসে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘যৌবনে আমি হেঁটে হজে যাইনি, এর জন্য আমার আফসোস হয়।’ হজরত হাসান (রা.)-এর ব্যাপারেও বর্ণিত আছে যে তিনি অনেক বার হেঁটে হজে গিয়েছিলেন।


অবশ্য ইসলামি শরিয়তের মূলনীতির আলোকে বিশ্লেষণ করলে এসব দলিলের আলোকে হেঁটে হজে যাওয়াকে জায়েজ বলা যায় এবং যাঁরা এভাবে হজে যাচ্ছেন, তাঁদের তিরস্কার করা যাবে না। এগুলোর আলোকে কোনোভাবেই হেঁটে হজে যাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা কিংবা তাতে অধিক সওয়াব অর্জিত হবে মনে করার সুযোগ নেই। কারণ—প্রথমত, এতে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত কষ্ট, যা ইসলামের মূলনীতি ‘আল্লাহ কারও ওপর স্বাভাবিক সামর্থ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না’ (সুরা বাকারা: ২৮৬)-এর বিপরীত।


দ্বিতীয়ত, এতে রয়েছে কৃত্রিমতা ও রিয়ার প্রবল সম্ভাবনা, যা ‘ইখলাস ছাড়া কোনো আমল কবুল হয় না’—মূলনীতির বিপরীত। তৃতীয়ত, এতে রয়েছে পদে পদে বিপদের আশঙ্কা, ইমিগ্রেশন জটিলতায় পড়ে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়, যা ‘তোমরা নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে ফেলো না’ (সুরা বাকারা: ১৯৫) এবং ‘ইসলামে অন্যের ক্ষতি করা এবং নিজেকে ক্ষতির সম্মুখীন করা বৈধ নয়’ (মুসনাদে আহমদ) এই মূলনীতিদ্বয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।


এ ছাড়া আবু দাউদ শরিফের একটি হাদিসে দেখা যায়, এক নারী হেঁটে হজে যাওয়ার মানত করলে রাসুল (সা.) তাকে বাহনে চড়ে হজে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং মানত ভঙ্গের কাফফারা দিতে বলেন। 


উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক



আরও খবর