চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত হারলা সমবায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিগত ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিদ্যালয়টি। বর্তমানে ২৬০ জন শিক্ষার্থী ও ১০ জন শিক্ষক নিয়ে আশানুরুপ কোলাহল থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ঠ নজরদারির অভাবে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। গত বছর ২৭৩ জন ও এর আগের বছর প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ক্রমানুসারে শিক্ষার্থী কমতে শুরু করেছে।
স্কুলটি শুরুতে টিনের ছাউনীযুক্ত ১টি ভবন দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ১৯৯৩ সালে ৩ টি কক্ষ, ২০০৩ ও ২০১০ সালে ২টি কক্ষ বিশিষ্ট ১টি করে মোট ৩টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। বিগত ১৯৯৩ সালে নির্মাণ করা মূল একাডেমি ভবনের ৩টি কক্ষই জরাজীর্ণ। এ ভবনটিতে ঝুঁকি নিয়েই চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বার বার এ বিষয়ে অবহিত করেও সমস্যা সমাধানের কোন সুরাহা হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে সর্বাচ্চে উপস্থিতির ১ম, ২য়, ৩য় শ্রেণির ১ শিফটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া চালিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের এ বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ও উদ্বিগ্নতায় ভুগছেন অভিভাবকেরা।
সোমবার (৪ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দাঁড়িয়ে থাকা খুঁটিসহ বিদ্যালয় ভবনের ছাদের পলেস্তার খসে খসে পড়ে রড বেরিয়ে আসছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ে। দেয়ালেও দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। এমন ঝুঁকি আর আতঙ্কের মধ্যেই শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে পাঠদান।
বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রতীতি পোদ্ধার ও প্রিয়ন্তী শীলসহ অনেকেই বলে, বাবার কর্মস্থলের পাশে হওয়ায় বাধ্য হয়ে ভয়ের মধ্যে এই স্কুলে ভর্তি করাতে হয়েছে অনেকেরই। তাদের স্কুলটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মা-বাবা স্কুলে পাঠাতে ভয় পায়। ঝড়-বৃষ্টির দিনে ও গাড়ি চলাচলের সময় ভয় লাগে। এ সময় শিক্ষক-শিক্ষিকা যখন পড়াই তখন তাদের মনোযোগ চলে যায় ছাদের দিকে। সব সময় ভয়ের মধ্যে ক্লাস করতে হয় তাদের।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা শুশীল জানান, ক্লাসের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে এই দায়ভার ঘাড়ের উপর চাপ দিচ্ছে দেখে তিনি কাঞ্চনাবাদ ক্লাস্টারের সহকারি শিক্ষা অফিসার জীবন কানাই সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থার নেওয়ার জন্য অনেকবার বলেছেন। তিনি নিজ উদ্যোগে ভবন সংস্কার ও পূর্ণনির্মাণের দাবী নিয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে তদবির চালিয়ে আসছেন। কোন সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ক্লাস চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ঝুঁকির কারণে ভয়ে বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত না হওয়ায় দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।
অভিভাবকসহ স্থানীয়দের দাবি বিদ্যালয়টি পাঠদান উপযোগী করে গড়ে তুলতে নতুন ভবন খুবই দরকার।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সকল বিদ্যালয়কে স্মাট প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার জন্য সরকার প্রতি বছর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ছক আকারে তালিকা সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করে আসছে। চলতি বছরের ৪ মার্চ শেষ তারিখ নির্ধারণ করে আমরা উপজেলার ঝুঁকি পূর্ণ ভবনগুলো তালিকা প্রেরণ করার জন্য প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়ে তথ্য সংগ্রহ শেষ করছি।
৮ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে