হামিদের বিদেশ গমন ও আ.লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে মুখ খুললেন আইন উপদেষ্টা ভারতের ৫০ সেনাকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে অবস্থান জুমার পরও চলবে: হাসনাত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ ইলিয়াস কাঞ্চনের জেপিবির শার্শায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও মাদক ব্যবসায়ীসহ আটক-৩ দুর্যোগ বিষয়ক মহড়া সাগর পাড়ের জীবন যুদ্ধ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৪ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ আগুন সাবেক মেয়র আইভি গ্রেফতার সাতক্ষীরায় বিএসটিআই অনুমোদিত লাইসেন্স না থাকায় দুই ড্রিংকিং ওয়াটার মালিককে জরিমানা খুবিতে প্রফেসর দীপক কামাল মেমোরিয়াল স্কলারশিপ পেলন ১৬ শিক্ষার্থী মানবতার সেবায় রেড ক্রিসেন্টের ভূমিকা অতুলনীয় - চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ. লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণা ঝিনাইগাতীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ১৬টি টাওয়ারসহ পাইপ ধ্বংস, ১টি ট্রাক ও ২টি মাহিন্দ্র জব্দ বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার কাইয়ুমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, অভিযোগ পদবঞ্চিত নেতাদের কৃষ্ণনগরে কালিকাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসায় এডহক কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত নিয়মিত ক্রু মিটিং বাস্তবায়ন করায় পুরস্কার পেলেন বাকৃবির রোভার স্কাউট লিডার প্রথমবারের মতো ইন্টার্নশিপ পেল বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা আশাশুনিতে অঙ্কনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সম্পদ ও ঝুঁকি চিহ্নিত করণ কর্মশালা পীরগাছায় ভাবীর হোটেলে ১৯৯টাকায় পাওয়া যাবে একটি মোটরসাইকেল ভারতের ১৫ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের, দাবি দিল্লির

পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে কুতুবদিয়া

আমাদের দেশে যে কয়টি দ্বীপ  আছে তার মধ্য সুন্দর্যের দিক দিয়ে অন্যতম  সাগর কন্যা দ্বীপ  কক্সবাজারের কুতুবদিয়া।চলুন জেনে নেওয়া যাক কক্সবাজার থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরত্বের সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ দ্বীপটি প্রসঙ্গে

ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আদর্শ স্থান সমুদ্র, আকাশের নীল আর সাগরের নীল মিলে এক অপরূপ বিশালতা সৃষ্টি করে। আর এদিক থেকে এদেশের মানুষ  কিছুটা সৌভাগ্যবানই বটে। কেননা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার আমাদের দেশে অবস্থিত।  তবে এখনও পর্যন্ত অনেকেরই হয়তো জানা নেই কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি কুতুবদিয়া উপজেলার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের কথা। এটি মূলত একটি দ্বীপ, যা কুতুবদিয়া চ্যানেল দ্বারা মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। এর আয়তন ৮৩.৩২ বর্গমাইল। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার। দ্বীপটির উত্তর,পশ্চিম ও দক্ষিন তিন দিকেই বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত এবং পূর্বদিকে কুতুবদিয়া চ্যানেল ও মহেশখালী উপজেলা,পেকুয়া উপজেলা এবং চট্টগ্রাম জেলার বাশখালী জেলা অবস্থিত।

এ দ্বীপটি সমুদ্র বক্ষ থেকে জেগে উঠে চতুর্দশ শতাব্দীর শেষের দিকে।পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এই দ্বীপে মানুষের পদচারণা পাওয়া যায় বলে ধারনা করা হয়।হযরত কুতুবউদ্দীব নামে এক কামেল ব্যক্তি তার কিছু সঙ্গী নিয়ে মগ পর্তুগীজ বিতাড়িত করে এই দ্বীপে আস্তানা স্থাপন করে।অন্যদিকে আরাকান থেকে পলায়নরত মুসলমানেরা চট্টগ্রামের আশেপাশের অঞ্চল থেকে ভাগ্যন্বষনে উক্ত দ্বীপে আসতে শুরু করে।নির্যাতিত মুসলমানের কুতুবউদ্দিনের প্রতি শ্রদ্ধান্তরে কুতুবউদ্দিনের নামানুসারে এ দ্বীপের নামকরন করে কুতুবউদ্দিনের দিয়া,যা পরবর্তীতে কুতুবদিয়া নামে স্বীকৃতি লাভ করে।বর্তমানে এই দ্বীপের বয়স ৬০০ পেরিয়ে গেছে।এই দ্বীপের আয়তন প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে এবং এখনও সাগরের ঢেউয়ের প্রভাবে ভেঙে সমুদ্রে পরিণত হচ্ছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগরকন্যা কুতুবদিয়া দ্বীপটি।

কুতুবদিয়ার দর্শনীয় স্থানঃ

বাতিঘর: বহুবছর আগে সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজকে পথ দেখাতে কুতুবদিয়ায় একটি বাতিঘর নির্মাণ করা হয়েছিল, ভাটার সময় সেই বাতিঘরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। সমুদ্র সৈকত ধরে উত্তর দিকে গেলে বর্তমানে নির্মিত নতুন বাতিঘর দেখতে পাবেন।

সমুদ্র সৈকত: কুতুবদিয়ায় রয়েছে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। নির্জন এই সৈকতে পর্যটকের আনাগোনা খুব কম তবে এখানে জেলেদের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ে। সৈকতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এখানে প্রচুর গাংচিল ঘুরে বেড়ায়। সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখার জন্য আদর্শ জায়গা হচ্ছে কুতুবদিয়া সমুদ্র সৈকত।

বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র: কুতুবদিয়া সমুদ্র সৈকতের দক্ষিণে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখানে প্রায় এক হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।

লবণ চাষ: শীতকালে কুতুবদিয়ায় লবণ চাষ করা হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে লবণ উৎপাদন দেখতে হলে চলে আসতে পারেন কুতুবদিয়ায়।

কুতুব শরীফ দরবার: কুতুব শরীফ  দরবার  দেখতে আপনাকে যেতে হবে দ্বীপের ধুরং এলাকায়। এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা শাহ আব্দুল মালেক আল কুতুবী, তিনি১৯১১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যু বরণ করেন ২০০০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। প্রতিবছর ৭ ফাল্গুন শাহ আব্দুল মালেক আল কুতুবীর মৃত্যুবার্ষিকীতে হাজার হাজার ভক্তের আগমন ঘটে।

কুতুবদিয়া চ্যানেল: মাগনামা ঘাট থেকে কুতুবদিয়া দ্বীপে যাবার সময় এই চ্যানেলটি পাড়ি দিতে হবে।তবে পর্যটকদের কাছে কুতুবদিয়ার চ্যানেল যাত্রা নি:সন্দেহ নান্দনিক।প্রায় প্রাকৃতির নয়নাভিরাম অপরুপ সৌন্দর্যে আপনাকে বিমোচিত করবে।শীতকাল ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় একটু উত্তাল থাকে। এছাড়াও রয়েছে বড়ঘোপ সমুদ্র সৈকত, কালারমার মসজিদ, ধুরুং স্টেডিয়াম, সিটিজেন পার্ক, প্রাচীন দীঘির পাড়ের মতো দর্শনীয় স্থান।

কীভাবে  আসবেনঃ

ঢাকা থেকে কুতুদিয়া আসতে হলে প্রথমে কক্সবাজার এর চকরিয়া উপজেলার বাস স্ট্যান্ড এ গিয়ে সেখান থেকে মগনামা ঘাট হয়ে কুতুবদিয়া যেতে হবে। ঢাকা থেকে সোহাগ পরিবহন, টি আর ট্রাভেলস, গ্রীন লাইন পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সেন্টমার্টিন পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, এস আলম, শ্যামলী, ইউনিক, ঈগল ইত্যাদি এসি/ নন-এসি বাস কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন যাত্রা করে। বাস ভেদে ভাড়া লাগবে ৬০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। এসব বাসে করে কক্সবাজার এর চকরিয়া বাস স্ট্যান্ড নামতে হবে।

চকরিয়া থেকে কুতুবদিয়াঃ

চকরিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে লোকাল সিএনজি করে জনপ্রতি ৬০-৮০ টাকা ভাড়ায় (রিজার্ভ ২৮০-৩২০ টাকা) মাগনামা ঘাটে যেতে হবে। সময় লাগবে আনুমানিক ৪০-৫০ মিনিট। মাগনামা ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকা দিয়ে ৩০ টাকা ভাড়ায় ২০ মিনিটে অথবা স্পিড বোটে ৯০টাকা ভাড়ায় ৭-৮ মিনিটেই কুতুবদিয়া চ্যানেল পার হয়ে পৌঁছে যাবেন কুতুবদিয়া দ্বীপে। মগনামা ঘাট থেকে স্পিড বোটে বড়ঘোপ ঘাট কিংবা দরবার ঘাটের যেকোনো এক ঘাটে যাওয়া যায়। কুতুবদিয়া দ্বীপের ঘাট থেকে বড়ঘোপ বাজার যেতে ২০ থেকে ৩০ টাকা রিক্সা ভাড়া লাগবে।

কোথায় থাকবেনঃ

পর্যটকদের থাকার জন্য কুতুবদিয়া দ্বীপের বড়ঘোপ বাজারে “হোটেল সমুদ্র বিলাস” নামে একটি আবাসিক হোটেল চালু আছে। সমুদ্রের খুব কাছে হওয়ায় এই হোটেলে বসে সমুদ্র দেখা করা যায়। এখানে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিভিন্ন ধরণের নন-এসি রুম পাওয়া যায়।

এছাড়া ক্যাম্পিং এর জন্য আদর্শ কুতুবদিয়া দ্বীপ। নিরিবিলি সৈকতের কাছে ক্যাম্পিং করার জন্যে অনেকেই এই দ্বীপকে বেছে নেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোন সংশয় নেই। তারপরেও প্রয়োজন মনে হলো স্থানীয় মানুষদের সাথে কথা বলে নিন।

কোথায় খাবেনঃ

খুব ভালো কোন রেস্টুরেন্ট না থাকলেও কুতুবদিয়া দ্বীপের বাজারের স্থানীয় হোটেল গুলোতে শুঁটকি, ভর্তা, নানা ধরনের মাছ ও মাংস দিয়ে উদর পুর্তি করতে পারবেন। বড়ঘোপ বাজারের বেলাভুমি,“নিউ মদিনা” কিংবা “ক্যাফে আলম” তুলনামূলক ভালো খাবার পাওয়া যায়।

ভ্রমণ সতর্কতাঃ

সাগরের জোয়ার-ভাটা নির্ণয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সাগরে নামতে হলে নিজ উদ্যোগে জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিতে হবে। অবশ্যই ভাটার সময় সাগরে নামা থেকে বিরত থাকুন। স্পিড বোট ও ইঞ্জিন নৌকায় দ্বীপ থেকে ছেড়ে আসার শেষ সময়টা আগেই জেনে রাখুন। সকাল ৬.৩০ মিনিট থেকে রাত ০৯.০০টা পযন্ত  স্পিড বোট ও ইঞ্জিন নৌকা চলাচল করে।

একান্ত সময় কাটানোর জন্য নির্জন সমুদ্র সৈকত। চাইলে পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের সাথেও যেতে পারেন। ঝাউগাছের ঘেরা দ্বীপের সৈকত এলাকা নীরবতা প্রিয় পর্যটকদের কাছে ভীষণ আকর্ষণীয়। চাইলে  সময় বের করে ঘুরে আসতে পারেন বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভুমি সুন্দর এই কুতুবদিয়া দ্বীপে।

Tag
আরও খবর