সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের ‘জরায়ুমুখ ক্যান্সার’ প্রতিরোধক এইচপিভি টিকার কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় এই টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে কলারোয়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের রিসোর্স সেন্টার কক্ষে ওই সমন্বয় সভার আয়োজন করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
সভায় জানানো হয় আগামি ২৪ অক্টোবর থেকে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) টিকা ক্যাম্পেইন শুরু হতে যাচ্ছে, চলবে ৩০ দিন। ওই সময়ে পঞ্চম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী অথবা ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভুত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভির টিকা প্রদান করা হবে। এই টিকা নিতে হলে আগে ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় এম.টি.পি.আই কাজী নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ বাপ্পী কুমার দাস।
এ সময় উপস্থিত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এইচ.এম. রোকনুজ্জামান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমানুল্লাহ আমান, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান, প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন, প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল, শামসুল হক, জাহাঙ্গীর হোসেন, সহিদুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন, মুজিবুর রহমান, ইসরাইল হোসেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান, শিক্ষক আসাদুজ্জামান, মোস্তাফিজুর রহমান, সুপার মুজিবর রহমান, আবু মোনায়েম হোসেন প্রমুখ।
সভায় জানানো হয়, জরায়ু ক্যান্সারে বছরে বিশ্বে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ নারী মারা যান, যার মধ্যে ৯০ ভাগ মৃত্যুই ঘটে উন্নয়নশীল দেশে। বাংলাদেশে প্রতি লাখ নারীর মধ্যে ১৬ জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং ৬ হাজার ৫৮২ জন নারী বছরে মারা যান। অথচ এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য ক্যান্সার। এইচপিভি টিকা গ্রহণের মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
কর্মশালায় আরো বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার (সার্ভিক্যাল ক্যান্সার) ভাইরাস জনিত একটি প্রাণঘাতী প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। এই রোগ বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুতে দ্বিতীয়। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত রক্তস্রাব, শারীরিক মিলনের পর রক্তপাত, মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর, তলপেট, উরুতে ব্যথা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। তবে বাল্যবিবাহ, ঘন ঘন সন্তান প্রসব, একাধীক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী, এইডস রোগী, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এমন নারীরা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই কিশোরী বয়সে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) টিকা নিলে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নয় এমন বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা দেয়া হবে। এইচপিভি টিকা নেয়ার জন্য নির্দিষ্ট তারিখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অথবা স্থায়ী বা অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে আসতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট বয়সী ও নির্ধারিত শ্রেণিতে অধ্যয়নরত কিশোরীরা www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। পরে এই কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ গ্রহণ করা যাবে। রেজিস্ট্রেশনকৃতরা নিজ এলাকা ছাড়াও দেশের যে কোন স্থান থেকে টিকা নিতে পারবে।
এইচপিভি টিকা অত্যান্ত নিরাপদ। যা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত। তারপরও টিকার স্থানে লালচে ভাব বা ব্যথা বা ফুলে যাওয়া হলে এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। কোন ধরণের ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই। ইতোপূর্বে গাজীপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এই টিকা প্রদানে কোন প্রকার সমস্যা দেখা যায়নি। টিকা দেয়ার পর যে কোন সমস্যা বা অসুবিধা হলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকর্মীকে খবর দিতে হবে। প্রয়োজনে ছাত্রী বা কিশোরীকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। টিকা নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে সরকার সবধরণের চিকিৎসার খচর বহন করবে। এইচপিভি টিকা দেয়া শেষ হলে টিকা কার্ডটি দ্রুত সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে।ভবিষ্যতে বিদেশযাত্রাসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা এবং টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ টিকা কার্ডটি প্রয়োজন হতে পারে বলেও জানানো হয়।
৪ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ১ মিনিট আগে