মাগুরা সদর উপজেলার বেরইল পলিতা ইউনিয়ন এর মিথ্যা ধর্ষন মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে দুই নারী জেল হাজতে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও তে ১৫-১৬ বছরের এক তরুণী কে বলতে দেখা যায় তাকে রাতের আধারে নির্জন স্থানে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে । এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ওই নারীর বক্তব্য সূত্রে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ইমরুল ইসলাম। তিনি বেরইল-পলিতা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য সাবেক সদস্য সচিব। তিনি জানান, এ ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। তাকে সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন করার জন্য একটি মহল রিয়া খাতুন নামের এক তরুনী দিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলিয়েছে। তাকে ফাসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। জানা যায়, তরুনীর বক্ত্যব্যের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ছড়িয়ে পড়ার পর সেটি দ্রুত ভাইরা হয় এবং পরে ইমরুল কে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে সরজমিনে গিয়ে জানা যায় হৃদয় নামের একটি ছেলের সাথে অভিযোগকারী ওই রিয়া খাতুন নামের তরুনী প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঈদের দিন বিকালে ওই ছেলের সাথে নড়াইলে ঘুরতে যান তিনি। একপর্যায়ে আনুমানিক রাত সাড়ে এগারোটার দিকে রিয়া নামের ঐ নারী,তার প্রেমিক হৃদয় সহ চার পাঁচ জন লোক একটা ইজিবাইকে করে গঙ্গারামপুরে শফি মাতব্বরের বাড়িতে যায়।
সফি মাতব্বর জানান, রিয়া এবং হৃদয় ওই রাতে তার বাড়িতে আসে এবং পরের দিন সকাল আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত তার বাড়িতে অবস্থান করে। রিয়ার মা পপি বেগম বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে তার নিজের হেফাজতে নিয়ে যায়। এ সময় ইমরুল সহ আরোও অনেকেই উপস্থিত ছিলো।
রিয়াকে নিয়ে নড়াইলে ঘুরতে যাওয়া এবং নড়াইল থেকে ফিরে ওই রাতে রিয়াকে নিয়ে গঙ্গারামপুরে শফি মাতব্বরের বাড়িতে যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায় রিয়ার কথিত প্রেমিক আশিকুর রহমান হৃদয়ের বক্তব্য থেকে।
জানা যায়, লিপি পারভীন এবং নার্গিস খাতুন নামের দুই নারী রিয়াকে দিয়ে ওই বক্তব্য দেওয়ায় এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। রিয়াকে দিয়ে পাশবিক নির্যাতনের মিথ্যা বক্তব্য দেওয়ানো, যাহা ভিডিও তে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কেউ ঐ তরুণী কে শিখিয়ে দিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছে এবং সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার অভিযোগে রিয়ার মা পপি বেগম বাদী হয়ে লিপি পারভীন এবং নার্গিস খাতুনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। পুলিশ আসামি লিপি পারভিন এবং নার্গিস খাতুন কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। অভিযুক্ত লিপি পারভিন মাগুরা সদর উপজেলার বেরইলপলিতা গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী এবং নার্গিস খাতুন নড়াইল সদর উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের মতিয়ার মোল্লার মেয়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন রিয়ার মা পপি বেগম। তাছাড়া রিয়াকে মেডিকেল টেস্টের জন্য মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মেডিকেল টেস্ট করাতে রাজি হননি এবং তাকে ধর্ষণ করা হয়নি মর্মে মুচলেকা দিয়ে মেডিকেল টেস্ট না করিয়ে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতাল ত্যাগ করেন ঐ নারী। বর্তমানে রিয়া নামের ঐ নারী তার মায়ের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে। এ সংক্রান্তে বক্তব্য জানতে বেরোইল-পলিতায় রিয়ার বাড়িতে গেলে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য গত ১৯শে ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে বেরোইল পলিতা বাজারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইমরুল ইসলামের বড় ভাই যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম। সে ঘটনায় শরিফুলের বাবা শেখ গোলাম আকবর বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় একটা হত্যা মামলা দায়ের করেন। জানা যায় সেই মামলার এজহারভুক্ত আসামি রয়েছেন এই লিপি বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম। এবং শরিফুল ইসলাম হত্যা মামলার ০১ নং সাক্ষী কথিত ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত এই ইমরুল। এই হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং শরিফুল হত্যাকাণ্ড মামলার বাদি সাক্ষী সহ তাদেরকে চাপে রাখতে এই ধর্ষণের নাটক সাজিয়েছে একটি কুচক্রী মহল দাবি ইমরুল ইসলামের পরিবারের।
১ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ২ মিনিট আগে