শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রের মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে সাত প্রজাতির ১৭টি বন্য প্রাণী আটক করেছে বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন টিম। ১১ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন টিমের বন্য প্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা। জেলা বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রে মিনি চিড়িয়াখানাটি স্থাপন করা হয়। এটি পরিচালনা করেন অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রের ইজারাদার ফরিদ আহমেদ। চিড়িয়াখানায় প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা। বন্য প্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী দেশীয় কোনো বন্য প্রাণী কেউ চিড়িয়াখানায় আবদ্ধ করে রাখতে, প্রদর্শন বা পরিবহণ করতে পারেন না। কিন্তু এ চিড়িয়াখানায় ওই আইন লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে কয়েকটি প্রাণী আটকে রাখা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৭ প্রজাতির ১৭টি প্রাণী আটক করা হয়েছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ এবং পরিবেশ ও বন উপদেষ্টার নির্দেশে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জব্দকৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি অজগর, চারটি বনবিড়াল, একটি গন্ধগোকুল, একটি শিয়াল, একটি বাজপাখি, পাঁচটি বানর ও চারটি হরিণ। এদের মধ্যে শিয়াল ও বানরগুলো গারো পাহাড়ের বনে রাতেই অবমুক্ত করা হয়। চারটি হরিণ ইজারাদারের জিম্মায় রাখা হয়েছে। বাকি ১০টি প্রাণী বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রেখে চিকিৎসা ও ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন শেষে সুস্থ হলে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে। শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে খাঁচায় আবদ্ধ অজগর ও কয়েকটি বনবিড়াল প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হরিণ, শিয়ালসহ অন্যান্য প্রাণী খাঁচার ভেতর ছুটোছুটি করছে। ময়মনসিংহ থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন র্যাপিড রেসপন্স বিডির সদস্যদের সহায়তায় বন্য প্রাণী অপরাধ দমন টিম প্রাণীগুলো খাঁচা থেকে বের করে আনে। চিড়িয়াখানার ইজারাদার ফরিদ আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসনের ইজারা নিয়ে তিনি চিড়িয়াখানাটি পরিচালনা করছিলেন। বন বিভাগ তাঁকে জানিয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া দেশীয় বন্য প্রাণী চিড়িয়াখানায় রাখা যাবে না। গত বুধবার বন বিভাগের লোকজন প্রাণীগুলোর তালিকা তৈরি করে। এরপর শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সবিহীন প্রাণীগুলো আটক করা হয়। এ বিষয়ে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। জেলা প্রশাসক ও গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, চিড়িয়াখানায় লাইসেন্সবিহীন প্রাণী থাকার বিষয়ে বন বিভাগ তাঁকে জানালে তিনি অভিযানের অনুমতি দেন। অবৈধভাবে কোনো প্রাণী চিড়িয়াখানায় রাখার দায় তিনি নেবেন না। অভিযানকালে ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক তানভীর আহমেদ, জেলা বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার মো. আবদুল্লাহ আল আমিন, বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সুমন মিয়াসহ বন্য প্রাণী অপরাধ দমন টিম ও র্যাপিড রেসপন্স বিডির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
২ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে