রাজবাড়ীতে ভ্যানচালক হত্যাকাণ্ড: বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ২
রাজবাড়ীতে ভ্যানচালক হত্যাকাণ্ড: বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ২
রাজবাড়ী সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে শাহীন শেখ ওরফে রুপল শেখ (২৭) নামের এক ভ্যানচালককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. মনির হোসেন মোল্লা ওরফে বড় মনির এবং মো. মোসলেম মোল্লা। আজ সোমবার সকালে তাদের রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাজবাড়ী সদর থানার এসআই সাব্বির হোসেন ও এএসআই শেখ আবুল হাশেম রুপল হত্যা মামলার তদন্ত কাজে রাজাপুর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। বিকেলে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে নিহত রুপলের পরিবার ও এলাকাবাসী রাজাপুর মধ্যপাড়া গ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
পুলিশের দাবি, মানববন্ধন চলাকালে হঠাৎ কিছু অংশগ্রহণকারী উত্তেজিত হয়ে মামলার আসামিদের বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কর্মকর্তারা এগিয়ে গেলে রাজাপুর গ্রামের মো. মোক্তার বিশ্বাসের বাড়ির সামনে পাকা সড়কে এসআই সাব্বির হোসেন ও এএসআই শেখ আবুল হাশেমের উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় এসআই সাব্বির হোসেন গুরুতরভাবে আহত হন এবং পরে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় এসআই সাব্বির হোসেন বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন,"আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলার বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করা এবং হামলা করার অপরাধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। একইসঙ্গে রুপল হত্যা মামলারও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হবে না, তবে দোষীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিরা এখনো ধরা পড়েনি। তারা জানান, ঘটনার দিন সাদা পোশাকে দুই পুলিশ সদস্য আসামিদের বাড়ির সামনে অবস্থান করছিলেন। বিক্ষোভ মিছিল ওই এলাকায় পৌঁছালে তারা প্রতিবাদ জানান, এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং হামলার ঘটনা ঘটে।
গ্রামবাসীরা জানান, পুলিশি ধরপাকড়ের আতঙ্কে অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তারা এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।