ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ সহজেই জিতে গিয়েছিলো সফরকারী ইংল্যান্ড। এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে যায় সিরিজ। কিন্তু চট্টগ্রাম গিয়ে তাদেরকে হারতে হলো শেষ ওয়ানডেতে। বিষয়টাকে খুব একটা সিরিয়াসলি নেয়নি তারা। কারণ, ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ভালো দল। ঘরের মাঠে তো আরো ভালো। একটা ম্যাচ জিততেই পারে।
টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ার পরও ইংল্যান্ড খুব বেশি চিন্তিত হয়েছে বলেও মনে হয়নি। তাদের ভাবখানা, একটি ম্যাচ হেরেছি তো কী হয়েছে। ঢাকায় ফিরে বাকি দুই ম্যাচ জিতলেই তো সিরিজ আমাদের; কিন্তু ঢাকায় এসে দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়ানোর পর টনক নড়েছে ইংলিশদের।
এখন সমালোচনার তীর ছুটে আসছে চারদিক থেকে। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেই সরাসরি অভিযোগ করেছেন, ইংলিশরা যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি বাংলাদেশকে। ইংল্যান্ডের দল নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইংল্যান্ডের স্কোয়াডে খেলোয়াড় মাত্র ১৩ জন। উইল জ্যাকস ও টম আবেল চোটে পড়ে ছিটকে যাওয়ার পর তাদের আর বিকল্প নেয়নি তারা।
এ ১৩ জনের মধ্যেও রিস টপলি ছিলেন ইনজুরিতে। ফিট ১২ জনের মধ্যে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার ছিলেন কেবল চারজন। স্কাই স্পোর্টসের আলোচনায় বিকল্প খেলোয়াড় না নেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেন নাসের। তিনি বলেন, ‘আমরা ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। এটা গুরুত্বপূর্ণ সফর। আমরা দেখেছি এই সিরিজটা বাংলাদেশ কীভাবে নিয়েছে। আমাদেরও একই সম্মান দেখানো উচিত ছিল। আমাদের স্কোয়াডে আদর্শ ভারসাম্য ছিল না।’
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। এই শোচনীয় পরাজয়ের পর ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার দলের প্রচেষ্টার বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দেরও প্রশংসা করেছেন।
অধিনায়ক জস বাটলারও এই ম্যাচে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। মাত্র ৪ রান করে আউট হন। টানা দ্বিতীয় পরাজয় নিয়ে জস বাটলার বলেন, ‘এটি ছিল ভিন্ন ধরনের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আমাদের হারানোর কৃতিত্ব বাংলাদেশ দলের। কোনও ব্যাটসম্যানই নিজের উইকেট দিতে চান না কিন্তু কঠিন উইকেটে ইনিংস শুরু করা কঠিন ছিল। অন্যপ্রান্তে বেন ডাকেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের একজন ব্যাটসম্যান দরকার ছিল। আমি দলের চমৎকার বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য গর্বিত, প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং কম স্কোর রক্ষায় সবাই চেষ্টা করেছেন।’
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। বল হাতে মিরাজ ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন এবং ব্যাটিংয়ে তিনি ২০ রানের অবদান রাখেন, যার মধ্যে দুটি ছক্কা ছিল। এই ম্যাচে ইংল্যান্ড ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় এবং ১১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। তিন নম্বরে ব্যাট করতে আসা নাজমুল হোসেন শান্ত একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪৬ রানের দারুন এক অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
বাংলাদেশে ওয়ানডে সিরিজ খেলে পিএসএল খেলতে পাকিস্তান চলে যান জেসন রয়। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন স্যাম বিলিংস, আলেক্স হেলসরা। এসব খেলোয়াড়দের আগেই ছুটি দেওয়ায় এই সিরিজে রাখা সম্ভব ছিল না। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর ছুটিতে আছেন হ্যারি ব্রুকও।
চোটে থাকায় অনেকদিন ধরে নেই লিয়াম লিভিংস্টোন, জনি বেয়ারস্টো। নাসের হুসেন মনে করেন ১৮টি কাউন্টি থেকে একজন ব্যাটার তো ঠিকই পাঠানো যেত। তিনি বলেন, ‘মানছি নির্বাচকদের একাধিক বিষয় মাথায় রেখে কঠিন কাজ ছিল। অ্যাশেজের মতো সিরিজ সামনে আসছে, এজন্য তারা টেস্ট খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিতে চেয়েছে।'
‘সাদা বলের খেলোয়াড়দের টেস্টে রেখেছে। কয়েকজন চোটে আছে। কাউন্টি মৌসুমও আসছে ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের ১৮টি কাউন্টি। আমরা যদি বাংলাদেশে একজন ব্যাটার পাঠাতে না পারি। তারা কি পোপ (অলি পোপ) বা জ্যাককে (ক্রাউলি) পাঠানোর কথা চিন্তা করে এসব বলে? যদিও এই দুজন সাদা বলের ভালো ক্রিকেটার হতে পারবে। আমার মনে হয় না। একজন ব্যাটার ঘাটতি ছিল। কেবল এটা বলাটা যথেষ্ট নয়।’
কম ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলতে নামায় স্যাম কারান, মইন আলিদের উপরের দিকে ব্যাট করার সুযোগ দিয়েছে ইংল্যান্ড। তারা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও চলতি বছর বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই ভাবনা ছিল বলে জানান জস বাটলার। নাসেরও এই কারণটা অনুধাবন করে বলেছেন, ‘ধারনা করি যারা খেলেছে তারা হয় বিশ্বকাপে বাড়তি দায়িত্ব পাবে। এটা একটা ভাবনা হতে পারে। কারান, ওকস, জর্ডান ও (রেহান) আহমেদ কঠিন কন্ডিশনে কঠিন পিচ পেয়েছে।’
১১ দিন ২ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
১২ দিন ২ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
১৫ দিন ২৩ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
১৬ দিন ২৩ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে
১৬ দিন ২৩ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
২১ দিন ৪ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
২৮ দিন ১৬ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৩১ দিন ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে