সেভেন সিস্টার্স নিয়ে কী বলেছেন ড. ইউনূস, ভারতে তোলপাড় কেন? বাঘায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ফারুক ফাউন্ডেশনের ফুটবল ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত লালপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪২ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ৭ এপ্রিলে ৪০ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে তাপমাত্রা, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা সুন্দরগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু। পীরগাছায় তাম্বুলপুর কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠে নামাজ আদায় করেন এমদাদুল হক ভরসা আনন্দ বাজারে ফারুকের দোকানে আগুন কুলিয়ারচর ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যাক্তি নিহত গোয়ালন্দ ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল কক্সবাজার থেকে হেঁটে এভারেস্ট জয় করতে যাচ্ছেন ইকরামুল রামু গুলিতে যুবক নিহত অভিযুক্ত চাচাতো ভাই পলাতক রাজবাড়ীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা ঝিনাইগাতীর ডেফলাই গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাইমুন আর নেই চুরির পর মালিককে চোরের ফোন :ক্যাশে এত কম টাকা রাখছেন কেন? ঈদগাহে মাইক বাজানো নিয়ে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০ বাঘায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট কুলিয়ারচরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই জন নিহত

এগ্রিট্যুরিজম বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের একটি নতুন সম্ভাবনা

কলাম

ছোটবেলায় ঈদ কিংবা শীত-গ্রীষ্মের ছুটিতে  শহর থেকে আমরা দাদা বা নানার বাড়িতে পালাক্রমে যেতাম। ওখানে ভাইবোনদের সাথে পুকুর-জলাশয়ে সাঁতার কাটতাম, মাছ ধরতাম, শাক তুলতাম। সেগুলো আবার দুপুরে গরম ভাতের সাথে তৃপ্তি নিয়ে খেতাম।  দাড়িয়ে চাচা মামাদের ক্ষেতে কাজ করতে দেখতাম। অনেক সময় নিজেরাও কাজে লেগে যেতাম। তারা গাছে উঠে আমাদের তাল,ডাব পেড়ে খাওয়াতো।মাঠে গরু ছাগল চড়াতাম।ঘুড়ি উড়াতাম। বিকালে নৌকা ভ্রমণ,  হাটে কিংবা মেলায় যেতাম। মাটির চুলায় রান্না করা তরকারি কিংবা নতুন ধানের পিঠা-পায়েসের স্বাদই আলাদা। আবার গাছে উঠে পছন্দের আম-কাঁঠাল পেড়ে তৎক্ষণাৎ সকলে মিলে খেতাম। শীতকালে ভোরে খেঁজুরের রস পান, আর খিদে পেলে ক্ষেত থেকে তাজা টমেটো, গাজর, মূলা তুলে খেতাম। কিছু বাসার জন্য নিয়ে আসা হত। ছুটি শেষে আবার শহরে ফিরে প্রাণবন্ত  মনে যে যার কাজ শুরু করে দিতাম। এসব নিছক স্মৃতি চারণ নয়,এগুলো  এগ্রিট্যুরিজম (Agritourism) এর উদাহরণ। অতএব এগ্রিট্যুরিজমের চর্চা আমাদের দেশেও যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কৃষকরাও বাড়তি রোজগারের জন্য এই এগ্রিট্যুরিজম চালু করতে পারে। দরকার শুধু বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সহযোগিতা, একটি টেকশই ব্যবসায় মডেল ও পেশাদারী ব্যবস্থাপনা।

এগ্রিট্যুরিজম হল একটি মডেল যেখানে ফার্ম বা কৃষিজমিতে ফুল,ফল বা ফসল উৎপাদন করা হয়, গৃহপালিত পশু লালন পালন করা হয় শুধুমাত্র বিক্রয়ের জন্য নয়, বরং অর্থের বিনিময়ে বহিরাগত মানুষদের আপ্যায়ন, বিনোদন ও কৃষি প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদানের জন্য।এর মাধ্যমে গ্রামীণ সংস্কৃতি ও সেখানের অনাড়ম্বর জীবনাচরণের সাথে মানুষদের সরেজমিনে পরিচয় করানো হয়।এটি হলো কৃষিকাজের সাথে  মানুষের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার একটি প্রচেষ্টা। তাছাড়া গ্রামীণ অভিজ্ঞতা অর্জনেরও একটি অনন্য ভ্রমণ।  এগ্রিট্যুরিজম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এটি হতে পারে কোনো ক্ষেত কিংবা পশু খামারে শিক্ষা সফর, ,স্বেচ্ছাসেবক পর্যটন, সেখানে অবসর যাপন বা পরিদর্শনে যাওয়া, ক্যাম্পিং, সাফারি পার্কে ভ্রমণ, প্রাণীর অভয়ারণ্যে গবেষণার জন্য পরিভ্রমণ প্রভৃতি । এমনকি  যদি গ্রামের কোনো ফার্ম বা অতিথিশালায় বিয়ের আয়োজন ( Destination Wedding) পল্লি বিবাহের আলোকে করা হয়, সেটিও এগ্রিট্যুরিজমের মধ্যে পরে। The Journal of Agriculture, Food Systems, and Community Development (JAFSCD) বৃহত্তরভাবে এটিকে ৫ ভাগে ভাগ করেছে। সেগুলোর সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়া হলো:

সরাসরি বিক্রয় (Direct Consumer Sales): এমন কোথাও পর্যটক ঘুরতে গেলো যেখানে সরাসরি উৎপাদিত পণ্য  যেমন: তাজা শাক-সবজি, ফল, চাল-ডাল, ডিম, দুধ, ঘি মাংস বা নানান হস্তশিল্প ক্রয় করা যায় কিংবা জমি থেকে পছন্দনীয় শস্য-শাক-সবজি  সরাসরি উত্তোলন করে এনে  সে পরিমাণ অনুসারে কৃষককে অর্থ প্রদান করা যায় ,এবং গ্রামীণ হাট; যেখানে দূর দূরান্ত থেকে কৃষক পর্যটক মিলিত হয় ক্রয় বিক্রয়ের জন্য।

কৃষিশিক্ষা( Agricultural Education): শিক্ষার্থীরা  স্থানীয় খামার বা ক্ষেতে  শিক্ষা সফরে যায়।  বয়োজ্যেষ্ঠগণ আসেন কৃষি সমন্ধীয়  জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন কিংবা গবেষণার  উদ্দেশ্যে। এক্ষেত্রে কৃষক নিজে বা তার সহকারীরা শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে।

অতিথিসেবা (Hospitality): পর্যটকরা গ্রামের খামারবাড়িতে সরাসরি অবস্থান করে অতিথি আপ্যায়ন ও গ্রামীণ জীবনযাপন   উপভোগ করে।পাশাপাশি তারা নানা ধরনের  কৃষি কর্মকান্ড যেমন: পশু পালন,দুধ দোয়ানো, চারা রোপন, শস্য উত্তোলন,পরিচর্যা  কিংবা বিবিধ কার্যক্রমে  অংশগ্রহণ করে থাকে।

চিত্তবিনোদন (Recreation): চিত্তবিনোদনে  অশ্বারোহণ, হাতির পিঠে ভ্রমণ, শিকারে যাওয়া, সাফারি পার্ক ভ্রমণ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত।  এখানে শিকার বলতে শুধমাত্র পশু শিকার নয়,যেকোনো কিছু সংগ্রহ যেমন মধূ, গাছ -পাতা বা শিকড়, দুর্লভ প্রাণীর খোঁজ করা, মাছ ধরা সহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড বোঝানো হচ্ছে । 

বিনোদন (Entertainment): উপরে উল্লেখিত প্রতিটি ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে বিনোদন পেয়ে থাকলেও এটি একটু ভিন্ন। এরুপ এগ্রিট্যুরিজম  পশ্চিমাদেশ গুলোতে বেশী প্রচলিত। যেমন ট্রাক্টর ভ্রমণ, খড় ভর্তি ট্রাকে করে পল্লিগ্রাম ভ্রমণ (Hayride) ইত্যাদি। ছোট বড় সকলেরই পছন্দের এ হে-রাইডটি  হ্যালুউইন উৎসবে বেশ জনপ্রিয়।  

এগ্রিট্যুরিজম মূলত কৃষি শিল্প ও পর্যটন শিল্পের একটি সংযুক্তি যা উভয় শিল্পের একাধিক সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখে। যেমন: কৃষি খাতে কৃষকদের পণ্য ন্যায্য দামে বিক্রি না করতে পারা, তাদের পণ্যের উপযুক্ত পরিচিতি না পাওয়া, মালামাল পরিবহন ও সংরক্ষণ সমস্যা ইত্যাদি। আবার পর্যটন খাতে কিছু নির্দিষ্ট কেন্দ্রে অতিরিক্ত পর্যটক (Over Tourism), ভ্রমণের টিকেট সংকট, পছন্দ ও বাজেট বান্ধব হোটেল সংকট ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়।ফলে পর্যটকরা যেরকম শান্তিপূর্ণ  আরামদায়ক ভ্রমণ প্রত্যাশা করে, বরং তা অনেকসময় ক্লান্তিকরে পরিণত হয়। তাই বর্তমানে অনেকেই জনবহুল কেন্দ্র  উপেক্ষা করে অপ্রচলিত নতুন জায়গায় (Offbeat Location) ছুটি কাটাতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

কৃষকরা  বহুমাত্রিক  কর্মকান্ডের মাধ্যমে একক বা সম্মিলিত ভাবে এগ্রিট্যুরিজমের বাস্তবায়ন করতে পারে। তাতে   কৃষকদের যেমন ফসলের মৌসুম ব্যতিত সময়ে আর বসে থাকা লাগবে না,অতিরিক্ত আয়ের মাধ্যমে কৃষিকাজের খরচ নিজেরাই বহন করতে পারবে(Self funded farming project), তেমনি পর্যটকরা অনন্য বিনোদন কেন্দ্র খুঁজে পাবে,গ্রামবাংলা তার স্বকিয়তা ধরে রাখতে সক্ষম হবে, দেশীয়  সংস্কৃতি সম্পর্কে  মানুষ জানবে এবং দেশের পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে।

কৃষিকাজের পাশাপাশি তারা একাধিক ছোট মডেল তৈরির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন শুরু করতে পারে। যেমন : (১)রেস্তোরাঁ চালু করা যেখানে  পর্যটকরা গ্রামের মহিলাদের হাতে বানানো তরতাজা খাবার ও বিভিন্ন পিঠা উপভোগ করবে। (২)ভ্রমণ করতে এসে পর্যটকরা কি কি দেখবে, কিভাবে উপভোগ করবে; অর্থাৎ বিনোদনের ব্যবস্থা যেমন: নৌকা ভ্রমণ, খেলাধুলা, গ্রামীণ পোশাক পরিধান, পল্লি সংগীত, যাত্রা-পালার আয়োজন, নবান্নের মত বিশেষ দিন পালন করা, ইত্যাদি। (৩)পর্যটকদের বিশ্রাম এবং কয়েকদিন ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করা যেটি মাটি, টিন বা ছনের তৈরী হতে পারে (৪) পর্যটকদের কেনাকাটার জন্য দোকানের ব্যবস্থা রাখা যেখানে ক্ষেতে উৎপাদিত তাজা শস্য- শাক-সবজি,খামারের দ্যব্য সহ গ্রামের মহিলাদের হাতের তৈরী নানান পণ্য থাকবে(Farm Based Shop)।(৫) ট্রেনিং সেন্টার চালু করা যেখান থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত ও প্রত্যায়িত ব্যবস্থাপকেরা টাকার বিনিময়ে যাদের অর্থ ও আগ্রহ আছে কিন্তু অভিজ্ঞতা ও পেশাদারি পরামর্শদাতা নেই, এমন ব্যক্তিদের একটি পুর্নাঙ্গ কৃষি পর্যটন  মডেল গঠন করে দিবে; এছাড়াও  কৃষকদের  বিভিন্ন ট্রেনিং দিয়ে সহায়তা করবে ইত্যাদি। এগ্রিট্যুরিজমের জন্য উপরে উল্লিখিত প্রত্যেকটি মডেলের উপস্থিতির আবশ্যকতা নেই। সুপরিকল্পনা থাকলে, এগুলোর মধ্যে একটি বা দুটি দিয়েও ব্যবসা করা যেতে পারে। 

এগ্রিট্যুরিজমের একটি  বৈশিষ্ট্য হলো কৃষিজমিতে একেক ঋতুতে একেক শস্য ও শাক সবজি উৎপাদন (Crop Rotation) করা হয়। যেমন একই জমিতে গ্রীষ্মে সূর্যমুখী ও শীতে সর্ষেফুল চাষ যা ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য (Visual  Dynamic Landscape) সৃষ্টি করে। স্থির কাঠামো থাকার কারনে এরূপ অনন্য বৈশিষ্ট্য  রিসোর্ট ব্যবসায়ের মাঝে অনুপস্থিত। তাই রিসোর্ট ব্যবসায় এগ্রিট্যুরিজমের অন্তর্ভুক্ত নয়। 


বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশে এগ্রিট্যুরিজমের সম্ভাব্য স্থানগুলোতে নিম্নোক্ত কার্যাবলী সংযুক্ত করা যায়: 

(১) নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ ও দেশীয় কৃষি পদ্ধতির অভিজ্ঞতা অর্জনের ব্যবস্থা।

(২) শ্রীমঙ্গল, সিলেট, পঞ্চগড়, চট্টগ্রামে চা বাগান ও ফ্যাক্টরি পরিদর্শন, চাষাবাদে সরাসরি অংশ নেওয়া ও নানান চা পানের আয়োজন।

(৩) পার্বত্য জেলায় জীবনাচরণ উপভোগ, জুমচাষে অংশগ্রহণ ও পর্যবেক্ষণ। 

(৪) সুন্দরবনে জঙ্গলে মধু সংগ্রহে অংশগ্রহণ, বন্য প্রাণী ও গাছের জীবন পর্যবেক্ষণ ও মাছ ধরার কৌশল আয়ত্ত করা। 

(৫) চাঁদপুরে ইলিশের মৌসুমে জেলেদের সাথে মাছ ধরা,ক্রয় করা ও তাজা ইলিশ উপভোগ।

(৬) উপকূলীয় অঞ্চলে শুঁটকি তৈরির প্রক্রিয়া দেখা, শুঁটকি খাওয়া ও ক্রয় করবার ব্যবস্থা। 

(৭) রাজশাহীতে আম ও লিচুর মৌসুমে বাগান ভ্রমণ, ক্রয় করা, রেশম পোকা হতে সিল্ক তৈরী প্রক্রিয়া পরিদর্শন ও সাঁওতাল নৃগোষ্ঠির জীবনাচরণ সম্পর্কে জানা।

(৮) টাঙ্গাইলে তাঁতীদের বাড়িতে অবস্থান করে  সুতা ও শাড়ী তৈরী ও তাঁতশিল্প সম্পর্কে সরেজমিনে জানা।

(৯) যশোরের গদখালির ফুল বাগান পরিভ্রমণ ।

(১০) ঝালকাঠি জেলার ভিমরুলিতে  কীর্তিপাশা নদীর ওপর সবচেয়ে বড় ভাসমান বাজারে ভ্রমণ। সেখানে পেয়ারা বিক্রি করা হয়। ইত্যাদি।

এমনকি গ্রামবাসীর সহায়তায় সম্পূর্ণ একটি গ্রামকে ট্যুরিজম স্পট হিসেবে পরিণত  করা যেতে পারে।

বাংলাদেশে এগ্রিট্যুরিজম প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও এতে রয়েছে অপার সম্ভবনা। তিন বছর আগে এক কলেজ ছাত্রীর উদ্যোগে রাজধানীতে  গড়ে তোলা  কৃষি পর্যটনটি বেশ জনপ্রিয় ও লাভজনক ব্যবসায় হিসেবে বর্তমান। পুনরায় বাংলাদেশের অকৃত্রিম পরিবেশ ও পল্লীগ্রামের সহজ সরল জীবন শুধু দেশীয় পর্যটক নয়, ভ্রমণপিপাসু বিদেশীদের কাছেও বিনোদনের উৎস হয়ে উঠেছে। নরসিংদীর এক যুবক পর্যটনকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং একটি নেটভিত্তিক পর্যটন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজের গ্রামের সৌন্দর্যকে বিশ্বে তুলে ধরার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলছে । এটিতে ভ্রমণের আয়োজন করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ফিরে উপভোগ করছে বিদেশী পর্যটকরা। সানন্দে কয়েক দিনের জন্য বাংলার প্রকৃতি ও মানুষকে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে। গ্রামের মানুষরাও তাদের আতিথেয়তায় যথেষ্ট আগ্রহী। এতে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন হচ্ছে। 

এরকম আরো কয়েকটি এগ্রিট্যুরিজম কেন্দ্র  স্থাপনা করলে দেশে পর্যটন খাতের বিকাশ ঘটবে।মডেলটির বাস্তবায়ন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সহায়তায় গ্রামে গ্রামে এ মডেল নিয়ে প্রচারনা করা প্রয়োজন। স্থানীয়দের প্রশিক্ষণ দিতে হবে যার মাঝে মার্কেটিং এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। এবং গ্রামের  ব্যাংকগুলোতে এ খাতের জন্য স্বল্প সুদে বিশেষায়িত ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। পুনরায় সুগঠিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এটিও রাখা যেতে পারে যেখানে এমনভাবে কয়েকটি অঞ্চলে পর্যটন কেন্দ্রগুলো থাকবে যেনো একেক জায়গায় পর্যটকরা একেক অভিজ্ঞতা পেতে পারে। একবার এগ্রিট্যুরিজম সফলতা স্পর্শ করলে,গ্রামের মানুষকে জীবিকার তাগিদে আর শহরমুখী হতে হবে না। তরুণ প্রজন্ম চাইলে পড়াশোনা শেষ করে আবার গ্রামে ফিরে পূর্বপুরুষের কৃষিজমিতে বা জমি লিজ নিয়ে শুরু করতে পারে কিংবা এ ব্যবসায় আগে থেকে স্থাপন করা থাকলে, নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ করে উন্নয়ন করতে পারে।  এতে বেকরাত্ব কমবে, গ্রামে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং পল্লিবাসীর ক্ষমতায়ন সাধন হবে। মনে রাখতে হবে যে কৃষকের উন্নতি মানেই দেশের উন্নতি। চমৎকার এ মডেলটি মানুষদের মাটির সংস্পর্শে যেতে সাহায্য করে, দেশীয় সংস্কৃতি সংরক্ষণ করে এবং কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারে, সোনার বাংলার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

মাহীন জামাল

ফাইন্যান্স বিভাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Tag
আরও খবর
এনএসএসিইউর নতুন নেতৃত্বে পুতুল- রনি

২৪ দিন ১৪ ঘন্টা ২ মিনিট আগে