রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ। বর্তমানে এই বিভাগে ছয়টি ব্যাচে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী প্রায় ২০০। প্রতিষ্ঠার প্রায় ১০ বছরেও একজনও স্থায়ী শিক্ষক পায়নি বিভাগটি। নেই পর্যাপ্ত স্থায়ী ক্লাসরুম ও ল্যাব। খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়েই চলছে বিভাগটির একাডেমিক ওপ্রশাসনিক কার্যক্রম।
বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভাগের অফিস ও ক্লাসরুম দুটি আলাদা ভবনে অবস্থিত। এক ভবন থেকে আরেক ভবনে ঘুরে ঘুরে ক্লাস করার বিড়ম্বনা নিয়মিত বিষয়। স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা ও ক্লাস নিয়েও বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। নেই কোনো ল্যাব, সেমিনার কিংবা মেয়েদের কমনরুম। খেলাধুলাসংক্রান্ত জিনিসপত্র রাখার জায়গা না থাকায় সভাপতির কক্ষে রাখতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, অল্প কিছু দিন আগেই এই দায়িত্ব পাওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শিগগিরই এ-সংক্রান্ত কমিটি করে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এখন নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল আলম। এরপর থেকেই খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়েই গত ৯ বছর ধরে বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক সালাহ উদ্দিন সেলিম বর্তমানে বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ বলেন, ‘যেকোনো বিভাগেরই শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে গেলে শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা আছে। একটা বিভাগের শিক্ষক হওয়ায় তারা আমাদের বিভাগের একাডেমিক কাজে সেভাবে ফোকাস দিতে পারেন না। নিজস্ব শিক্ষক থাকলে একাডেমিক কার্যক্রমগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হতো, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যা সমাধানে সহজ হতো। পড়াশোনার মান আরও উন্নত হতো।’
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হুসাইন বলেন, ‘প্রায়ই আমাদের গেস্ট শিক্ষকের নিজের ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ক্লাস করে আসতে হয়। এ ছাড়া আমাদের ব্যবহারিক কোর্সগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগের ইন্সট্রাক্টরদের শরণাপন্ন হয়ে ক্লাস করতে হয়। কোর্সগুলো শেষ করতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। অফিস ও ক্লাসরুম দুটি আলাদা ভবনে। এক ভবন থেকে আরেক ভবনে ঘুরে ঘুরে ক্লাস করার বিড়ম্বনা নিয়মিত বিষয়।’
খণ্ডকালীন শিক্ষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম মাহমুদুল হক টুটুল বলেন, ‘শুরু থেকেই খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিভাগটি। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরাই ক্লাস নেন। তবে পাঠদানের ক্ষেত্রে খুব বেশি ঘাটতি না হলেও প্রশাসনিক কাজ সঠিকভাবে করার জন্য স্থায়ী শিক্ষক দরকার।’
সভাপতি অধ্যাপক সালাহ উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় একাডেমিক কার্যক্রম যথাসময়ে সম্ভব হয় না। শিক্ষকদের আগে নিজ বিভাগের কাজ শেষ করে তারপর এই বিভাগের কাজ করতে হয়। তারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করেন বলে বিভাগ টিকে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের প্রশাসনকে কয়েকবার চাহিদার কথা জানিয়েছি। নিয়োগসংক্রান্ত কাঠামো প্রস্তুত। বর্তমান প্রশাসন কিছু দিন আগেই দায়িত্ব নিয়েছে। শিগগিরই বিষয়টি সর্ম্পকে জানাব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘অল্প কিছু দিন আগেই দায়িত্ব নিয়েছি। অনুমোদনের ক্ষেত্রে তো শিক্ষক নিয়োগের শর্ত থাকে, কিন্ত এই বিভাগ কীভাবে অনুমোদন পেল জানি না। বিভাগের সভাপতির শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত প্ল্যানিং পেলে বিষয়টি নিয়ে কাজ করব।’
৩১ দিন ১৫ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৩৩ দিন ১৯ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৪৭ দিন ১২ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৫০ দিন ২ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৫৬ দিন ২৩ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে
৫৮ দিন ৯ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
৫৯ দিন ২৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
১০৮ দিন ২২ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে