স্বল্পমেয়াদি সংস্কারে সম্মত হলে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে কার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বস্তিকা হেদায়েতের জন্য দোয়া করা কুষ্টিয়ায় সাহেরা খাতুন ফাউন্ডেশন ও হাজ্বী নায়েব আলী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কর্তৃক শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বাঘায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে-১০৪৩ কেজি টিসিবির পণ্য চুরীর অভিযোগ চিলমারীতে গাজায় গণহত্যা প্রতিবাদে সাংবাদিক ফোরামের বিক্ষোভ মিছিল একজন জনপ্রিয় অধ্যাপক এবং আদর্শ বাবার শেষ পরিণতি দৃঢ়ভাবে আগাও - নূরুল ইসলাম নাযীফ ফিলিস্তিন - শাহীন খান রাজশাহী বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থী কমেছে ১৯ হাজার রাজশাহী কলেজে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ নরসিংদী কমিউটার ট্রেন ঘোড়াশাল স্টেশনে স্টপেজ দেওয়ায় পলাশের জনমনে স্বস্তি লালপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক সভা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নাগেশ্বরীতে প্রস্তুতি সভা জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নন্দীগ্রামে বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপারের পথসভা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক ১৬ এপ্রিল নন্দীগ্রামে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ধানের শীষ যার হাতে আমরা থাকবো তার সাথে: মতবিনিময় সভায় সাবেক এমপি মোশারফ পলাশে অবৈধভাবে মাটি কাঁটায় চার জনকে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক মামলায় আবারও কারাগারে সাবেক এমপি আজিজ

বর্ণিল আয়োজনে ৫৭তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা





১৮ নভেম্বর   শুক্রবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  
৫৭ তম দিবস’ উপলক্ষে দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মহাসমারোহে চবি  ক্যাম্পাসে উদযাপিত হয় । এ উপলক্ষে সকাল ৯  টায় চবি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বেলুন-ফেস্টুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন । অতঃপর সুসজ্জিত ব্যান্ড দলের ব্যান্ডের সুরের মূর্ছনায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। আনন্দ শোভাযাত্রা চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে  উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এবং অতিথিবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ১১  টায় চবি জারুলতলাস্থ অনুষ্ঠান মঞ্চে  উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি  তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও চবি এলামনাই ড. হাছান মাহমুদ এম.পি., সম্মানিত অতিথিবৃন্দ এবং মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে ৫৭ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কেক কাটেন। অতঃপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এম.পি.। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব  আবদুল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট  মাহবুবুল আলম। আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু চেয়ার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব  এন এম জিয়াউল আলম পিএএ। এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন চবি সাবেক উপ-উপাচার্য ও উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার  মোজাফফর আহমেদ, সাবেক চাকসু ভিপি  মাজহারুল হক শাহ ও চাকসু ভিপি  নাজিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি প্রক্টর ও ৫৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ছিলেন  সহকারী প্রক্টর জনাব মরিয়ম ইসলাম।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোয় মাননীয় উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, প্রায় ৪১ বছর আগে আমি এখানে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়েছিলাম; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমার হৃদয়ের মনিকোঠায় সবসময় সবুজ ও সতেজ। দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সবচেয়ে সুন্দর। এখানে যখন আসি তখন আমি স্মৃতিকাতর হয়ে যাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পাঠদান নয়, ডিগ্রী প্রদান নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হলো জ্ঞানের চর্চা করা এবং এ জ্ঞানের চর্চার মাধ্যমে বিশ্বকে জয় করা।’ তিনি বলেন, ‘অবয়ব বা অবকাঠামো উন্নয়ন সার্বিক উন্নয়ন নয়; প্রকৃত উন্নয়ন হলো পাঠদানের উন্নয়ন, জ্ঞানের উন্নয়ন এবং বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক চর্চার উন্নয়ন।’  মন্ত্রী বাৎসরিক কর্ম-ক্যালেন্ডার তৈরীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে শিক্ষক-গবেষকবৃন্দের গবেষণা কার্যক্রমসহ সকল অর্জন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হবে পাশাপাশি বিশ্বদরবারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শিক্ষা-গবেষণা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন এবং দেশ ও সমাজ গঠনে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন। মাননীয় মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিক ভাবে মানসম্মত জার্নাল প্রকাশের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এ জার্নালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশ বিদেশের গবেষকদের গবেষণা কার্যক্রম প্রকাশিত হবে যা বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে। মাননীয় মন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান-গবেষণাসহ সার্বিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে শত ব্যস্ততার মাঝেও মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী চবি এলামনাই ড. হাছান মাহমুদ এম.পি. কে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। একইসাথে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে চবি’র সবুজ ক্যাম্পাসে স্বাগত ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান। মাননীয় উপাচার্য তাঁর বক্তব্যের শুরুতে মহাকালের মহানায়ক, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাৎ বরণকারী ত্রিশলক্ষ শহীদ, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবর্গ ও ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত দু’লক্ষ জায়া-জননী-কন্যার প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন এবং শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান-গবেষণার অন্যতম তীর্থস্থান। দেশে বহুমাত্রিক দক্ষতা সম্পন্ন যোগ্য ও আলোকিত মানবসম্পদ তৈরীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিরিখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতারে সামিল করতে মাননীয় উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাইসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। ৫৭ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস অত্যন্ত সুন্দরভাবে সফল করায় মাননীয় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটি এবং বিভিন্ন উপকমিটির আহবায়ক ও সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকবৃন্দ ও আইন-শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীবৃন্দকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
     
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান সূচিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি এবং অতিথিবৃন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এ ছাড়া ৫৭ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে চবি ক্যাম্পাসকে অপরূপ সাজে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

আরও খবর