সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়ার আভাস প্রধান উপদেষ্টা কাল কাতার যাচ্ছেন গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন যেকোনো দিন : চিফ প্রসিকিউটর মহাসমাবেশের ডাক দিল হেফাজতে ইসলাম একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন ১৯ দিনে প্রবাসী আয় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা গরমে ত্বকের যত্নে উপকারী উপায় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের পর ইসিকে নির্বাচনী কাজ শুরুর আহ্বান এনসিপির রাজবাড়ীতে ওটিপি প্রতারণায় ৮ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ। রাজবাড়ীতে দশম শ্রেণীর ছাত্রী অপহরণ মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির আত্ম প্রকাশ ও নবীন বরণ দোতলা ভিসি ভবনে লিফট, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার রামগড়ে রংতুলি একাডেমি'র ঈদ নববর্ষ বৈসাবি পরবর্তী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন মালিককে চোরের ফোন ‘টাকা দাও, বাইক নাও’ রামগড়ে নিবন্ধনহীন অবৈধ দুই কোচিং সেন্টারের মালিককে ৫০০০০ টাকা জরিমানা ঠেলাঠেলিতে ব্যস্ত পাউবো-এলজিইডি, সাতক্ষীরায় নদীর পেটে যাচ্ছে সড়ক সাতক্ষীরায় শ্যামনগর পুকুর থেকে দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার শ্যামনগরে পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ৩৪ পিচ হাসুয়া উদ্ধার ফুলবাড়ীতে কৃষি অফিসের উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পাট বীজ ও সার বিতরণ

সাতক্ষীরা দেবহাটায় অনুমোদন-নিরাপত্তা ছাড়াই যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার ঝুঁকি!

সাতক্ষীরা দেবহাটায় অনুমোদন-নিরাপত্তা ছাড়াই যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার ঝুঁকি!





মোঃ আজগার আলী, সদর উপজেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা: 

শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় হাতের নাগালেই মিলছে বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডর ভর্তি তরল গ্যাস। এমনকি দোকানদারের মোবাইলে কল দিলেই মিলছে গ্যাস সিলিন্ডার। বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা।

ফায়ার সার্ভিস ও বিষ্ফোরক কর্তৃক উপজেলার এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করার কথা থাকলেও তা না থাকায় কোন নিয়ম নীতি মানছেন না ব্যবসায়ীরা। বিধি মোতাবেক ১০টির বেশি সিলেন্ডার মজুদ রেখে বিক্রির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদফতরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলেন্ডার মজুদ করা যাবে। তবে বিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী এসব সিলেন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রাঙ্গণে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। মজুদ করা স্থানের কাছাকাছি আলো বা তাপের উৎস থাকা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে চা-দোকান থেকে আরম্ভ করে ভ্যারাইটিজ স্টোরেও পাওয়া যায় এ সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল।

সরেজমিনে দেখা যায়, চায়ের দোকান, মুদি, ক্রোকারিজ ও কসমেটিকস দোকান মালিকরা পর্যন্ত খোলামেলা অবস্থায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও ব্যবহার করে আসছেন। বিশেষ করে বসুন্ধরা, যমুনা, নাভানা, পেট্রোম্যাক্স, ওমেরা, বিএম গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করছেন তারা। এছাড়া ঐ সব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ দোকানেরই তা নেই। বাজারে গ্যাসের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের মনগড়াভাবে যেখানে সেখানে সিলিন্ডারের বোতল ফেলে রেখে ব্যবসা করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই এসব দোকানে। বেশিরভাগ দোকানি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এলপি গ্যাস ব্যবহার, বিপনন ও বাজারজাত করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার বাধ্যতামূলক সংরক্ষণ করার কথা। কিন্তু বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে মজুদ করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাসবোঝাই সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে।

বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর ‘দ্য এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪’-এর ৬৯ ধারার ২ বিধিতে ‘লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ক্ষেত্রে এলপিজি মজুদ করা যাবে’ তা উল্লেখ্য আছে। বিধি অনুযায়ী, ৮টির বেশি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স নিতে হবে। একই বিধির ৭১ নং ধারায় বলা আছে, আগুন নিভানোর জন্য স্থাপনা বা মজুদাগারে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হইবে।

এ আইন অমান্য করলে ব্যবসায়ীর দুই বছর এবং অনধিক পাঁচ বছরের জেল এবং অনধিক ৫০ হাজার টাকায় দন্ডিত হবেন এবং অর্থ অনাদায়ী থাকলে অতিরিক্ত আরো ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনে পরিচালিত বিস্ফোরক অধিদপ্তর এলপিজি বা এলপিজি ব্যতীত গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার অধিকারে রাখার জন্য লাইসেন্স প্রদান করে থাকে।

কয়েকজন সাধারণ ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে জানান, সবাই বিক্রি করে তাই আমরাও বিক্রি করি। তাছাড়া কোন সমস্যা তো দেখি না। তবে আইন ও বিষ্ফোরক প্রতিরোধ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিকাংশরাই এই আইন সম্পর্কে জানেন না। আবার জানলেও তা মানতে চান না।

এ বিষয়ে দেবহাটা ফায়ার সার্ভিসের লিডার কলিম উদ্দীন জানান, অনুমোদন ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি আইনগত অপরাধ। তাছাড়া ফায়ার ইস্টিংগুয়ার রাখা বাধ্যতামূলক। গ্যাস বা বিষ্ফোরক সনদ নিতে হলে জেলা অফিসে আবেদন করতে হয়। জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করেন। আমরা উদ্ধার, অগ্নিকান্ড রোধে কাজ করি। একই সাথে সপ্তাহের শনিবার বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, এ ধরণের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির বিধান রয়েছে। সে মোতাবেক বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিস্ফোরক পরিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের বিস্ফোরক পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম জানান, জনবলসংকটের কারণে তারা উপজেলা পর্যায়ে অনিয়ন্ত্রিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি তদারকি করতে পারছেন না।


Tag
আরও খবর