পটুয়াখালীর গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে তরুনী অনশন ভোলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা লঞ্চ কর্নফুলি ৩ এ অগ্নিকান্ড আহত ০৭ সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ আজও ভালো নেই ঢাকার বাতাস! আগামী ২৯ মে লাখাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়েছে দ্বিতীয় স্ত্রী চট্টগ্রামে হিটস্ট্রোকে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু ডিপফেকের শিকার আমির খান ছুটলেন থানায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০ প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন: অর্থমন্ত্রী কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় সড়ক ও পার্ক, উদ্বোধন ২৩ এপ্রিল হিট অ্যালার্টে আরও ৭ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি ঝিনাইদহ জেলার পানি উঠছে না নলকূপে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মুসলিম কমিউনিটি মৌলভীবাজার এর ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব হানিফ উদ্দিন মাস্টার আর নেই মনপুরায় খল থেকে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার। বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী র‍্যাবের অভিযানে স্বামী হত্যায় পরকীয়া প্রেমিকসহ স্ত্রী গ্রেফতার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ২৪ ঘন্টায় আশ্রয় নিল ২৪ বিজিপি সদস্য

পবিত্র আশুরার তাৎপর্য ও কারবালার শিক্ষা

ফাইল ছবি



মুফতি মোহাম্মদ এহছানুল হক মোজাদ্দেদী: 


মহররম ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস। ইসলামী পরিভাষায় মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলে।


আশুরা আরবি ‘আশারা’ থেকে এসেছে। এর অর্থ ১০।

আর আশুরা মানে দশম। অন্য কথায় বলতে গেলে এ মাসের ১০ তারিখ ১০টি বড় বড় ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কারণেও এ তারিখকে আশুরা বলা হয়। সৃষ্টির পর থেকে আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে বিধায় এ দিনের মর্যাদা অনেক বেশি। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন যেদিন আকাশ, বাতাস, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, জান্নাত-জাহান্নাম, লাওহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্টজীবের আত্মা সৃজন করেছেন, সে দিনটি ছিল ১০ মহররম তথা আশুরার দিবস।

আবার ১০ মহররমেরই কোনো এক জুমার দিন হজরত ইসরাফিল (আ.)-এর শিঙার ফুঁৎকারে মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে নেমে আসবে মহাপ্রলয় কেয়ামত।

আশুরার দিন বা মহররমের ১০ তারিখ যেসব তাৎপর্যময় ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল, সংক্ষেপে সেগুলো হলো- ১. এ দিন আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেন। ২. আবার এ দিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। ৩. এ দিন হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) বেহেশত থেকে দুনিয়ায় নেমে আসেন।

৪. ১০ মহররম আল্লাহ নবী (সা.)-এর অসিলায় আদম ও হাওয়া (আ.)-এর তওবা কবুল করেন। ৫. এ দিনই মা হাওয়া (আ.)-এর সঙ্গে আরাফার ময়দানে বাবা আদম (আ.)-এর সাক্ষাৎ ঘটে। ৬. হজরত নুহ (আ.)-এর জাতির অবাধ্য লোকেরা আল্লাহর গজব মহাপ্লাবনে নিপতিত হওয়ার পর আল্লাহ ১০ মহররম নৌকাসহ ইমানদার বাহিনীকে জুদি পাহাড়ে অবতরণ করান। ৭. হজরত ইবরাহিম (আ.) নমরুদের অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হওয়ার ৪০ দিন পর ১০ মহররম সেখান থেকে মুক্তি লাভ করেন। ৮. হজরত আইয়ুব (আ.) ১৮ বছর কঠিন রোগ ভোগ করার পর মহররমের এ দিন আল্লাহর রহমতে সুস্থতা লাভ করেন।

৯. হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর ছেলে ইউসুফ (আ.) তাঁর ১১ ভাইয়ের ষড়যন্ত্রে কূপে পতিত হন এবং এক বণিক দলের সহায়তায় মিসরে গিয়ে হাজির হন। তারপর আল্লাহর বিশেষ কুদরতে তিনি মিসরের প্রধানমন্ত্রী হন। ১০. আবার ৪০ বছর পর ১০ মহররমে বাবার সঙ্গে ছেলের অপূর্ব মিলন হয়। ১১. হজরত ইউনুস (আ.) জাতির লোকদের প্রতি হতাশ হয়ে নদী অতিক্রম করে দেশান্তরিত হওয়ার সময় পানিতে পতিত হন এবং মাছ তাঁকে গিলে ফেলে। মাছের পেট থেকে তিনি আল্লাহর রহমতে ৪০ দিন পর মুক্তি পান ১০ মহররম। ১২. হজরত মুসা (আ.) ফেরাউনের অত্যাচারের কারণে তাঁর দলবলসহ অন্যত্র চলে যান। পথিমধ্যে নীল নদ পার হয়ে তিনি ফেরাউনের হাত থেকে আশুরার দিন মুক্তি পান। আর ফেরাউন দলবলসহ নীল নদে ডুবে মারা যায়। ১৩. হজরত ইসা (আ.)-এর জাতির লোকেরা তাঁকে শহীদ করার চেষ্টা করলে ১০ মহররম আল্লাহ তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নিয়ে মুক্তি দান করেন। ১৪. এ দিন হজরত সুলাইমান (আ.) সাময়িকভাবে হারানো রাজ্য পুনরায় ফিরে পান এবং তাঁর বাবা দাউদ (আ.)-এর ওপর জবুর কিতাব নাজিল হয় ইত্যাদি।



এ আশুরার দিনই ঘটে গেছে ইতিহাসের এক মর্মস্পর্শী ঘটনা। আর তা হলো, মহানবী (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দ হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম হোসাইন (রা.) সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে সপরিবারে অত্যন্ত নির্মমভাবে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন। সেদিন হজরত হোসাইন (রা.)-এর শোকে বিহ্বল কারবালার আকাশ গম্ভীর হয়ে মুখ ঢেকে ছিল। বাতাস হয়েছিল গতিপথ হারিয়ে নিষ্প্রাণ। গাছ-তরুলতা হুহু করে কেঁদেছিল। পাখপাখালির কলরব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ইরাকের ফোরাত নদের কলতান ক্ষণিকের জন্য থমকে গিয়েছিল। কারবালার প্রান্তরে হোসাইন (রা.) নিজের প্রাণ কোরবানি দিয়ে অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করার যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য এ আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। হোসাইন (রা.) হিকমতের পথ অবলম্বন করে ইয়াজিদের আনুগত্য স্বীকার করতে পারতেন। কিন্তু তিনি ও আহলে বাইতের অন্য সদস্যরা সে পথ অবলম্বন করেননি। তিনি যে একাই শহীদ হয়েছেন, তা নয়। তিনি এক এক করে প্রত্যেক যুবককে যুদ্ধ ক্ষেত্রে পাঠালেন। ত্যাগের আত্মদান স্বচক্ষে অবলোকন করলেন। তারপর কারবালার প্রান্তরে সর্বশেষ শহীদ হলেন হোসাইন ইবনে আলী (রা.) নিজেই। ইরাকের কারলার ময়দানে  তাঁর সঙ্গীরা ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত, অত্যাচারিত তবু সত্য তিনি বিসর্জন দেননি; কারণ তিনি জান্নাতের সরদার ইমাম হোসাইন (রা.)। তিনিই সত্যকে, দীনকে মর্যাদার উচ্চ শিখরে স্থাপন করেছেন। নিজ দেহের রক্তের শেষ বিন্দু কারবালার জমিনে উৎসর্গ করে দীন ইসলাম ও উম্মতে মুহাম্মাদি (সা.)-কে দুনিয়ার বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। প্রতি বছর আমাদের মধ্যে মহররম ফিরে এসে সেই শিক্ষার কথাই পুনর্বার স্মরণ করিয়ে দেয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আশুরার বরকত ও কারবালার শিক্ষা অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আহলে বাইত (সা.)-এর রুহানি সন্তুষ্টি আল্লাহ আমাদের নসিব করুন।


লেখক : খতিব, মণিপুর বাইতুল আশরাফ (মাইকওয়ালা) জামে মসজিদ মিরপুর, ঢাকা

আরও খবর


66234d5d8b2f1-200424110637.webp
আজও ভালো নেই ঢাকার বাতাস!

২ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে