ইতিহাসের মুখপাত্র,সময়ের সেরা সাহসী অগ্রজ,বাঙ্গালী জাতির মুক্তির অগ্রদ্রুত। যার আদর্শ,জীবনাদর্শন,চিন্তাধারা বাংলার মাটি ও মানুষের চেতনায় মিশে একাকার। যাকে ছাড়া বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডটি নিরবিচ্ছিন্ন অসহায় নিষ্প্রাণ। যিনি বাঙ্গালি জাতির গৌরবময় অর্জনের সফল রাষ্ট্রনায়ক। তিনি বঙ্গের সারথি,তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু কৈশোরকাল থেকে আন্দোলন সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিলেন। সময়ের পরিক্রমায় হয়ে উঠেছিলেন বাংলার স্বাধীকার আন্দোলনের মুক্তির পথপ্রদর্শক। অধিকার আদায়ে জনমনে জায়গা করে নিয়েছিলেন কিশোর 'মুজিব' থেকে 'মুজিব ভাই' হিসেবে। রাজনৈতিক মতাদর্শে ঐতিহাসিক চরিত্রে উদিত হয়েছিলেন পূর্ব বাংলার প্রাণভোমর হিসেবে।জাতীয়তাবাদ,সমাজতন্ত্র,গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিতে অটল বিশ্বাসী,ঐতিহাসিক উপাদানে গঠিত তার রাজনৈতিক মতাদর্শ। বাঙ্গালি জাতির তিনিই একমাত্র নেতা,যার উদ্ধার্থ আহ্বানে সাড়া জেগেছিল জনমনে,কম্পিত হয়েছিল রাজপথ,উদিত হয়েছিল সবুজের বুকে লাল আভা।বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক এক বক্তব্যে বলেছিলেন,
"এ প্রধানমন্ত্রীত্ব আমার কাছে কাটাঁ মনে হয়। আমি যদি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারি,আমি যদি দেখি বাংলার মানুষ দুঃখী আর যদি দেখি বাংলার মানুষ পেট ভরে খায় নাই,তাহলে আমি শান্তিতে মরতে পারবো না"।
এর ভাবার্থ বৃহৎ। যে ভাবাদর্শ বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে আছে। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত যিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের কথা বলেছিলেন। নীতি ও আদর্শে ছিলেন অটুট। সেখানে বর্তমান রাজনীতির কিছু উল্টো চিত্র,নীতি না থাকলেও নেতা,টাকার ঝনঝনানিতে যোগ্যরা হয় ক্ষ্যাতা। আজ রাজনীতিতে নীতি শব্দটা উপেক্ষিত। স্বার্থনীতি সেখানে বলিষ্ঠ।
নীতির শ্রেষ্ঠ রাজনীতি,পথের শ্রেষ্ঠ রাজপথ। এই দু'য়ের সমন্বয়ে আসে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আর এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর একটি সমাজ,একটি জাতি ও একটি রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। যা বঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে উপলব্ধি করা যায়। দুঃখের বিষয় বর্তমান নেতৃত্বে থাকা কতজন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর এই আত্মত্যাগ ও সংগ্রামময় রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে জ্ঞান রাখে! এখানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিঃসন্দেহে উপেক্ষিত।
পিছনে ফেরা যাক,
১৯৭১ যুদ্ধ পরবর্তী সময় যখন বঙ্গবন্ধু যুদ্ধিবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে ব্যস্ত,তখন একদল উগ্রপন্থী,ইতিহাস বিকৃত অবচেতন ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির উদয় হয়,যারা বাঙ্গালি জাতির বিশ্বাসে আঘাত হানে। তারা বঙ্গবন্ধুকে ব্যঙ্গ করে বলতে শুরু করে,"রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দিবো কিন্তু নিজের শরীর থেকে এক ফোঁটাও নয়"। এর থেকে বুঝা যায় বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই ইতিহাস বিকৃতের উত্থান হয়েছিল। যারা রাজনৈতিক অজ্ঞতার কতিপয় বিপথগামীতার দিকে ধাবিত হয়েছিল। অপরাজনীতির সংকটময় আঁধার তাদের গ্রাস করে নিয়েছিল। যততথ অন্ধকারে ঢিল মেরে রাজনীতিতে ইচ্ছাকৃত অস্থির পরিবেশ তৈরি করতে তারা বিকৃতভাষ্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিল।
যার পরবর্তীতে,প্রতিহিংসার আদৌলে গঠিত উগ্রপন্থী,শত্রুভাবাপূর্ন অপশক্তির কড়ুগ গ্রাসের কবলে পড়ে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হয়েছিলেন। রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িটি। আজও সেই বাড়িটি বাঙ্গালি জাতির চোখের কোণে ভিজে উঠা এক ফোঁটা জলের অসহায়ত্বের শেকড়। যেখানে আজও প্রতিধ্বনিত হয়,
"আমি বাঙালি,আমি মানুষ,আমি মুসলমান। একবার মরে দুইবার মরে না"।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা রাজনীতি থেকে নীতি শব্দটা মুছে দিতে চেয়েছিল তাদের প্রেতাত্মারা এখনও রাজনীতিতে সক্রিয়। রাজনীতির ময়দানে তাঁরা মুখোশ পরিহিত। তৈল মর্দন প্রক্রিয়ায় তাঁরা এখন তবিয়ত হালে ঠিকে আছে। যথাসম্ভব এইসব অপশক্তি নির্মূল করে বঙ্গবন্ধু আদর্শের পুনর্জাগরণ করা এখন সময়ের দাবী। রাজনীতিতে নীতির হুংকার স্বচ্ছ করা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিফলিত রুপ।
বর্তমান তারুণ্যের চোখে ইতিহাস বিকৃতভাষ্যদের ঠাঁয় নাই। বর্তমান প্রজন্ম 'রাজনীতির কবি'র মতাদর্শে উজ্জীবিত। তাঁরা জনগণের অধিকার আদায়ে সকল অপশক্তি রুখতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীকে বলিষ্ঠ স্পন্দমান হিসেবে অনুমেয় করে। সকল অপশক্তি রুখে বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে বুকে লালন করে নতুন প্রেমের স্বদেশ গড়তে চাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বৈষম্যহীন সোনার বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর। তাঁরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক প্রেমিক হিসেবে রাজনৈতিক জীবনে 'জয় বাংলার' উৎকন্ঠিত ধ্বনিতে বঙ্গবন্ধুর চেতনা শক্তিকে খুঁজে বেড়ায়। তাঁরা সকল অপশক্তি রুখে দিতে জয় বাংলার বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলে,
"যদি লক্ষ্য থাকে অটুট বিশ্বাস হৃদয়ে, হবেই হবে দেখা, দেখা হবে বিজয়ে"।
লেখক: তুষার আহমেদ মূসা- শিক্ষার্থী,
সরকারি তিতুমীর কলেজ
৫ দিন ১৬ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
৬ দিন ১৬ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
১১ দিন ১ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে
১৩ দিন ৯ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
১৯ দিন ২১ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
২০ দিন ১৪ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
২১ দিন ১২ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
২২ দিন ১৩ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে