◾ রোকন কাফি
স্বাধীন বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। অর্থনীতি, অবকাঠামো, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশের এ উন্নতি বিশ্বের বিস্ময়। দুনিয়ার সব উন্নত দেশ, বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের এ উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যারা এককালে বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে আখ্যায়িত করত তারাই আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করছে। বিশ্বের প্রতিটি ফোরামে বাংলাদেশ আজ প্রশংসিত। দীর্ঘদিনের সংগ্রাম আন্দোলন শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। আর তারই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। যে কারণে বিশ্ব সভায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হয়েছে, তেমনি শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের অন্যতম এক প্রভাবশালী নেতা।
বাংলাদেশের এ উন্নয়ন, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব স্বাধীনতাবিরোধী চক্র কোনো দিন ভালোভাবে দেখেনি। তাদের সাথে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল। কোনো সময় প্রগতির কথা বলে, কোনো সময় মানবাধিকারের কথা বলে তারা দেশের উন্নয়নকে খাটো করতে চান। সময়-সুযোগ পেলেই দেশবিরোধী নানা অপ-প্রচার করেন। এ কাজে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা। যারা কথায় কথায় মানবাধিকারের কথা বলে, মৌলিক অধিকারের কথা বলে তারাই আবার এসব ভঙ্গ করে। অভিযোগ রয়েছে, তাদের একমাত্র এজেন্ডা যেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ম্লান করে দেয়া, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকার যেন তাদের কাছে সহনীয় নয়। অনির্বাচিত কোনো সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে ফায়দা লুটায়ই যেন তাদের লক্ষ্য। ওয়ান-এলাভেনের সময় আমরা তাদের মুখোশ দেখেছি। তাদের এ লক্ষ্য অর্জনে তারা তাদের বশংবদ এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীসহ বিদেশি কিছু রাষ্ট্র ও সংস্থাকে কাজে লাগাচ্ছে। অসত্য তথ্য দিয়ে তাদের টেনে আনছে।
গত ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এ পত্রিকাটির অনলাইনে একটি শিশুর ছবি দিয়ে দিনমজুরের নাম করে একটি ছবি প্রকাশ করে স্বাধীনতাকে অপমানিত করেছে। পরে এ নিয়ে একটি প্ল্যাকার্ড বানিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তীব্র সমালচনার মুখে কিছুক্ষণ পর তারা নিউজটি সামান্য সংশোধন করলেও ততক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। এ পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে আসছে। সাধারণ মানুষের ধারণা পরিকল্পিতভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য তারা এমনটি করছে। সময় সুযোগ পেলেই শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে আসছে। প্রথম আলো নামে এ পত্রিকাটি ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা বিরোধেী যে নিউজটি করেছে তা দেশের স্বাধীনতা এবং সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য ক্ষতিকর। বারবার যারা এরকম করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া অন্যায় কিছু নয়। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা বিরোধী সংবাদ পরিবেশনের দায়ে সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন সমর্থন জানিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, প্রথম আলোর এ সংবাদে একটি অবুঝ শিশুকে ব্যবহার করা হয়েছে। যার হাতে নাকি ১০ টাকা দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী বক্তব্য বের করে আনা হয়েছে। এটা কেমন সাংবাদিকতা? তারা শিশু-শ্রম, শিশু-অধিকার নিয়ে বড় বড় কথা বলে, সভা-সেমিনার করে। তাদের সাথে আবার বিদেশি কিছু সংস্থা, দেশও আছে। এদের চরিত্রটাই যেন ঐ পত্রিকার মতো সরকারের বিরোধীতা করা। একটি শিশুকে ১০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে তার মাধ্যমে স্বাধীনতাকে অপমান করা, শিশুর জীবনটাকে শঙ্কায় ফেলে দেয়া- এটাকি অমার্জনীয় অপরাধ নয়। যে সাংবাদিক এ কাজটি করেছেন, যে পত্রিকা এ নিউজ প্রকাশ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কি অপরাধ? যেখানে দেশের স্বাধীনতা নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে সেখানে রাষ্ট্র ও সরকার কি চুপ করে বসে থাকবে? সরকার চুপ থাকেনি। ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। আর এতে আমাদের সুশিল সমাজের কতিপয় ব্যক্তি এবং কথায় কথায় বাংলাদেশ নিয়ে বক্তব্য দেন এমন কিছু বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থা একে ভালো চোখে দেখেনি। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কটাক্ষ করলেও আমরা চুপ করে বসে থাকবো এমনটাই তারা চায়। কিন্তু রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ এটা গ্রহণ করতে পারবে না ও করবেও না। এ কারণেই পত্রিকার সংবাদটি নিয়ে মামলা হয়েছে। এটা এখন আদালতের বিষয়। কারণ স্বাধীন সার্বভৌম এ বাংলাদেশে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
সবশেষে বলতে চাই, পরিবারের অনুমতি ছাড়া একটি অবুঝ শিশুর ছবি ব্যবহার করে স্বাধীনতাবিরোধী এ নিউজটি প্রকাশ করা ভয়াবহ অপরাধের শামিল। এটা কখনো সাংবাদিকতা হতে পারে না, অপসাংবাদিকতা। যেসব বিদেশি দেশ কথায় কথায় বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন, দোষ খুঁজেন, বাংলাদেশের সমালোচনা করেন সেই সব দেশে যদি এমন অপরাধ করা হয় তখন তাদের মুখে কোনো শব্দ দেখি না। তারা কি ভেবে দেখেছেন, একটি অবুঝ শিশুর হাতে সামান্য অর্থ দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী যে সংবাদটি পরিবেশন করা হয়, এমনটি যদি তাদের দেশে হতো তাহলে তাদের আইনে কি ব্যবস্থা নেয়া হতো না। তখন কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হতো না। আসলে এরা জ্ঞানপাপী। তাদের দেশের মানবাধিকারের কি অবস্থা, গণমাধ্যমের কি অবস্থা তাতো আমরা বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে দেখি। খুনোখুনি, বন্দুকবাজি অনেক উন্নত দেশে এখন নিত্যদিনের ঘটনা। তারা সেসব নিয়ে কথা না বলে যত বাক-স্বাধীনতার কথা বলে শুধু বাংলাদেশের জন্য। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। দেশ-প্রেমিক জনগণ ও সরকারকে আরও সচেতন হতে হবে।
২ দিন ৭ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৪ দিন ১৫ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
১১ দিন ৩ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১১ দিন ২০ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১২ দিন ১৮ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে
১৩ দিন ১৯ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১৭ দিন ১ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
১৭ দিন ১৫ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে