আমি মোঃ সাইফুল্লাহ। আমি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ULAB) এ কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলী (CSE) বিভাগের ১১ সেমিস্টারের একজন ছাত্র।
যখন কোটা নিয়ে পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতেছিলো তখন আমার কাছে খারাপ লাগতেছিলো যে ওরা একা এগুলো করতেছে আমরা কেন ওদের পাশে নাই। আমাদের কোটা না প্রয়োজন হইলেও আমরা ও তো শিক্ষার্থী সে হিসেবেও তো আমাদের উচিত ওদের পাশে দাঁড়ানো। এই ভাবা পর্যন্ত ই সমাপ্ত ছিলো। যখন দেখলাম এই শান্তিপূর্ন আন্দোলনে আক্রমণ করা হচ্ছিলো ছাত্রলীগ দিয়ে ছাত্রদের উপর এবং অনেক শিক্ষার্থীর আহত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে গেলো তখন সহ্য করতে পারতেছিলাম না। আমার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করতে থাকলাম আমাদের ভার্সিটি থেকে কেন ওদের পাশে দাঁড়ায় নাই অন্যান্য ভার্সিটি তো ওদের পাশে দাড়াচ্ছে অলরেডি।
তারপর দেখলাম ১৫ তারিখ রাতেই আমাদের ভার্সিটির কিছু সিনিয়র/জুনিয়র ভাইবোনেরা মিলে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করেছে ক্যাম্পাসের সামনে ১৬ জুলাই সকাল ১১ টা সেদিন অংশগ্রহণ করেছি আমি এবং আমার কিছু ফ্রেন্ডস মিলে। আন্দোলন শেষ করে বাসায় যাওয়ার পরে আমার কাছে হুমকিমূলক কল আসে, মেসেজ আসে। এবং মোহাম্মদপুর এড়িয়ার ছাত্রলীগের কর্মীরা আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের কোপানোর হুমকি দেয় তাদের একটি ভয়েস মেসেজ ভাইরাল হয় যেটায় তাদের কথা ছিলো যাকে সামনে পাবি স্কুল,কলেজ ইউনিভার্সিটির যাকে পাবি তাকেই কোপাবি।
বাসায় একা থাকার কারনে প্রচুর ভয়ে পাচ্ছিলাম যেহেতু আমার রুমমেট ও বাসায় ছিলো না। এদিকে আমার বিল্ডিং এর কিছু পোলাপান আমার দিকে নজর রাখতেছিলো। বাসায় বাজার ছিলো না বাজার করতে যেতে ভয় পেয়ে ২দিন প্রায় না খেয়েই ছিলাম। যাইহোক ১৬ তারিখ আমাদের আন্দোলন হয়েছিলো। তো ১৭ তারিখ সকালে আমার ভার্সিটির ইমেইল হ্যাক করে আমাকে উল্টা পালটা বলে আমাকে ব্লাকমেইল করে আমার কাছে ১২৮০ USD চাওয়া হয়। একদিকে সরাসরি হুমকি আরেকদিকে হ্যাক। ভয়ে পেয়ে গেলাম।
তারপর ১৮ তারিখ যেদিন শাট-ডাউন ঘোষনা করা হয় সেদিন খুব সকালে আনুমানিক ৫ টায় আমার রুম ছাড়তে বাধ্য হই। আমি আশ্রয় নিলাম আমার কাজিনের বাসায় মিরপুর ১১ তে। কিন্তু তাতেও আমাকে থ্রেট দেওয়া বন্ধ হচ্ছিলো না ২৬ জুলাই আমাকে পুলিশ আটকিয়েছিলো রাস্তায় কোনোমতে বের হয়ে আসতে পেরেছি।
তারপর ওইদিন রাতেই ঢাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হলাম। কারন আমি চাইনি আমার কাজিন ও তার হাজবেন্ড আমার জন্য কোনো বিপদে পরুক। ও আরেকটা কথা আমার ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার ও অনেক চেষ্টা চলেছে। আমার ফোন এর অপারেটিং সিস্টেম হ্যাক করে আমার ফোন ক্যামেরা এক্সেস নিয়েছে। এটা হ্যাকার এর কথা।
Tag