নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ কালিগঞ্জ কৃষ্ণনগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে গাঁজা বিক্রেতা ও ক্রেতার জেল-জরিমানা ফতুল্লার কাশীপুরে পিস্তলের গুলিতে পাভেল হত্যা মামলার প্রধান আসামী রায়হান বাবু গ্রেফতার ভর্তিচ্ছুদের পাশে কুবি ছাত্রদল গৃহকর্মী-যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ জাবিপ্রবি ফটকে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, সর্বত্র বিএনপির ব্যানার রায়পুর রিপোর্টার্স ইউনিটির এপ্রিল মাসের সভা সম্পন্ন পাঁচবিবিতে ভূয়া ডিবি পুলিশের পরিচয়ে চাঁদা দাবি গ্রেফতার-২ কবি ও সাংবাদিক বিল্লাল হাওলাদারকে সুনামগঞ্জে সংবর্ধনা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাঁশের ঝোপে বিপুল পরিমাণে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার রায়গঞ্জে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ইয়াবা কারবারি ও গাঁজাসহ গ্রেফতার-৮ আশাশুনি সরকারি কলেজে ৬ শিক্ষককে এডহক নিয়োগ এডভোকেট শহিদুল ইসলাম ৩ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মনোনীত লালপুরে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পথচারী নিহত সর্বস্তরের শিক্ষা জাতীয়করণ চাই শিরোনামে যশোরে জেলা শিক্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল সিরাজগঞ্জে স্থাপনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন বরিশালে মুফতি ফয়জুল করিমকে বৈধ মেয়র হিসাবে ঘোষনা করার দাবীতে গণমিছিল জয়পুরহাটে স্বর্ণের দোকানে তল্লাশী করতে গিয়ে দুই ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক ইসলামপুরে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৩ মাদক কারবারী আটক

কাজের বুয়ার বিরুদ্ধে বাড়ী মালিককে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

কাজের বুয়ার বিরুদ্ধে বাড়ী মালিককে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ




মোঃ আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:  ‌

সাতক্ষীরা সদরের দক্ষিণ ফিংড়ী গ্রামে রাফিজা খাতুন নামের এক কাজের বুয়ার বিরুদ্ধে বাড়ীর মালিককে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ২ টায় সাতক্ষীরা সদর পুলিশ বাড়ী মালিক রফিকুল ইসলামকে তার নিজ বাড়ী থেকে আটক করেন। পরবর্তীতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের উল্লেখিত ধারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।


এসময় মামলার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি থানাতে স্ট্রোক করেন ও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশের সহায়তায় তাকে জরুরী চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।  বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ সকল তথ্য গণমাধ্যমকে জানান রফিকুল ইসলামের পরিবার।


মামলার বাদি হলেন, সাতক্ষীরা সদরের দক্ষিণ ফিংড়ী গ্রামের রশিদ ঢালীর স্ত্রী রাফিজা খাতুন (২৮), অপরদিকে মামলা বিবাদী হলেন, একই এলাকার মৃত এরফান নায়েবের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৫)।


ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই মামলার উৎপত্তি হয়েছে। যে অভিযোগে মামলা করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পারিবারিক সম্মান ও ঐতিহ্য নষ্ট করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ এনে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। অপরদিকে, বাদির কথার মধ্য রয়েছে নানাধরনের অসংলগ্নতা। মামলাটি যে মিথ্যা ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হয়েছে সেটার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।


মামলার বিবরণীতে জানা যায়, রাফিজা খাতুন দীর্ঘদিন যাবত রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে বুয়ার কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রফিকুল ইসলাম তাকে নানাধরনের প্রলোভন দেখাতেন। তার ধারাবাহীকতায় শুক্রবার(১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কাজে গেলে ঘরের দরজা বন্ধ করে বাদির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে বাদির ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করেন বিবাদী। একই ভাবে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বাদিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বিবাদী। এ সকল বিষয় উল্লেখ্য করে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধণী ধারায় রাফিজা খাতুন মামলা দায়ের করেন।


এদিকে, রফিকুল ইসলামের বড় মেয়ে সোহেলী তামান্না বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, মামলার বাদি রাফিজা খাতুন আমার বাবার মামাতো ভাইয়ের স্ত্রী। রাফিজা খাতুনের বাড়ী আমাদের বাড়ীর পাশেই। রাফিজা খাতুন আমার বাবার বাড়িতে কাজ করতে তবে তিনি ছয় মাস আগে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। রাফিজা খাতুনের পরিবারবর্গের সাথে আমার বাবার দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে তাদের স্বার্থসিদ্ধি উদ্ধারের জন্য আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র মূলক ধর্ষণ মামলা দিয়েছে। মামলার কোন ভিত্তি নেই। আমার বাবা একজন সম্মানী ব্যক্তি এলাকার সকলে তাকে সম্মান করেন এবং এলাকার যে কোন বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করে সমাধান করেন। থানাতে গিয়ে যখন মামলার বিষয়টি জানতে পারে তখন আমার বাবার স্ট্রোক করেন। পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় তাকে খুলনা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এখনো তিনি অসুস্থ। মূলত সমাজের কাছে আমাদের সকলকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এবং তাদের স্বার্থসিদ্ধি উদ্ধারের জন্য এই কাজটি করেছেন।


তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন লোক মারফতে আমাদেরকে প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে তাদের কাঙ্খিত অর্থ দিলে মামলা প্রত্যাহার করে নিবেন। তবে আমরা সেটা করব না কারণ যেহেতু আমাদের সম্মানহানি করেছে আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইনের মাধ্যমে আমরা বাদীর শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই।


ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের ছেলে রেদওয়ান ইসলাম বলেন, আমার দাদা ছিলেন অত্র এলাকার মাতব্বর তৎকালীন সময়ে তিনি এই এলাকার সকল মানুষের সুযোগ সুবিধা দেখাশোনা করতেন। সেই থেকে আমাদের পারিবারিক একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সমাজের কাছে। রাফিজা খাতুন আমাদের আত্মীয় হন তিনি যে মামলাটি করেছেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার বাবাসহ আমাদের সকলের সম্মানহানি করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলার উৎপত্তি করেছেন। সমাজে আমাদেরকে খাটো করার জন্য এ পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্য ঘটনা সামনে নিয়ে আসুক, দোষী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হোক এবং এ ধরনের মিথ্যা বিভ্রান্তিকর হয়রানিমূলক মামলা করার দায়ে বাদীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক যাতে করে পরবর্তীতে এমন হয়রানিমূলক মামলার শিকার যেন কেউ না হয়।


মামলার বাদী রাফিজা খাতুন বলেন, রফিকুল ইসলামের বাড়িতে তিনি দীর্ঘদিন যাবত কাজ করেন কাজের ফাঁকে তাকে নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রসিদ্ধ করে ধর্ষণ করে আসছিলেন। গত মাসের ১৫ তারিখ ও ২১ তারিখ তার সাথে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একই কাজ করা হয়।


রাফিজা খাতুনের কাছে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন করেন ছয় মাস আগে কাজ ছেড়ে দিলে গত মাসের ১৫ তারিখ ও ২১ তারিখ কিভাবে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে কাজ করলেন? এই প্রশ্নে রাফিজা খাতুন কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।


এদিকে, মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা ২১ শে সেপ্টেম্বর সকাল ৮ টার সময় ঐ এলাকার মসজিদসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ঐ সময় রফিকুল ইসলাম তার ছেলে রেদওয়ানকে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন এইচএসসির টেস্ট পরীক্ষা দিতে। তাহলে একই সময়ে কিভাবে রাফিজা খাতুনের সাথে তার সমন্বয় হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব মিলছেনা কোথাও।


২১ শে সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রফিকুল ইসলাম তার ছেলে রেদোয়ানকে এইচএসসির টেস্ট পরীক্ষা দিতে নিয়ে যাচ্ছেন। পরীক্ষা শেষে বেলা ২ টার দিকে ছেলেকে সঙ্গে করে নিয়ে বাড়িতে ফিরছেন রফিকুল ইসলাম। ঐ এলাকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে একই ঘটনা নজরে আসে গণমাধ্যমের।


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) হাসান রহমান জানান, মামলার বাদী ও বিবাদীর বাড়িতে গিয়ে মামলার বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে। মামলার বাদি রাফিজা খাতুনের মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট হাতে পেতে কয়েক দিন সময় লাগবে। এখনো তদন্ত চলমান রয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কোন সঠিক তথ্য জানানো সম্ভব নয়।


মিথ্যা মামলা করে প্রতিবেশীদের রোষানালে পড়েছেন রাফিজা খাতুন ও তার স্বামী রশিদ ঢালী। ইতোমধ্যে তারা ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের শরণাপন্ন হয়েছেন বিষয়টি মীমাংসার জন্য।

চেয়ারম্যান জানান, পারিবারিক গন্ডগোলকে কেন্দ্র করে মামলা হয়েছে। বাদী পক্ষ আমার কাছে এসেছিল মামলাটি স্থানীয়ভাবে বসাবসি করে মীমাংসার জন্য। তাদের মামলা করা ঠিক হয়নি বলে ভুল স্বীকার করেছে। বিষয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে ধর্ষণের বিষয়টি কোন সত্যতা নেই।


Tag
আরও খবর