নানা সমস্যায় জর্জরিত ঈশ্বরগঞ্জ ৫০ শয্যার হাসপাতালটি যেন নিজেই রোগী। সমস্যা সত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঈশ্বরগঞ্জ পার্শ্ববর্তী নান্দাইল, গৌরিপুর ও কেন্দুয়া উপজেলার কিছু অংশের মানুষের সাধারণ স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে। উপজেলার সাধারণ মানুষের ভরসার স্থল হলেও বিভিন্ন সমস্যার কারনে সাধারণ মানুষের সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। বহিঃবিভাগে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় একই রুমে বসে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন কয়েকজন চিকিৎসক। বাহিরে প্রচন্ড ভির ঠেলে ডাক্তার দেখানোর জন্য উগ্রিব হয়ে রয়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, চক্ষু, চর্ম ও যৌন, ইএনটির কনসালটেন্ট, জুনিয়র কনসালটেন্ট ৩ জন এর পদ খালি রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। অন্যদিকে হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ৩ জন ক্লিনার ও ২ জন ওয়ার্ডবয়ের পদ শুন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়াও অফিসের বিভিন্ন পদ শুন্য থাকায় প্রশাসনিক কাজ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষায় সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দেয়া জরুরি বলে জানান অফিস প্রধান। হাসপাতালের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন পুরাতন হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় ঝুলে থাকায় আতংকে থাকেন সেবা দাতা গ্রহীতারা। হাসপাতালের কোয়ার্টার গুলি আধুনিক মানের না হওয়ায় ডাক্তাররা সেসব স্থানে বসবাসের আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। হাসপাতালের হিসাব অনুযায়ি গত ফেব্রুয়ারি মাসে বহিঃবিভাগে রোগী সেবা নিয়েছেন ৭ হাজার ৩৯জন, ইমার্জেন্সি বিভাগে ৩ হাজার ৭শত ৫৯জন ও ইনডোরে ভর্তি হয়েছেন ৬শ ২২ জন। সিরাজারিয়ান ব্যবস্থা চালু থাকায় ৮টি সিজার ও ৬৯টি নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। একই সময়ে মেজর সার্জারি হয়েছে ১১টি। নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবে রয়েছে হাসপাতালে ওষুধ না পাওয়া এবং দালালের দৌরাত্ম। প্রতিনিয়তই রোগীরা বিরম্বনার শিকার হচ্ছেন হাসপাতালের অটো স্ট্যান্ডের জন্য। বাউন্ডারী উঁচু না থাকার ফলে বিকেলের পর থেকে বাড়তে থাকে বখাটেদের উৎপাত। সেপ্টিক ট্যাংকির অবস্থা এতই খারাপ যে কয়েকদিন পর পর ময়লা বের হয়ে যাওয়ার কারনে দুর্গন্ধে হাসপাতাল এলাকায় চলাফেরা দায় হয়ে যায়। এতসব সমস্যার পর সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। হাসপাতালের এতসব সমস্যার সাথে প্রতিনিয়ত যুক্ত বিভিন্ন অভিযোগ। সেবা প্রত্যাশীরা জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইমার্জেন্সি বিভাগে রোগী আসার সাথে সাথে সামান্য পরিমাণ চিকিৎনা সেবা দেয়ার পর ময়মনসিংহ মেডিকেলে কলেজে রেফার্ড করা হয় যার ফলে ইনডোরে প্রায় সময়ই বেড খালি পড়ে থাকে। একারনে রোগীদের ঝামেলায় পড়তে হয়ে ময়মনসিংহে গিয়ে। সবচেয়ে বেশি ঝামেলায় পড়তে হয় দালালদের নিয়ে। বেলা দুইটার পর রোগী যারা আসেন তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করার জন্য বাইরের ডায়াগোনিষ্টিক সেন্টারে প্রেরণ করে থাকেন।
হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী জানান, রোগীদের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি। সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমরা সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। রোগীর অবস্থা ক্রিটিক্যাল হলেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে আরো আন্তরিক হওয়ার জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ২টার পর আসা সাধারণ রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, জনবল কম থাকায় এসময় ল্যাব খোলা রাখা সম্ভব হয় না তাই এই সময়ে সাধারণ রোগীদের হাসপাতালে আসা ঠিক নয়। তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ ফাঁকা থাকায় প্রশাসনিক এবং হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।
১১ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
১৪ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১৪ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১৪ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে