জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার এক আসামির স্ত্রী ছদ্মবেশে নাদিমের বাসায় ঢুকে মামলা প্রত্যাহার করতে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে। পরে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ওই বাসায় গিয়ে ওই দুই নারীকে স্ব-স্ব বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
আজ শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় বকশীগঞ্জ পৌর শহরের কাচারিপাড়া এলাকায় সাংবাদিক নাদিমের বাসায় এই ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কালো বোরকা পরিহিত মুখোশধারী মধ্য বয়সী দুই নারী হত্যাকাণ্ডে শিকার সাংবাদিক নাদিমের বাসায় প্রবেশ করে। এসময় বাসায় ছিলো সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগমসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন স্বজন। তাদেরকে ওই নারী দূর সম্পর্কে আত্মীয় পরিচয় দিচ্ছিলো। ওই দুই নারীর কথা-বার্তায় সন্দেহের সৃষ্টি হয় নাদিমের পরিবারের লোকজনের। এক পর্যায়ে তারা ওই দুই নারীর পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হন। তাদের একজন নাদিম হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৭ নম্বর আসামি গোলাম কিবরিয়া সুমনের স্ত্রী রুপালি বেগম (৩০) এবং অপরজন স্থানীয় বাসিন্দা কাজলী বেগম (৫০)। আসামি সুমন পৌর শহরের উত্তর বাজার এলাকার বাসিন্দা আনার আলীর ছেলে। আসামি সুমন নাদিম হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর কয়েক মাস আগে জামিনে মুক্তি লাভ করেছে।
নিহত সাংবাদিক নাদিমের মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত দৈনিক দেশচিত্রকে বলেন, 'কাজলী বেগম নামে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি গোলাম কিবরিয়া সুমনের স্ত্রী রুপালি বেগম ছদ্মবেশে আমাদের বাসায় এসেছিল। আমরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা দূর সম্পর্কে আত্মীয় হন মর্মে জানান। প্রথমে তারা আমাদেরকে হত্যা মামলা প্রত্যাহার করতে বলেন। পরে আসামি সুমনের নাম চার্জশিটে না দিতে দাবি করে তারা। এতে তাদের ওপর আমাদের সন্দেহ হয়। মুখোশ পড়ে থাকায় প্রথমে আমরা তাদের চিনতে পারিনি। বিষয়টি বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশকে জানিয়েছি।
সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম দৈনিক দেশচিত্রকে বলেন, 'আসামি সুমনের স্ত্রী রুপালি বেগম ছদ্মবেশে কাজলী বেগম নামে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় এসেছিলো। নাদিম হত্যা মামলা প্রত্যাহার করতে আমাদের চাপ দিয়েছে তারা। আমাদের বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে কি না, সেটা তারা খোঁজখবর নেয়। বিষয়টি জানালে কয়েকজন সাংবাদিক এবং মঞ্জু মেম্বার বাসায় এসে ওই দুই নারীকে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুর ইসলাম মঞ্জু দৈনিক দেশচিত্রকে বলেন, 'খবর পেয়ে সাংবাদিক নাদিমের বাসায় গিয়ে আসামি সুমনের স্ত্রীসহ দুই নারীকে স্ব-স্ব বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। মূলত মামলার চার্জশিট থেকে সুমনের নাম বাদ দেওয়ার জন্য কথা বলতে তারা ওই বাসায় গিয়ে ছিলো।'
বকশীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান দৈনিক দেশচিত্রকে বলেন, 'খবর পেয়ে সাংবাদিক নাদিমের বাসায় পুলিশ পাঠিয়েছি। জানতে পেরেছি, আসামি সুমনের স্ত্রী ওই বাসায় গিয়ে তাঁর স্বামীর নাম নাদিম হত্যা মামলার চার্জশিটে না দিতে পরিবারের লোকজনের কাছে কাকুতি-মিনতি করেছে। পরে পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়ে ওই বাসা থেকে চলে গেছে তারা। বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
উল্লেখ্য,বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি এবং একাত্তর টেলিভিশন ও মানবজমিন পত্রিকার বকশীগঞ্জ সংবাদদাতা সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম ২০২৩ সালের বছরের ১৪ জুন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের জের ধরে হামলার শিকার হয়ে ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অবস্থায় পরদিন ১৫ জুন মারা যায়। এনিয়ে ১৮ জুন সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ২২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করা হয়।
১ দিন ১ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
১ দিন ৯ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
১ দিন ২২ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
২ দিন ৩০ মিনিট আগে
২ দিন ৩৬ মিনিট আগে
২ দিন ৯ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
২ দিন ১০ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
২ দিন ১০ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে