বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুস শহীদকে এক দিনের রিমান্ডে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানায় নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কারাগার থেকে এক দিনের রিমান্ডের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। জেল সুপার মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে নেওয়া হবে। আদালত থেকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হবে।
গত বুধবার বেলা ১১টায় মৌলভীবাজার আদালতে সাবেক কৃষিমন্ত্রীকে হাজির করা হয়। সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মিছবাহুর রহমান তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৪ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে যুবদল নেতা আব্দুল আহাদ বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। ২৪ নভেম্বর সাবেক এই কৃষিমন্ত্রীকে ঢাকা কারাগার থেকে মৌলভীবাজার কারাগারে হস্তান্তর করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ধা আনুমানিক ৬টার সময় শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২ নম্বর ভুনবীর ইউনিয়নের ভুজপুর বাজারে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মুজিবুর রহমানের (হাজী মুজিব) নির্বাচনী পথসভা চলাকালীন সময়ে মো. আব্দুস শহীদ ও ভানু লাল রায়ের নির্দেশে অন্যান্য আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ দা, লাঠি, রড, ককটেল, ইত্যাদি নিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পথসভা ঘেরাওপূর্বক এলোপাথারি মারপিটসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। একপর্যায়ে কয়েকজন আসামী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজী মুজিবকে খুন করার উদ্দেশ্যে আঘাত করার জন্য এগিয়ে আসলে কয়েকজন সাক্ষী তাকে ঘেরাও করে প্রাণে রক্ষা করেন। এ সময় আসামীগণের এলোপাথারি আঘাতে সাক্ষীগণ আঘাতপ্রাপ্ত হন। তখন কয়েকজন আসামি হাজী মুজিবের ব্যবহৃত গাড়ী ভাংচুর করে আনুমানিক তিন লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। আসামিরা ঘটনাস্থলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম পূর্বক এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
এ বিষয়ে গত ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন ২ নম্বর ভুনবীর ইউনিয়নের আলীসারকুল গ্রামের মো. মাক্কু মিয়ার ছেলে ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল ভুনবীর ইউনিয়ন শাখার সদস্যসচিব মো. আব্দুল আহাদ। মামলায় তিনি সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদকে প্রধান আসামী করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৫৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো ১০০-১৫০ জনকে আসামি করেছেন। মামলার এজহারে বাদি উল্লেখ করেন ঘটনার পর ফ্যাসিবাদী সরকারের কাছে তাদের জান-মালের নিরাপত্তা না থাকায় এবং পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তৎকালীন সময়ে মামলা দায়ের করতে পারেননি। বর্তমানে জনগণের সরকার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি এ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. আব্দুস শহীদ ছাড়া তার তিন ভাই মোছাদ্দেক হোসেন মানিক, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল ও কমলগঞ্জের ১ নম্বর রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুলকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া উল্লেখযোগ্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ভানু লাল রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব বেভুল, সহসভাপতি ও ৭ নম্বর রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জী, সাধারণ সম্পাদক জগৎজ্যোতি ধর শুভ্র, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনাম হোসেন চৌধুরী মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ছালিক আহমদ ও বেলায়েত হোসেন, ৬ নম্বর আশীদ্রোন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনেন্দ্র প্রসাদ বর্ধন জহর, ৮ নম্বর কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) সংসদীয় আসন থেকে সাত বারের সংসদ সদস্য মো. আব্দুস শহীদকে গত ৩ অক্টোবর রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঢাকা ছাড়াও মৌলভীবাজার জেলায় তার বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে চারটি পৃথক মামলা দায়ের হয়।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মৌলভীবাজার কারাগার থেকে থানায় রিমান্ডে আনা হয়েছে। যুবদল নেতার একটি মামলায় এক দিনের রিমান্ডে আনা হয়।
৪ দিন ৫ মিনিট আগে
৪ দিন ১৪ মিনিট আগে
৪ দিন ২২ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
৪ দিন ২২ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
৫ দিন ১২ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
৫ দিন ১৬ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
৬ দিন ১০ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৬ দিন ১২ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে