মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বড়ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা জুয়েল মিয়ার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তার নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী চক্র সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে এ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকায় বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুইসগেট, সেতু এবং দিনারপুর চা বাগানের প্লান্টেশন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে সুইসগেটটির পেছনের অংশ দেবে গেছে এবং চা বাগানের একাংশ ছড়ায় নিমজ্জিত হয়েছে। এলাকাবাসী ও কৃষকরা বলছেন, সুইসগেট ভেঙে গেলে ২০ থেকে ২৫ হাজার কৃষক চাষাবাদ করতে পারবেন না, যা তাদের জীবিকা বিপন্ন করবে।
বড়ছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক শেখ সবুজ আলম বলেন, ‘২০০৬-০৭ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ এই এলাকার সাতটি গ্রামের ২০-২৫ হাজার মানুষের শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানির উৎস হিসেবে এই বড়ছড়া সুইসগেটটি নির্মাণ করে। এর ফলে এই এলাকায় প্রান্তিক কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে সেখানে চাষাবাদ করে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অথচ এই বালু দস্যুদের কারণে আমরা আজ ক্ষতিগ্রস্থ। ২০১৭ সাল থেকে আমরা এই ছড়া থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য সরকারের উচ্চ পদস্থ বিভিন্ন মহলে লেখালেখি করে আসছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারনে উনারা আমাদের সেই দাবিটি আমলে নেয়নি। আওয়ামী রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় তারা দীর্ঘদিন যাবত বালু তুলে যাচ্ছে। আমাদের সুইসগেটটি যেকোন সময় উল্টে যেতে পারে। এটি উল্টে গেলে ২০-২৫ হাজার কৃষক চাষাবাদ করতে পারবে না। ফলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাবে। তাই প্রশাসনের কাছে দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এলাকার বড়ছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. মছদ্দর আলী জানান, তারা উচ্চ আদালতে রিট করলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে গ্রামের অভ্যন্তরীণ সড়ক ও চা বাগানের মেঠোপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রাক ও ট্র্যাক্টরের ভারে সড়কগুলো ভেঙে পড়ছে। দিনারপুর চা বাগানের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক মীর জহির উদ্দিন বাবর বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বাগানের রাস্তা এবং প্লান্টেশন এলাকা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক শফিক মিয়া ও ইসহাক মিয়া জানান, বালু উত্তোলনের ফলে সুইসগেট ভেঙে গেলে তাদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে হাজারো পরিবার দুর্ভোগে পড়বে।
যুবলীগ নেতা জুয়েল মিয়া দাবি করেছেন, তিনি বৈধভাবে বড়ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের লিজ নিয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বালু উত্তোলনের বিষয়ে খনিজ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
এলাকার সচেতন মহল এবং কৃষকরা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের জীবন-জীবিকা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করবে।
১২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১৬ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে
১৬ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে