অবশেষে ওয়ানডেকেও বিদায় বলে দিলেন টাইগার তারকা ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি থেকে আগেই অবসর নিয়েছিলেন তিনি। ওয়ানডে ও টেস্টটাই খেলতেন কেবল। সম্প্রতি ওয়ানডেতে তেমন ফর্মেও ছিলেন না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুই ম্যাচে করেছেন মাত্র ২ রান। তা নিয়ে নানা সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন মুশফিক। এমনকি ওয়ানডে থেকে তার অবসর নিয়েও চলছিল জল্পনা।
গতকাল বুধবার (৫ মার্চ) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক। তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমি ফরম্যাট থেকে অবসর ঘোষণা করছি। আলহামদুলিল্লাহ সব কিছুর জন্য। যদিও বৈশ্বিকভাবে চিন্তা করলে আমাদের অর্জন সীমিত হতে পারে। তবে এ কথা নিশ্চিত যে, যখনই আমি আমার দেশের জন্য মাঠে নামতাম, আমি নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে শতভাগের বেশি দিয়ে খেলতাম।’
১৯ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক মুশফিক। দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসটাই হয়ত মুশফিক পূর্ববর্তী আর মুশফিক– এমন দুটো অধ্যায়ে ভাগ করে নেয়া যেতে পারে।
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে পাঁচ ওয়ানডে খেলার জন্য বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভুক্ত হন মুশি। অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা এবং সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি স্কোয়াডের তিন অনক্যাপড ওয়ানডে খেলোয়াড়ের একজন ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেটে মুশফিকের অধ্যায়টা এখন স্রেফ অতীত।
টাইগার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটের ক্যারিয়ারটা বেশ রঙিন। ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে মুশফিক খেলেছেন ২৭৪টি ওয়ানডে। ২৫৬ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি ফিফটি হাঁকিয়েছেন মুশফিক। ৭৯.৭০ স্ট্রাইকরেটে ৩৬.৪২ গড়ে ৭ হাজার ৭৯৫ রান করেছেন। বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। শীর্ষে তামিম ইকবাল, ২৪৩ ম্যাচে ২৪০ ইনিংসে ৮ হাজার ৩৫৭ রান করেছেন সাবেক টাইগার ওপেনার।
বাংলাদেশের জার্সিতে ১৯ বছর ছিলেন ওয়ানডে ফরম্যাটের অংশ হয়ে। বিদায় নিয়েছেন দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলার খেলোয়াড় হিসেবে। আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার এই ক্যারিয়ার ৮ম দীর্ঘতম। তার চেয়ে লম্বা ক্যারিয়ার আছে শচীন টেন্ডুলকার, জাভেদ মিয়াঁদাদ, সনৎ জয়াসুরিয়া, অরবিন্দ ডি সিলভা, ক্রিস গেইল, শন উইলিয়ামস এবং শোয়েব মালিকের।
মুশফিক ওয়ানডেতে ২৭৪ ম্যাচের মধ্যে ২৭২টিতে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন। সবমিলিয়ে ২৯৭টি আউটে (রান আউট ছাড়া) অবদান রেখেছেন। ২৪১টি ক্যাচ এবং ৫৬টি স্টাম্পিং করেন টাইগার তারকা। ওয়ানডের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি স্টাম্পিং করেছেন আর চার জন। মহেন্দ্র সিং ধোনি, মার্ক বাউচার, কুমার সাঙ্গাকারা, অ্যাডাম গিলক্রিস্টের। পঞ্চম নামটা মুশফিকের।
ওয়ানডেতে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি রানের দিক থেকে মুশফিকের অবস্থান দুইয়ে। মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে ওয়ানডেতে করেছেন ২ হাজার ৬৮৪ রান। এই তালিকায় শীর্ষে আছে তামিম ইকবাল। মিরপুরেই যার রান ২ হাজার ৮৯৭।
দুবাইয়ে সেই ১৪৪ রান কিংবা শচীনের শততম শতকের দিনে মুশফিকের সেই ক্যামিও বা ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে উইনিং শট, বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে মিস্টার ডিপেন্ডেবল নাম পাওয়া মুশফিকের বহু কীর্তিই জায়গা করে নিয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।উইকেটরক্ষক মুশফিকের নামের পাশে আছে ২৯৭টি ডিসমিসাল। ওয়ানডের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি ডিসমিসাল আছে আর মোটে ৪ জনের। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, কুমার সাঙ্গাকারা, মার্ক বাউচার এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি আছেন তার ওপরে। মাত্র ৫ম উইকেটরক্ষক হিসেবে ৩০০ ডিসমিসাল থেকে অল্প দূরেই ছিলেন বাংলাদেশি এই উইকেটরক্ষক।
বাংলাদেশের জার্সিতে মুশফিকের শেষ শতক ছিলো ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে। যা এসেছিলো তার ৩৫ বছর বয়সে। যা টাইগারদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে শতকের রেকর্ড। তবে সেই বছর ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে শতক হাকিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তার নামের পাশে নিয়ে নেন। কিন্তু বাংলাদেশের হয়ে দ্রুত শতকের রেকর্ডটা তার নামের পাশেই রয়েছে এখনও।
আরও দুই জায়গায় মুশফিকের নামটা থাকছে ৫ম স্থানে। উইকেটরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ এবং সবচেয়ে বেশি স্ট্যাম্পিং দুই জায়গাতেই মুশফিকের অবস্থান সারা বিশ্বে ৫ম স্থানে।
২ দিন ৭ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৪ দিন ১৯ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৬ দিন ৭ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
১১ দিন ৮ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
১১ দিন ১৬ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
২৪ দিন ১ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
২৮ দিন ২১ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৩৩ দিন ২ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে