জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বিদেশ থেকে শ্বাশুড়ির পাঠানো টাকা না দেওয়ায় স্ত্রী ও খালা শ্বাশুড়ির হত্যাকারী রুবেল হোসেন(৩৬)কে গ্রেফতার করেছে আক্কেলপুর থানা পুলিশ । আজ সোমবার রুবেলের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে নিহতের পরিবার ও হলহালিয়া গ্রামের এলাকাবাসী।
রুবেলের স্ত্রী মৌ আক্তার মিতু (২৫) এর মা কমলা বেগম সাত বছর আগে গৃহপরিচারিকা হিসেবে সৌদি আরব যান। সৌদি আরব প্রবাসীনী কমলা বেগম তার মেয়ে মৌ আক্তার মিতুকে প্রতিমাসে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে পাঠাতেন। রুবেল বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখিয়ে মিতুর কাছ থেকে জোর পূর্বক টাকা নিতো। প্রতি মাসের মতো গত মাসেও টাকা পাঠিয়েছিলেন। গত সোমবার (২৭মে) রুবেল সেই টাকা চেয়ে, না পেয়ে মিতুর সাথে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে রুবেল ছুরি বের করে মিতুকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করতে থাকে। এমন সময় মিতুকে বাঁচাতে তার বড় খালা আলেয়া বেগম (৬০) ও খালাতো ভাই নিরব হোসেন(২১) বাঁচাতে এগিয়ে আসলে খালা আলেয়া বেগমকে পেটে ও শ্যালক নিরবের হাতে ছুরিকাঘাত করে ।তাদেরকে উদ্ধার করে আক্কেলপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে মিতুর বড় খালা আলেয়া বেগম মারা যায় এবং মিতুকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে দুপচাঁচিয়া নামক স্থানে সেও মারা যান। ঘটনার পর থেকে রুবেল পালিয়ে যায়। আক্কেলপুর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের মাধ্যমে গতকাল ২জুন রোববার বিকেল ৫টায় বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলা সুখানপুকুর ইউনিয়নের মাসুন্দী গ্রাম থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করে। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসি গ্রেফতারের ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে আজ সোমবার (৩জুন) সকাল ১০টায় আক্কেলপুর থানার প্রধান ফটক ও উপজেলা পরিষদের সামনে শতশত নারী পুরুষ ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করে। মানবন্ধন শেষে পৌর শহরের প্রধান সড়কে ব্যানার ফেস্টুনসহ বিক্ষোভ মিছিল প্রদক্ষিণ করে।
মিছিলে নিহত পরিবারের সন্তান প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত নিরব, নিরবের বড় ভাইসহ আত্নীয়স্বজন, সোনামুখী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রতন হোসেন যোগ দেয়। মিতু ও আলেয়ার হত্যাকারী আটককৃত রুবেলের ফাঁসি দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেওয়া হয়।
মাবনবন্ধনে নিহত আলেয়ার সন্তান আহত নিরব বলেন, হত্যাকান্ডটি আমার চোখের সামনে ঘটেছে। আমি ঘাতক রুবেলের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানাচ্ছি।
নিহত মিতুর মামা মো: খায়রুল চৌধুরী বলেন, কয়েক দিন আগে আমার মেজবোন বিদেশ থেকে আমার ভাগ্নী মিতুর একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিল সেই টাকা নিয়ে রুবেল ও মিতুর মধ্যে ঝগড়া লাগে গত সোমবার (২৭ মে) সেটাকে কেন্দ্র করে রুবেল আমার ভাগ্নীকে চাকু দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করতে থাকে এমন সময় আমার বড় বোন ও ভাগ্নে বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও সে ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার বড় বোন এবং ভাগ্নী মিতু বগুড়াতে নিয়ে যাওয়ার সময় সেও মারা যায়। আমি হত্যাকারী রুবেলের ফাঁসি চাই।
ইউপি সদস্য মোঃ রতন হোসেন বলেন, রুবেল ঠান্ডা মাথার খুনি। সে তার স্ত্রী ও খালা শ্বাশুড়ীকে খুন করেছে। হলহলিয়া গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে এবং একজন ইউপি সদস্য হিসেবে রুবেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবি করি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নয়ন হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃত রুবেলকে থানা থেকে জয়পুরহাট বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার জন্য বের করার সময় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীরা থানার সামনে রুবেলের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। আমি তাদেরকে আশ্বাস দেই রুবেলকে আদালতে প্রেরণ করতে যাচ্ছি।
১৭ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
২০ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
২০ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
২২ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে
২ দিন ১৩ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
২ দিন ১৪ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
২ দিন ১৮ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৩ দিন ১৮ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে