প্রতিকার চেয়ে বিপদে কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার
অধীনস্থ কর্মচারীর হাতে লাঞ্ছিত হয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিকার চেয়ে সারা না পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করায় ওই কর্মচারীর ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টা তাকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. তন্দ্রা সরকার।
জানাগেছে, উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মাহবুর রহমান ওই কেন্দ্রের স্থানীয় এক মাঠ পরিদর্শক মামুনুর রশীদ তুচ্ছ কারনে তাকে বারবার লাঞ্ছিত করে আসছিল। প্রতিকার চেয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট বারবার অভিযোগ করেও কোন সারা না পেয়ে (২ মার্চ) রবিবার সকালে ক্ষেতলাল প্রেসক্লাবে এসে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, আমি গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বরে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগদান করি। এরপর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা দেখে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদে সমন্বয় মিটিংয়ে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংস্কারের জন্য একটি বরাদ্দ দেয়। ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চার পাশে মাটি ভরাটের কাজ করে। বরাদ্দ সংস্কার কাজের বিস্তারিত বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে ওই কেন্দ্রের মাঠ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি ও কয়েক দফায় আমাকে মারতে আসে। আমি পরিবার নিয়ে ওই কেন্দ্রের আবাসিকে থাকি। মাঠ পরির্দশক মামুনের কারনে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। উর্ধতনকে ঘটনাটি জানালে তারা থানায় অভিযোগ করতে বলেছে।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় যেন অফিস নয়, একেবারে আবাসিক হোটেল। এখানে থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সাক্ষাতকার নিতে সরেজমিনে অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, অফিসের মধ্যেই রয়েছে রান্না বান্নায় নিয়োজিত রাইস কুকার, গ্যাস সিলিন্ডার ইনডাকশন, গ্যাসের চুলা এবং প্রয়োজনীয় রান্নার সামগ্রী। পাশের কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে বিছানা, চেয়ার এবং আলমারির মতো জিনিসপত্র। অফিস কক্ষেই দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার এমন আয়োজন চলে আসছে বলে জানা যায়।
এবিষয়ে মাঠ পরিদর্শক মামুনুর রশীদকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর তার মা রাজীয়া সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে বলেন, কোন কিছু যাচাই না করে আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক নিউজ করে সেই সাংবাদিককে দেখে নিব।
অভিযোগ পেয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে গিয়ে বক্তব্য চাইতে গেলে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মনোয়ার হোসেন বলেন, মামুন ও মাহবুর রহমান দু'জনেরই মাথার সমস্যা আছে। এবিষয়ে আমাদের উর্ধতন অফিসারদের সাথে কথা বলুন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. তন্দ্রা সরকার বলেন, আমাদের মৌখিক বা লিখিতভাবে না জানিয়ে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মাহবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে তিনি চাকুরী বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। এই অপরাধে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।