আলতাফের বিরুদ্ধে সাবেক সেনা সদস্যের ১৫ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
আলতাফের বিরুদ্ধে সাবেক সেনা সদস্যের ১৫ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
মোঃ আজগার আলী, সদর উপজেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ
মাটির ব্যবসার পার্টনার হয়ে সাবেক এক সেনা সদস্যের কাছ থেকে ১৫ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতে অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সদরের বাঁকাল এলাকার মৃত আব্দুল গফফার সরদারের ছেলে আলতাফ হোসেন সরদারের বিরুদ্ধে। বর্তমানে টাকা উদ্ধারের আশায় প্রশাসনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন পাটকেলঘাটা থানাধীন চোমরখালী এলাকার মৃত আব্দুল মোতালেব সরদারের ছেলে ও সাবেক সেনা সদস্য এসএম মাসুদ রহমান।
এসএম মাসুদ রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে আমি বর্তমানে জমি জায়গা দেখাশুনা করি। বছর তিনেক আগে আমার দু:সম্পর্কের মামা আলতাফ হোসেন সরদার আমাকে তার সাথে ব্যবসা করার পরামর্শ প্রদান করেন। আমি তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমি তার সাথে মাটির প্রকল্পের ব্যবসা শুরু করি। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে নন জুডিশিয়াল স্টাম্পের মাধ্যমে আলতাফ হোসেন আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন এবং অংশিদারী ব্যবসার অঙ্গিকারনামা সম্পাদন করেন। এরপর ঐ স্ট্যাম্পের পিছনে স্বাক্ষর করে তিনি আরও ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আমাকে ভুল বুঝিয়ে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৮০০ টাকা, জনতা ব্যাংক লিমিটেডের চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে ১ লক্ষ ৮০হাজার টাকা এবং ধুলিহার এলাকার হায়দার আলীর কাছ থেকে আমার ধান ব্যবসার ৩৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
কিছুদিন পর আমার টাকার প্রয়োজন হলে আলতাফ হোসেনের স্ত্রী রাশিদা খাতুনের মাধ্যমে আমাকে আমার দেওয়া ঐ ১৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। তবে ঐ ৫০ হাজার টাকাও ছলচাতুরী করে আলতাফ হোসেন আমার কাছ থেকে নিয়ে নেয়। এরপর মাটির প্রকল্পের কাজ শেষে লভ্যাংশ ও আসল টাকার হিসাব চাইলে আলতাফ হোসেন কোন হিসাব না দিয়ে সকল কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট আটকে রাখে। এরপর একটি ব্যাগের ভেতরে থাকা ব্যবসায়িক রেজিস্ট্রার খাতার কয়েকটি পাতা ছিঁড়ে রেখে আলতাফ হোসেন আমাকে একটি রেজিস্ট্রার খাতা ফেরত দেন।
এছাড়া ঐ ব্যাগে থাকা আমাদের ব্যবসায়িক অফিসের চাবি, ব্যাংকের চেকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র আটকে রাখে। পরবর্তীতে আমি পাটকেলঘাটা থানাধীন চোমরখালী এলাকার মাজহারুল সরদার ও মুনসুর আলী সরদারকে সাথে নিয়ে কয়েকবার আলতাফ হোসেনের বাড়িতে গেলে তিনি ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজন আমাদেরকে গালিগালাজ ও মারপিট করতে উদ্যত হন এবং পরবর্তীতে ঐ টাকার দাবী নিয়ে তাদের বাড়িতে গেলে খুন জখমের হুমকি দেন। আলতাফ হোসেনের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে বর্তমানে আমি অত্যন্ত মানবিকতর জীবনযাপন করছি।’
চোমরখালী এলাকার মুনসুর আলী সরদার বলেন, ‘মাটির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আলতাফ হোসেনের কাছে ১৫ লক্ষাধিক টাকা পায় এসএম মাসুদ রহমান। তবে আলতাফ হোসেন সেই টাকা দিচ্ছেন না। আমি কয়েকদিন মাসুদ রহমানের সাথে আলতাফ হোসেনের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজন আমাদের চরম অপমান করেছেন এবং হুমকি ধামকি দিয়েছেন।’
তবে অভিযুক্ত আলতাফ হোসেন টাকা পাওয়ার আংশিক সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘মাটির ব্যবসার জন্য এসএম মাসুদ রহমান আমাকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল এটা সত্য। তবে আমি আমার স্ত্রীর মাধ্যমে তাকে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছি। আর বাকি টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি তবে মাসুদ রহমান ঐ টাকা নিচ্ছেন না।’