ববি নোয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নেতৃত্বে সাহেদ-ওয়াহেদ ববিতে মার্কেটিং প্রিমিয়ার লীগ (MPL)- ২০২৫ অনুষ্ঠিত আগামী ১১নভেম্বর ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে পীরগাছায় বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল ৮০ হাজার মার্কিন ভিসা বাতিল মনোনয়ন পেয়ে আব্দুল বারীর অঙ্গীকার এমপি নয়, আজীবন জনগণের সেবক হতে এসেছি শেরপুরে কৃষি কর্মকর্তা মারধরের ঘটনায় ছাত্রদল নেতার গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন পশুর চ্যানেলে ইঞ্জিন বিকল ট্রলার থেকে ৪২ যাত্রী উদ্ধার আদমদীঘিতে নতুন ইউএনও‘র যোগদান বগুড়ার আদমদীঘিতে বিড়াল হত্যা, নারীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি পর্যটনে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে শ্রীমঙ্গলে পরিচ্ছন্নতা ক্যাম্পেইন নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করলেন শ্রীমঙ্গল সোনার বাংলা রোড ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেশন সভা মৌলভীবাজারে খেলাফত মজলিসের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় নকলা ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার এমপি নয়, সেবক হতে চাই-পীরগাছায় এটিএম আজম খান অনুমোদনবিহীন সফটসেল কাঁকড়া প্রসেসিং করায় ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস নির্বাচনের আগে গণভোট নয়, তফসিল দিন; পানি ঘোলা করবেন না: যশোরে মির্জা ফখরুল আশাশুনিতে ডাঃ শহিদুল আলমের মনোনয়ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উত্তেজনা

উত্তর বঙ্গের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলবেন না!

1075 Anju ara ( Contributor )

প্রকাশের সময়: 27-10-2025 10:26:05 pm

উত্তর বঙ্গের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলবেন না!

আজ অন্তত দুঃখ নিয়ে দেশের একজন সু নাগরিক হিসেবে বলতেছি। তার আগে আমি প্রথমেই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে আজ পযন্ত যারা দেশের জন্য,ভাষার জন্য,  স্বাধিনতার জন্য,  জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে সেই সব বাংলার বীর সন্তানদের।আমি আরো শ্রদ্ধার সাথে জানাই সেই সব র্নীভিক দেশ প্রেমিকদের যারা আজও দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট নিয়ে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ।

‎দেশের ইতিহাস, রাজনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, কৃষি ও অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে এই অঞ্চলের মানুষ।কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এদেশের জন্ম লগ্ন থেকে এই অঞ্চলের মানুষ,নির্যাতিত, নিপীড়িত, বেষম্যের শিকার।শিক্ষা,দীক্ষা অর্থনীতি সব দিক থেকে আমরা অবহেলিত।তবুও উত্তরবঙ্গের মানুষ দেশ গঠনের প্রতিটি পর্যায়ে ত্যাগ ও পরিশ্রমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার প্রমাণ আবু সাঈদ,বেগম রোকেয়ার মতো সন্তানেরা।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে উত্তরবঙ্গ ছিল বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু।হিলি, চিলাহাটি, বুড়িমারী, ফুলবাড়ী, পীরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম প্রভৃতি স্থানে তীব্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়।দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া, রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কুড়িগ্রামের উলিপুরে বহু শহীদের রক্তে স্বাধীনতার পতাকা রাঙা হয়। উত্তরবঙ্গ ছিল মুক্তিযুদ্ধের একটি কৌশলগত দুর্গ।কিন্তু এতো আত্মত্যাগ, রক্তের বিনিময়েও উত্তরবঙ্গের মানুষ স্বাধিনতার সাধ পায়নি। পায়নি শোষণ উৎপীড়নে বেষম্য থেকে মুক্তি। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, উত্তরবঙ্গের (রংপুরের পায়রাবন্দ) কৃতি সন্তান, যিনি নারী জাগরণের পথিকৃৎ।তাঁর চিন্তা ও লেখনী বাঙালি নারীর শিক্ষার নবদিগন্ত উন্মোচন করেছে।দিনাজপুরের মাহবুব উল আলম, বগুড়ার আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, রংপুরের ড. ওয়াজেদ মিয়া,এরা শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সমাজচেতনায় উত্তরবঙ্গকে গর্বিত করেছে।কিন্তু তবুও আজও সেই উত্তরবঙ্গের মানুষের শিক্ষাখাতে বরাদ্দে বেষম্যের শিকার। নেই কোন ভালো প্রতিষ্ঠান,উচ্চ শিক্ষার জন্য নেই কোন বরাদ্দ,এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে নেই কোন পরিকল্পনা।

‎কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ভরসা হিসেবে উত্তরবঙ্গ জাতীয় অর্থনীতিতে শক্ত ভিত্তি তৈরি করেছে।উত্তরবঙ্গ বাংলাদেশের ধান, আলু, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ ও চা উৎপাদনের প্রধান অঞ্চল।দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে উৎপাদিত ফসল সারাদেশের খাদ্যচাহিদা পূরণ করে।দেশের “খাদ্য নিরাপত্তা” টিকিয়ে রাখার পেছনে উত্তরবঙ্গের কৃষক সমাজের ভূমিকা অপরিসীম।ছাড়া লালমনিরহাট ও পঞ্চগড়ের চা-বাগান বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ চা উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে। কিন্তু দুঃখ লাগে তখন!যখন শুনবেন উত্তরবঙ্গের মানুষ কৃষি খাতে চরম অবহেলার শিকার।এ অঞ্চলের মানুষেকে সিন্ডিকেটের শিকার হয়ে উচ্চ দামে কিনতে হয় বীজ, সার,কিটনাশক।কিন্তু সরকারের এ বিষয়ে নেই কোন প্রদক্ষেপ।শস্য দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য নেই কোন কোলেস্টেরল।শস্য প্রসেস করার জন্য নেই কোন কারখানা।গড়ে তোলা হয়নি কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান। অপর দিকে প্রতি বছর বন্যা নদী ভাঙ্গনে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু সরকারের এ বিষয়ে নেই কোন পরিকল্পনা।উত্তর উত্তরবঙ্গের দুঃখ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে চলছে তাল বাহানা।তাই দারিদ্র্যতা যেন নিত্য দিনের সঙ্গি হয়ে গেছে এই অঞ্চলের মানুষের। 

‎উপমহাদেশীয় মহান নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, উত্তরবঙ্গের টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের নেতা,বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতা ও সাম্যবাদের বার্তা ছড়িয়ে দেন।নিতি সবসময় কৃষক,শ্রমিক এর ন্যায় অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।সেই জীবন যুদ্ধের সংগ্রাম আজও চলছে।উত্তরবঙ্গে শিল্প-কারখানা ও বিনিয়োগ কম। অধিকাংশ মানুষ কৃষিনির্ভর, ফলে আয় কম।

‎বন্যা, নদীভাঙন, খরা— এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়মিত ঘটে, যা কৃষিকে অনিশ্চিত করে তোলে।

‎সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ইনফ্রাস্ট্রাকচার (রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) না থাকায় উন্নয়ন ধীর।জাতীয় নীতিনির্ধারণে উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর তুলনামূলকভাবে দুর্বল করে রাখা হয়েছে।প্রশাসনিক সুবিধা (বড় হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্প এলাকা) অধিকাংশই দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।রাজনৈতিক নেতারা উত্তরবঙ্গকে “ভোট ব্যাংক” হিসেবে ব্যবহার করেন, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা নেই উত্তর অঞ্চলের জন্য। গুণগত শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত।

‎দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি না করা ও স্থানীয় অর্থনীতি করা সম্প্রসারিত হয়নি।তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই ফলে স্থানীয় উন্নয়ন স্থবির।

‎শত অবহেলা, বৈষম্যের পরও এই উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বপ্ন ছিলো এবার তারা মুক্তি পাবে। আবু সাঈদ এর জীবনের মূল্যে হয়তো নতুন করে সাজবে উত্তরবঙ্গ। কিন্তু মহাজনরা বার,বার এই অঞ্চলের মানুষের আবেগ নিয়ে খেলেছে, অধিকার নিয়ে খেলেছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা এই অঞ্চলের মানুষের বাচাঁ মরার দাবি। এর সাথে জড়িয়ে আছে কয়েক লক্ষ্য পরিবারের জীবন। কিন্তু এটি নিয়েও চলছে পায়তারা।উত্তরবঙ্গের মানুষ আজ বাচঁতে চায় তাদের অধিকার বুঝিয়ে নিতে চায়। 'মফিজ' বলে তাদের আর দমনো যাবে না। তাই তো দল,মত নির্বিশেষে সকল মানুষ আজ জেগে উঠেছে। তাদের ন্যায্য দাবী আদায়ে। আজ তারা চায়-

০১/ দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

০‎২/ উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি।

০‎৩/ উত্তরবঙ্গে অর্থনৈতিক বরাদ্দ বৃদ্ধি।

০‎৪/ গুণগত শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা।

০৫/ ‎প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, পলিটেকনিক ও আইটি ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা।

০‎৬/ শিক্ষার্থীদের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন বৃত্তি চালু করা।

০‎৭/ মেয়েদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া।

০‎৮/ কৃষিনির্ভর অঞ্চলকে শিল্প ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।

০‎৯/ রংপুর, বগুড়া ও দিনাজপুরে Special Economic Zone (SEZ) প্রতিষ্ঠা।

‎১০/ কৃষিপণ্যভিত্তিক ফুড প্রসেসিং, টেক্সটাইল ও প্যাকেজিং শিল্প গড়ে তোলা।

‎১১/ সীমান্তবর্তী (স্থলবন্দর) গুলোতে ট্রানজিট ট্রেড জোন চালু করে ভারত ও নেপালের সাথে বাণিজ্য বাড়ানো।

‎১২/ কৃষককে স্বনির্ভর ও আধুনিক কৃষিতে দক্ষ করা।

‎১৩/ তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের পূর্ণ বাস্তবায়ন করে সেচের পরিধি বাড়ানো।

‎ ১৪/ লালমনিরহাট বিমানবন্দকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে চলু করা।

১৫‎/ প্রত্যেক উপজেলায় কৃষি পণ্য সংরক্ষণাগার (Cold Storage) ও সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন।

১৬‎/ কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণে সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও সাবসিডি চালু করা।

১৭‎/ উত্তরবঙ্গের মহাসড়ক গুলো দ্রুত ৪-লেইন এ সংস্কার করা। 

১৮/ বুড়িমারী – ঢাকা দ্রুতগামী "বুড়িমারী এক্সপ্রেস" বুড়িমারী থেকে চালু করা। 

১৯‎/ উত্তরবঙ্গে উন্নত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা।

২০‎/ উপজেলা হাসপাতা গুলোতে চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি ও ওষুধের ঘাটতি পূরণ।

২১/‎ জনগণকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশীদার করা।

‎উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন কোনো দয়া নয় — এটি উত্তরবঙ্গের মানুষের অধিকার।‎এই অঞ্চলের মানুষ পরিশ্রমী, শিক্ষানুরাগী ও সম্ভাবনাময়।যদি সরকার ও সমাজ একসাথে এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করে,তাহলে উত্তরবঙ্গ শুধু বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত, সবুজ ও শিক্ষিত অঞ্চল হয়ে উঠতে পারে।


লেখাঃআল আমিন-বিদ্রোহী,উত্তরবঙ্গ।


Tag
আরও খবর






deshchitro-68e136dc540b5-041025090148.webp
আমরা সবাই লোভি - কাজী এহসানুল হক জিহাদ

৩৩ দিন ৪ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে