নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) মো. ইউনুছ শেখের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও জমিজালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা তাকে ভূমি জালিয়াতি চক্রের অন্যতম সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকাকালীন তিনি সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষের জমি আত্মসাৎ এবং পকেট ভারী করেছেন।
লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অধীনে ১২টি মৌজায় ভুয়া দলিল, নকল পর্চা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, তিনি ভূমি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ বালাম বই নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার ছেলে নয়ন ইসলামকে দিয়ে ভুয়া পর্চা তৈরি করতেন। এমনকি বালাম বইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে তথ্য গায়েব করার মতো গুরুতর অপরাধও করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন।
এর আগে, শালনগর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা থাকাকালীনও তিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার জন্য নানা তালবাহানা করতেন। শালনগরের বিভিন্ন মৌজার জমি নিয়ে অনিয়মের একাধিক প্রমাণ রয়েছে। এছাড়া উপজেলার মানিকগঞ্জ বাজারের একটি জমি নিয়ে তঞ্চকতা করেন এবং নারান্দিয়া রেল প্রকল্প সংলগ্ন একাধিক জমি জাল কাগজপত্র তৈরি করে আত্মীয়স্বজনের নামে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, মো. ইউনুছ শেখ তার গ্রামের বাড়ি রঘুনাথপুরসহ নড়াইল, লোহাগড়া, শালনগর, মানিকগঞ্জ বাজার ও জয়পুর এলাকায় নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল অর্থবিত্ত গড়ে তুলেছেন, যা সঠিক তদন্ত করলে প্রকাশ পাবে।
ভুক্তভোগীদের বক্তব্য অনুযায়ী, মো. ইউনুছ শেখ সরকারি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সিল ও স্বাক্ষর নকল করে ভূয়া দলিল তৈরি করতেন। ফলে নিরীহ সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়ে জমি হারিয়েছেন। ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালে তাকে বদলি করা হয় এবং লোহাগড়া, জয়পুর ও লক্ষ্মীপাশা নায়েব অফিসে পুনরায় যোগদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর পর তিনি আবারও লোহাগড়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন এবং আগের মতোই দুর্নীতি ও জালিয়াতি অব্যাহত রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে, যা নিয়ে একাধিক মামলা চলমান (মামলা নং-৪৯, খতিয়ান নং-৫৫০, দাগ নং-৩৪৩২ ও ৩৪৩১)।
ভুক্তভোগীরা মো. ইউনুছ শেখের দ্রুত বদলি এবং তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তিনি পুনরায় লোহাগড়া, জয়পুর ও লক্ষ্মীপাশা নায়েব অফিসে কোনো দায়িত্ব না পান।
এ বিষয়ে মো. ইউনুছ শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আশাবাদী, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে মো. ইউনুছ শেখের দুর্নীতি ও অপকর্মের স্বচ্ছ বিচার হবে এবং সাধারণ মানুষ তার প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
১৮ দিন ৭ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৩৪ দিন ১৩ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৩৪ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৪১ দিন ৭ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৪৫ দিন ১৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
৪৯ দিন ৮ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৫৪ দিন ১৭ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৫৮ দিন ২ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে