শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে আজ, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা গলাচিপায় ডায়রিয়ায় মৃত ২ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন'র বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত বড়লেখায় রক্তদান যুবসমাজ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে কুইজ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন এ্যাড. তামিম হোসেন সোহাগ এর আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টি সেনবাগ উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত শেরপুরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করলেন নবাগত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন পিপিএম ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস গণতান্ত্রিক বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে : ওবায়দুল কাদের কুলিয়ারচরে টিকেট কালোবাজারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ভোলায় দুই সন্তানের জননীর আত্মহত্যা। দেবিদ্বারে অসহায় পথ শিশুদের সেবামূলক সংঘঠনের ২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী বীরমুক্তিযোদ্ধা অমরেন্দ্র লাল এর প্রয়ান,রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন। সুন্দরগঞ্জে যুবলীগ নেতা আজমের ওপর হামলা, আতাউর নামে এক আসামী গ্রেফতার। ভোলায় ইয়েস বাংলাদেশের আয়োজনে কমিউনিটি স্কোরকার্ড বিষয়ক দ্বি-বার্ষিক পরামর্শ সভা আক্কেলেুর ডালে ঝুলছিল কৃষকের লাশ রামুতে গাড়িযোগে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ যুবক আটক উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী চাচা – ভাতিজা বেলকুচিতে বোমা বিস্ফোরণ মামলার আসামি আবু তালেব গ্রেফতার

শহীদ আসাদ আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রামের এক অনবদ্য অধ্যায়

আজ ২০ জানুয়ারি,শহীদ আসাদের প্রয়াণ দিবস। ১৯৬৯ সালের এই দিনে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ। তাঁর রক্তের রঞ্জিত শার্ট আগুনের মশালে জ্বলে উঠেছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বহ্নিশিখা। যদিও এ আন্দোলনের সূত্রপাত হিসেবে ধরা যেতে পারে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান সরকারের দায়ের করা আগরতলা মামলা, যা ইতিহাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামেই পরিচিত। ১৯৬৮ সাল, বছরটি ছিল স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের ক্ষমতা দখলের ১০ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে একদিকে জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হচ্ছিল ‘উন্নয়নের দশক’ এবং অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা করে পাকিস্তান সরকার। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে রাজনীতিক, সিএসপি অফিসার ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে রাজসাক্ষী হওয়ার শর্তে ১১ জনকে ক্ষমা প্রদর্শন করেছিল পাকিস্তান সরকার।


পাকিস্তানিদের এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে জেগে ওঠে বাংলার মানুষ। তারা স্পষ্ট বুঝতে পারে, এ ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র। ১৯৬৮ সালের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ হয়ে ওঠে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় বছর। আন্দোলন তখন কেবল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতেই কেন্দ্রীভূত ছিল না, তা ছড়িয়ে পড়েছিল গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় গণশক্তি যে কী বিপুল জোয়ার তৈরি করতে পারে, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান তার এক ঐতিহাসিক দলিল। এ বছরই গঠিত হয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং ঘোষিত হয় তাদের ১১ দফা দাবিনামা।


আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ১৯৬৯ সালের ১৭ জানুয়ারি ‘দাবি দিবস’ পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আন্দোলন দমন করতে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকেই ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে রেখেছিল। পরবর্তী সময়ে এ ধারা ঢাকা ছাড়িয়ে আরও নানা জেলায় জারি হতে থাকে। দাবি দিবসে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার ছাত্র সমাবেশ থেকে ১৪৪ ধারা বাতিলসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘটের আহ্বান জানায়। কিন্তু এই সমাবেশেও আইয়ুব খানের পুলিশ নির্বিচারে হামলা চালায়। পরবর্তী দুদিন (১৮ ও ১৯ জানুয়ারি) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনকর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালায় পাকিস্তানি পুলিশ। এরই প্রতিবাদে ২০ জানুয়ারি প্রদেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘট আহ্বান করে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।


২০ জানুয়ারির বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সমবেত হন। ১৪৪ ধারা ভেঙে আসাদের রক্তমাখা শার্ট হয়ে ওঠে আন্দোলনের এক দুর্বার প্রতীক। প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ায়-মহল্লায় গঠিত হতে থাকে সংগ্রাম পরিষদ। ২৪ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন নবকুমার ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মতিউর। এদিন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সংগ্রামী জনতার পদভারে স্পন্দিত হয়ে ওঠে রাজপথ থেকে অলি-গলি, ছড়িয়ে পড়ে গণজাগরণের উত্তুঙ্গ ঢেউ। এই বিপুল গণজোয়ারকে দমন করার জন্য পাকিস্তানের পুলিশ নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছিল আন্দোলনকারীদের ওপর। ১৫ ফেব্রুয়ারি কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে আটক আগরতলা মামলার আসামি সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মৌন মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় ড. শামসুজ্জোহাকে। তাঁদের পবিত্র রক্তাঞ্জলি থেকেই জেগে ওঠে মানুষের দ্রোহ, তৈরি হয় মুক্তির গান। উনসত্তরের এই অবিস্মরণীয় ইতিহাসের পথ ধরেই আসে সত্তরের নির্বাচনে বাংলার মানুষের ন্যায়সংগত অংশগ্রহণের মাহেন্দ্রক্ষণ।


কিন্তু ইতিহাসের এই ধারাবাহিকতার কতটুকু জানে আমাদের আজকের প্রজন্ম?


ইতিহাসের একজন শিক্ষার্থী বলেই কথাটি বলছি। পাঠ্যপুস্তকে আমাদের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের যে সত্যচর্চা এখন হচ্ছে, তার পরিধি এবং গভীরতা নিয়ে একজন শিক্ষার্থী  

হিসেবে আমি নিজেকে সন্তুষ্ট দাবি করতে পারি না। এই দেশে পঁচাত্তর পরবর্তী দীর্ঘ সময় আমাদের পাঠ্যপুস্তকে বিকৃত ইতিহাসের চর্চা হয়েছে। আজ যদিও সময়ের সেই কৃষ্ণগহ্বর থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি; কিন্তু পাঠ্যপুস্তকে আমাদের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের জন্য যেটুকু জায়গা বরাদ্দ, তা যথেষ্ট নয়।


দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও দেশের সচেতন নাগরিকেরা মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি বিষয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির দাবি করে আসছেন। এ দাবির যৌক্তিকতা হলো, ক্ষুদ্র পরিসরে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের নিকট হয়তো ক্ষুদ্র পরিসরে ইতিহাস জানানো যায়; কিন্তু ইতিহাসবোধ তৈরি করা যায় না এর জন্য দরকার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে তার পরিশীলিত ভাবে ইতিহাস চর্চা করা। এর জন্য ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বোঝা খুব জরুরি। 

তা না হলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আমাদের সন্তানরা কী করে জানবে—কেন আসাদের শার্ট আমাদের প্রাণের পতাকা হয়ে উঠেছিল?

যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রামের এক অনবদ্য অধ্যায়—উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান।



এমরান চৌধুরী আকাশ 

যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বাং

লাদেশ ছাত্রলীগ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর 

আরও খবর