বগুড়ায় প্রায় ৪০০ বছর পূর্বের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মেলা হলো গাবতলী উপজেলার পোড়াদহ মেলা৷ প্রবীণদের মতভেদে মেলার বয়স দুইশো বছর আবার কেউ বলে প্রায় চারশো বছর। বয়স নিয়ে তর্ক থাকলেও মেলাটি যে প্রাচীন ও ঐতিহ্য বহন করছে তা নিয়ে কারও মতভেদ নেই। প্রতি বছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বঙ্গাব্দ মাঘ মাসের শেষ বুধবার। ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা নামেও পরিচিত এই পোড়াদহ মেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বগুড়া শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরের মেলাটি একদিনের হলেও মেলাকে ঘিরে প্রতি বছর এলাকার অর্ধশত গ্রামে বাড়ি বাড়ি জামাই-মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনদের আগমন ঘটে।
ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় বড় সাইজের বাঘাইড় মাছ উঠলেও সেটি মহাবিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এ কারণে গত তিন বছর হলো মেলায় বাঘাইড় মাছ দেখা যাচ্ছে না। তবে রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, বিগ হেড, ব্লাড কার্প, ব্লাড কার্প, আইড়, সিলভার কার্প ও কার্পসহ সামুদ্রিক নানা জাতের মাছ উঠেছে। আকার ও ওজনভেদে কাতল ৪০০ থেকে ৮৫০টাকা, বিগহেড ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, সিলভার কার্প ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বোয়াল ১০০০ থেকে ১৪০০ টাকা, চিতন ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, গ্লাস কার্প ৩৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, পাঙ্গাস ৩৫০ থেকে ১০০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ১০০০ টাকা, ব্লাড কার্প ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং আইড় মাছ ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে৷ এবারের মেলায় ৪০ কেজি ওজনের সবচেয়ে বড় সাইজের পাখি মাছ এনেছেন টাঙ্গাইলের শরীফ তালুকদার। তিনি প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকা হিসেবে মাছটির দাম হাঁকিয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। শরীফ তালুকদার বলেন, আমি চট্রগ্রাম থেকে ৪০ কেজি ওজনের পাখি মাছ এনেছি৷ এটিই এই মেলার সবচেয়ে বড় মাছ। প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকা মাছটি বিক্রি করতে চাই। তবে কেউ দামাদামি করলে কিছুটা কম করতে পারি। এবারে মেলায় প্রতি বছরের মতো বাহারি মিষ্টান্ন সামগ্রী ছিল আরেক আকর্ষণ। মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই, শুকনা মিষ্টিতে ভরপুর ছিলো দোকানগুলো। এছাড়াও মেলার বাহারি ডিজাইনের কসমেটিকস, খেলনা, গিফট সামগ্রী, চুড়ি, কানের দুল, মালা, কাজল, মেকআপ বক্স, ব্যাট, বল ভিডিও গেমসসহ নানা ধরণের প্রসাধনী ও খেলনা সামগ্রী ছিল চোখে পরার মত।
উল্লেখ্য, এই ঐতিহ্যবাহী মেলার প্রাচীন পরিচিতি ছিলো সন্ন্যাসের নামে। গাড়িদহ নদীর তীরে জোড়া বটবৃক্ষের নিচে দূর থেকে এসেছিলেন সন্ন্যাসীরা। তাদের অলৌকিকত্ব দশ গাঁয়ে ছড়িয়ে পড়লে তারা জপে বসতেন মাঘের শেষ ভাগে। শেষ বুধবার মেলা বসতো। বটতলায় সন্ন্যাসীদের আশ্রমের কারণে পরিচিতি পায় সন্ন্যাসের মেলা। অনেক পরে এলাকার নাম অনুসারে হয় পোড়াদহ মেলা। মেলায় উঠতো বড় মাছ ও মিষ্টি। সেই ঐতিহ্য আজও বহমান।
৩৪০ দিন ১৭ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
৩৭৬ দিন ১৯ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
৩৮০ দিন ১৯ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৩৮১ দিন ১৯ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৪১২ দিন ১৯ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৪২৮ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
৪৩৩ দিন ২৩ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৪৩৫ দিন ১৮ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে