বিজ্ঞান তথ্য প্রযুক্তির এই আধুনিক যোগে এসে পরিবর্তন হচ্ছে চারিপাশের, পরিবর্তনের সাথে সাথে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতির নানান কর্মযজ্ঞ। চারিপাশে অট্রালিকা, দালান ঘর আধুনিকায়ন হওয়ায় খড়কুটো দিয়ে ঘর তৈরির কারিগর ও বিভিন্ন কারুকাজের শিল্পীরা তাদের পেশা গুটিয়েছেন অনেক আগেই। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার একসময়ের হস্তশিল্পের (বাঁশ-বেতের) কারিগররা এখন আর ভালো নেই। বাঁশ-বেতের কারিগররা বাড়িঘর তৈরি থেকে শুরু করে কৃষি কাজের নানা রকম উপকরণন তৈরি করতেন। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলসহ পাড়া-মহল্লায় সবখানেই গড়ে উঠছে ইট-পাথরের ঘরবাড়ি। তাই চাহিদা কমেছে বাঁশ-বেতের পণ্য ও কারিগরদেরও। একসময় উপজেলার পৌর শহরে ১০/১২ টি বাঁশ-বেতের কারিগরদের দোকান ছিল। বর্তমানে পৌর শহরে কালের আবর্তে বিলুপ্ত হওয়া বাঁশ-বেতের করিগরের দোকান রয়েছে মাত্র একটি। একসময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হস্তশিল্পের এই কারিগরদের দেখা যেত, ইদানিং আর দেখা যায়না। এতে অনেকই বেকার হয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন।
জালালপুরের প্রবীন মুরব্বি আশরাফ আলী বলেন, এখন বেশির ভাগ বাড়িঘর পাকা দালান, একসময় ঘরে বাঁশের তৈরি চাদ দেওয়া হতো, তখন বাঁশ-বেতের কারিগরদের কদর ছিল বেশি। জগন্নাথপির-সিলেট পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকার বাঁশ-বেতের কারিগর আনহার মিযা বলেন, দরিদ্রতার সাথে লড়াই করে এই পেশায় এখনো ঠিকে আছি, রাস্তার পাশে ভাড়া জায়গায় ৮-৯ বছর ধরে বাঁশ-বেতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছি, বাজারে বাঁশ ও রং সহ সব উপকরণের দাম অনেক বেশি, তাই এ কাজ করে আমাদের খুব একটা লাভ হয় না, কোনো রকমে সংসার চলে, সুদমুক্ত ঋণ বা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের জন্য খুব ভালো হতো।
জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংবাদিক তাজ উদ্দিন আহমদ বলেন, এক সময় গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বিশাল বাঁশঝাড় ছিল, হাওরাঞ্চলের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে বাঁশ-বেতের নানা রকম পণ্যের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম, আর বাঁশ-বেত শিল্পকে ঘিরে শত শত মানুষের জীবিকা নির্বাহ হতো, কিন্তু বর্তমানে বাঁশ-বেত শিল্প বিলুপ্তপ্রায়, তাই আগের মতো কদর না থাকায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত লোকজনের অনেকেই পেশা বদল করেছেন। আর যারা এখনও আছেন তারা চরম কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন। বাঁশ-বেত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এবং তার সঙ্গে জড়িতদের জীবনমানের উন্নয়নে সরকারি ঋণ সহায়তাসহ সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা খুবই জরুরি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হয়তো আবারও ঘুরে দাঁড়াবে এ শিল্প এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে শিল্পটির সাথে সংশ্লিষ্টদের।
জগন্নাথপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রাজ মনি সিংহ বলেন, এ উপজেলার অনেক মানুষ এখনও বাঁশ-বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। বাণিজ্যিকীকরণের সুযোগ থাকলে আমরা তা করার চেষ্টা করব এবং শিল্পটির সাথে জড়িতদের খোঁজ নিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
৪৯ দিন ১৭ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
৫৭ দিন ১ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৭১ দিন ১৭ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
৮১ দিন ১৩ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৮১ দিন ১৩ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে
১০১ দিন ১৯ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
১১৩ দিন ২০ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে
১১৩ দিন ২০ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে