গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি শালবন দখলের হিড়িক পড়েছে। ক্ষমতাসীন কিছু অসাধু ভূমি দস্যু ও দালালদের হাত ধরে দখল হচ্ছে শালবনের মহা-মূল্যবান জমি। বিভিন্ন সময় বন দখলবাজদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেও থামানো যাচ্ছেনা বন দখল। স্থানীয় ক্ষমতাসীন কিছু অসাধু ভূমি দস্যু ও দালালদের হাত ধরে দখল হচ্ছে শালবনের মহা-মূল্যবান জমি। বিভিন্ন সময় বন দখলবাজদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেও থামানো যাচ্ছে না বন দখল। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দখলদারদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই দখল হচ্ছে মূল্যবান শাল বনের জমি।তবে জমি উদ্ধারে এবং দখল ঠেকাতে অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাদের উদাসীনতার অভিযোগ ও রয়েছে। সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায় কালিয়াকৈর রেঞ্জ আওতাধীন বিভিন্ন স্থানে সরকারি শালবনের জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন,বাড়িঘর, দোকানপাট।এছাড়াও নিয়ম নীতি না মেনে বনের সীমানা ঘেষেও নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। বনের আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের পাশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে বন বিভাগ থেকে অনুমতি ও জমির সীমানা নির্ধারণের নিয়ম থাকলে ও তার কোনটি মানা হচ্ছে না।শুধু স্থানীয় লোকজন নয় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন মিল কারখানা ও ঝুট গুদামের দখলে ও চলে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বনের জমি। রাতের আধারে সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে ওই সব মিল কারখানার যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করার অভিযোগ ও রয়েছে। কালিয়াকৈর রেঞ্জ আওতাধীন কাশিমপুর বন বিটের(৫৩৭)কোনাপাড়া মৌজার লস্করচালা এলাকায় খান ব্রাদার্স নীটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ বিরুদ্ধে বনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।লস্করচালা এলাকায় খান ব্রাদার্স নীটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এর আর.এস ১৯৭ ও ১৯৮ দাগে ব্যাক্তিগত সম্পত্তির পাশে ২৭ খতিয়ানের সি.এস-১৫৫,আর.এস-১৯৫ দাগে ১.৫০একর বনের জমি জবরদখল করা হয়েছে এবং কারখানার মেইন গেটের সামনে বিশাল আকারে বন বিভাগের অত্র দাগের জমি দখল করে রাস্তা ও আম বাগান নির্মাণসহ সম্প্রীতি সময়ে বনের জমিতে ইটের খোয়া ও বালি দিয়ে ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও বনের জমিতে রাস্তা নির্মাণের সময় পিলারের খুটি স্হাপন করে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলেও পুনরায় পিলারের খুঁটি সরিয়ে জবরদখলে চলে গেছে জমিগুলো।এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন ব্যক্তি জানান সাবেক বিট কর্মকর্তা ও বর্তমান বিট কর্মকর্তা সাথে আঁতাত করে অত্র কারখানায় বন বিভাগের বেশ সংখ্যক জমি দখল করে তারা সীমানা প্রাচীর ও সামনে দখলকৃত জমিতে রাস্তা ও আম বাগান করেছেন।
বনের জমি জবরদখলের বিষয়ে খান ব্রাদার্স নীটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এর ডাইরেক্টর মাসুদ মিয়া বলেন স্থানীয় বিট অফিসের সাথে কথা বলেই বনে জমি দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন টাকা পয়সা না দিয়ে কি বনের জমি দখল করা যায় আপনি বুঝেন না টাকা ছাড়া বনের জমিতে একটা খুঁটিও গাড়া যায় না।
এবিষয়ে খান ব্রাদার্স নীটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এমডি হযরত আলী জবর দখলের স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেন বন বিভাগের সাথে সমঝোতা করেই ফ্যাক্টরীর পণ্য পরিবহনের জন্য বনের জমি দিয়ে রাস্তা নির্মাণ ও আম,ফুলের বাগান করেছি,ওই জমিতে আমি এগুলো না করলে অন্য কেউ দখল করে ফেলতো।
বনের জমি রক্ষায় ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি দিয়ে কাশিমপুর বিট কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন বলেন খান ব্রাদার্স এর জবরদখলের জমি রক্ষা করতে আমি ব্যর্থ।এই জমির জন্য কি আমার জীবনটা এবং চাকরীটা হারাবো নাকি ওরা খুব খারাপ মানুষ।এদের সাথে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাকে এখান থেকে চার/পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে অন্য জায়গায় বদলী করে দিবে।আপনি আমার রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে পারেন কারণ ঐ জমিতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে তিনিই পিলার স্থাপন করেছিলেন।সমস্ত পিলার উঠিয়ে ফেলেছে খান ব্রাদার্সের লোকজন।এখন আমি কি করতে পারি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।আর খান ব্রাদার্স থেকে রাস্তা নির্মাণের জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম জানান বনের জমি দখলের কারো সুযোগ নেই। বনের জমিতে রোপনকৃত গাছের চারা নষ্ট ও রাস্তায় স্থাপনকৃত পিলার উঠিয়ে থাকলে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।জবরদখলকৃত বনের জমি অতি দ্রুত উদ্ধার করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এবিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান,উক্ত বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৮১১ দিন ১৯ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
৮১১ দিন ১৯ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৯১৪ দিন ৩ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
৯১৪ দিন ১৫ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৯১৪ দিন ১৫ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে