মোঃ ফরমান উল্লাহ, ভ্রাম্যমান সংবাদদাতা
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা। উপজেলা বাসস্যান্ডটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব-ঢাকা মহাসড়কের উপর অবস্থিত। বন্দর নগরী ভৈরব বাসস্যান্ডের মতই ব্যস্ত কটিয়াদী বাসস্যান্ডটি। কটিয়াদী বাসস্যান্ড থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় গমন করা যায় অতি সহজেই। সে সুবাদে এ বাসস্ট্যান্ডে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি, অটোরিক্সা মোটর সাইকেল ইত্যাদি যানবাহন সব সময় চলাচল করে।
এগুরুত্বপূর্ণ বাসস্যান্ডটিতে হিজরাদের উৎপাত একটু বেশী। কোন মাইক্রোবাস কিংবা প্রাইভেট কার কোন প্রয়োজনে বাসস্যান্ডে এসে দাঁড়ালেই ১০/১২ জন হিজরার একটি দল মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার কে ঘিরে ধরে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে গাড়ীটি আটকে রাখে। কোন কারণে গাড়ীতে আরোহি যাত্রীগন হিজরাদের চাহিত চাঁদা দিতে রাজি না হলে হিজরারা অশালীন অঙ্গ-ভঙ্গি করতে থাকে যা কিনা কোন সভ্য সমাজের রীতি-নীতির পরিপন্থি। এতে গাড়ী লোকজন নিজের আত্ম-সম্মান রক্ষা করতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই টাকা দিয়ে হিজরাদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করে।
গতকাল শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যার একটু আগে ঔষধ আনতে বাজারে যাচ্চিলাম। বাসস্যান্ড যেতেই চোখে পড়লো হিজরাদের সেই চিরাচরিত অভ্যাস হাতে তালি, কুরুচিপূর্ণ ভাষা, অশালীন অঙ্গ-ভঙ্গি। সামনে এগুতেই দেখি একটি মাইক্রোবাসকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে ১০/১২ জন হিজরার একটি দল। তারা মাইক্রোবাসের লোকজনের কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে বসে। হিজরাদের সাথে সমঝোতা না হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় মাইক্রোবাস আরোহিদের। অবশেষে একজন স্থানীয় লোকের মাধ্যমে ৫ শত টাকার বিনিময়ে হিজরাদের নিকট থেকে মুক্ত পায় মাইক্রোবাসটি।
শুধু মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার নয়, হিজরাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পায় নি বিভিন্ন বাসের যাত্রিরাও। কোন একটি বাস বাসস্যান্ডে দাঁড়ালেই ১/২ জন হিজরা বাসে উঠি এবং যাত্রীদের নিকট থেকে এক প্রকার জোর জবরদস্তি করে ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা আদায় করে নিয়ে যাচ্ছে। কোন যাত্রী চাঁদা দিত রাজি না হলে বাস ভর্তি যাত্রীদের সামনে হিজরা তার নিজের পরনের জামা কাপড় খুলে ফেলার হুমকি দেয় এবং অকথ্য,অশালীন, কুরুচিপূর্ণ আচরন করতে থাকে, এতে করে বাসে থাকা যাত্রীরা অনেকটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিনই চলে হিজরাদের এই অত্যচার। এ থেকে বাঁচার কোন পথ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, এদের মধ্যে বেশ কয়েক জন আছে নকল হিজরা। তারা হিজরার অভিনয় করে অনেক টাকার মালিক হয়েছে। তাদের অনেকের ঘরে স্ত্রী সন্তান ও আছে। হিজরা অভিনয় করে মানুষের নিকট থেকে টাকা আদায় করা তাদের পেশা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিজরাদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর ফলে কোন কোন হিজরা জনপ্রতিনিধি ও হয়েছেন। সরকার কর্তৃক যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত হিজরাদের পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করলে জনসাধারন হিজরাদের অপ্রত্যাশিত নির্যাতনের হাত থেকে রেহায় পাবে বলে সাধারন মানুষ মনে করেন।
৬৬৮ দিন ২৩ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে