বাংলার খাবার সংস্কৃতি চিরকালই বৈচিত্র্যময়। ভাত-মাছের ঐতিহ্যগত স্বাদ থেকে শুরু করে চটপটি-ফুচকা কিংবা ফাস্ট ফুডের আধুনিক ঢেউ, সবই জায়গা করে নিয়েছে আমাদের খাদ্যতালিকায়। তবে সম্প্রতি এক নতুন খাদ্য সংমিশ্রণ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড় "মুড়ি মাখায় জিলাপি"।
একদল বলছেন, এটি নতুন স্বাদের এক দুর্দান্ত সংযোজন, যেখানে মিষ্টি ও ঝালের অনন্য সমন্বয় পাওয়া যায়। আরেক দল একে দেখছেন রুচির বিপর্যয় হিসেবে, যারা মনে করেন, মুড়ির লবণাক্ততা আর জিলাপির তীব্র মিষ্টি স্বাদ একসঙ্গে যায় না।
যাঁরা এটি খেয়েছেন, তাঁদের মতামত বিভিন্ন রকম। রাজশাহীর সাহেববাজারে ইফতার কিনতে আসা আরিফুল ইসলাম মনে করেন, জিলাপির মিষ্টতা এবং মুড়ির হালকা নোনতা স্বাদ একসঙ্গে খেলে চমৎকার কনট্রাস্ট তৈরি হয়, যা খাবারকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। জিলাপির নরম ও রসালো ভাবের সঙ্গে মুড়ির মচমচে স্বাদ আলাদা এক অনুভূতি এনে দেয়। সামান্য কাঁচা মরিচ যোগ করলে স্বাদ আরও জমে ওঠে।
ইসরাত নামে আরেকজন বলেন, চটপটির সঙ্গে মিষ্টি চাটনি যেমন জনপ্রিয়, তেমনি মুড়ির সঙ্গে জিলাপিও খাওয়া যেতে পারে। তাহলে আমি কেন মুড়িতে জিলাপি মেশাতে পারব না? এটাকে বলে স্বাদের নতুনত্ব। যারা মুড়ি মাখায় জিলাপি অপছন্দ করে তারা প্রকৃত স্বাদ কী সেটাই জানে না
এতক্ষণ তো জিলাপি প্রেমীদের কথা বললাম। এবার ভিন্নমতের কথাও শুনি। যদিও অনেকেই এটিকে ব্যতিক্রমী স্বাদ হিসেবে গ্রহণ করছেন, তবে কিছু মানুষ এর বিরুদ্ধে সাফ কথা বলছেন, উঠেছে স্বাস্থ্যগত আপত্তিও
এস আলি দুর্জয় বলেন, ছোলা ও মুড়ি আলাদা আলাদা বা একসঙ্গে খেলে বেশ উপকার; কিন্তু ছোলা–মুড়ির সঙ্গে জিলাপি ও বিভিন্ন রকমের তেলে ভাজা চপ মেশানো খুব একটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। মুখরোচক হলেও ঝাল খাবারের সঙ্গে মিষ্টি জিলাপি খেলে অ্যাসিডিটিসহ নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ফারিশতা ইকবাল আনহা বলেন, মিষ্টির সঙ্গে ঝাল-নোনতা মুড়ির স্বাদ বিরোধিতা করে, জিলাপির চিনি ও মুড়ির স্বাদ একসঙ্গে খাপ খায় না, বরং সংমিশ্রণ মুখের স্বাদ নষ্ট করে।
এ প্রসঙ্গে জিলাপি ব্যবসায়ী আজিজা জানান, গ্রামে অনেকে ছোটবেলায় জিলাপি ভেঙে মুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে খেতেন। এখন শহরেও এটি জনপ্রিয় হচ্ছে। তাঁর মতে, নতুন নতুন খাবারের আইডিয়া না আসলে স্বাদের বৈচিত্র্য বাড়বে কীভাবে?
মুড়ি মাখায় জিলাপি বিতর্কের একক কোনো সমাধান নেই। খাবারের ব্যাপারে রুচি একেকজনের একেক রকম হয়। কেউ যদি নতুন স্বাদ উপভোগ করতে চান, তবে একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আর যদি মনে হয়, এটি আপনার জন্য নয়, তাহলে পাশ কাটিয়ে যান। তবে একবার না খেয়ে একে বাতিল করে দেওয়া কী ঠিক হবে? সেটাই আসল প্রশ্ন! তাহলে আপনি কোন দলে পক্ষে, নাকি বিপক্ষে?
১১ দিন ২ মিনিট আগে
১১ দিন ২৩ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
১৩ দিন ১৩ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
১৪ দিন ১৪ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
১৫ দিন ২৩ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
২০ দিন ৩ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
২০ দিন ৯ ঘন্টা ৪৮ মিনিট আগে
২০ দিন ১৩ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে