মোঃ নাজমুল ইসলাম ভালুকা,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।।৩৮ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি হয়ে গেল ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রায় ১৩.৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত পিকে হালদারের কুমিরের খামার । বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘উদ্দীপন’ খামারটি কিনে নিয়েছে। বিক্রির টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন পিকে হালদার। হাইকোর্ট অনুমোদন দিলে এই খামারটি বুঝে নিবেন বেসরকারি এই সংস্থা।
জানা যায়, প্রথম বারের মতো বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড নামে এই কুমিরের খামার প্রতিষ্ঠা করেন উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদ। এই কুমির খামারের প্রতিষ্ঠার পর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিদেশে কুমিরের চামড়া রফতানি করা।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালে মুশতাক আহমেদ খামারটি বিক্রি করে দেন পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের কাছে।
খামার সম্প্রসারণ করতে ৫৭ কোটি টাকা ‘ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড’ এর থেকে ঋণ নেন পিকে হালদার। প্রায় ৪ কোটি টাকার জমি বন্ধক রেখে ফার্মের জন্য এই ঋণ উত্তোলন করেন তিনি।
খামারের সূত্র মতে, বতর্মান খামারটিতে প্রায় ২,৫০০ কুমির রয়েছে। দায়িত্বরত ব্যক্তিদের অনুপস্থিতির কারণে বকেয়া ঋণ পুনরুদ্ধার করতে পারছিলো না খামারটি । তাছাড়া অব্যবস্থাপনা, খাদ্য ঘাটতি এবং ফার্মের আর্থিক সংকটের কারণে সময়ের ব্যবধানে খামারে কমতে থাকে কুমিরের সংখ্যা। পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদস্যের একটি পরিচালনা টিম গঠন করেছে।
আন্তর্জাতিক ভাবে কুমির বিশেষজ্ঞ এনাম হক বর্তমানে ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, খামরটির সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৩৮কোটি টাকা।খামারটি কিনতে আগ্রহী উদ্দীপন নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। হাইকোর্টের নির্দেশে এ বিষয়ে নেয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
খামারের ব্যাপারে ব্যবস্থাপক ডা. আবু সাইম মোহাম্মদ আরিফ জানান , ‘২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০৭টি কুমিরের চামড়া জাপানে রফতানি করা হয়েছে। প্রতিটি কুমিরের চামড়ার আন্তর্জাতিক বিক্রয় মূল্য ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার।’
উল্লেখ্য, ব্যাগ, বেল্ট, জুতা তৈরিতে ব্যবহার হয় কুমিরের চামড়া। হাড় দিয়ে তৈরি হয় সুগন্ধি এবং কুমিরের দাঁত দিয়ে তৈরি হয় গয়না। এই প্রাণীর প্রতি কেজি প্রতি মাংস ৪০ থেকে ৫০ ডলারে বিদেশে রপ্তানি ও বিক্রি হয়।#